Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
আমার কথা: দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়

একটা সময়ে সাত-আট ঘণ্টা টানা প্র্যাকটিস করতাম

রামের বনবাস কাটিয়ে চোদ্দো বছর পর সে বার তিরন্দাজিতে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। সেই দোলার কথা শুনলেন সুচরিতা সেন চৌধুরীরামের বনবাস কাটিয়ে চোদ্দ বছর পর সে বার তিরন্দাজিতে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। সেই দোলার কথা শুনলেন সুচরিতা সেন চৌধুরী

দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:১২
Share: Save:

আট বছরের মেয়েটাকে তিরন্দাজির ক্লাসে ভর্তি করে দিয়েছিলেন অশোক এবং কল্পনা। খুব একটা উচ্চাশা নিয়ে যে ভর্তি করেছিলেন, তেমনটা নয়। আসলে বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি বুঝতে পেরেছিলেন, মেয়ের তিরন্দাজিতে বিস্তর আগ্রহ। আর সেটাই তাঁদের পৌঁছে দিয়েছিল ওই ‘ক্লাস’ পর্যন্ত। বাকিটা তৈরি করে নিয়েছিল ছোট্ট ওই মেয়েটাই।

পরবর্তীতে সেই দোলার হাত ধরেই ভারতীয় তিরন্দাজি পৌঁছে গিয়েছিল অন্য এক উচ্চতায়। আজও ভারতীয় তিরন্দাজির কথা উঠলেই উঠে আসে তার নাম। বরাহনগরের ওই দম্পতির এক মেয়ে, এক ছেলে। দু’জনেই তিরন্দাজিতে দেশের গর্ব। এক জন দোলা, অন্য জন তাঁর ভাই রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।

বরাহনগরের বাড়ি থেকে ওয়ার্ল্ড আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার রাস্তাটা কিন্তু সহজ ছিল না। দোলাই প্রথম ভারতীয়, যাঁর হাত ধরে সোনা এসেছিল দেশে। তিনিই প্রথম মহিলা তিরন্দাজ, যিনি অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। ২০০৫-এ অর্জুন পুরস্কারও তাঁর সাফল্যের প্রমাণ। কথায় কথায় বলছিলেন, ‘‘যে বছর আমাকে অর্জুন দেওয়া হল, তার আগের ১৪ বছর তিরন্দাজিতে কেউ অর্জুন পাননি। রামের বনবাস কাটিয়ে তিরন্দাজিতে অর্জুন এসেছিল।’’

আরও পড়ুন: সমাজের কঠিন মুখ দেখেও সেখান থেকে জয় ছিনিয়ে নিতে হবে

আসলে বরাহনগর থেকে টাটা আর্চারি অ্যাকাডেমি গিয়েই বদলে গিয়েছিল দোলার জীবন। বলছিলেন, ‘‘ওখানে গিয়েই জাঁকিয়ে বসেছিল দেশের হয়ে খেলার অদম্য ইচ্ছেটা।’’ তার পর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই দৌড় এখনও চলছে।

কী বললেন দোলা:

তবে, প্রতিযোগিতামূলক আসর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন আগেই। তাঁর বর্তমান লক্ষ্য, বাংলার মাটি থেকে আরও দোলা-রাহুলকে তুলে আনা।

আরও পড়ুন: এখনও এ সমাজে মেয়েরা শুধুই ‘মেয়ে’!

অর্জুন পুরস্কার পাওয়ার পর নতুন করে সাফল্যের পথে হাঁটতে শুরু করেন দোলা। ২০০৪-এ এশিয়ান গেমস ও অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা তো ছিলই, ২০০৬-এ সাফ গেমস এবং ’০৭-এ ওয়ার্ল্ড কাপ আর্চারিতে সোনা জেতেন তিনি। ২০১০-এর কমনওয়েলথ গেমসে টিম রিকার্ভ ইভেন্টে সোনা এবং ব্যাক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জও জেতেন দোলা। ২০১০ গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমসে টিম ইভেন্টে আনেন ব্রোঞ্জ।

সব মিলিয়ে সাফল্যের খতিয়ানটা নেহাৎই কম নয় এই কন্যের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE