Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নারী দিবসে পুরস্কার অগ্নিযোদ্ধা তানিয়াকে

তড়িঘড়ি উড়ান ধরতে ছুটলেন তিনি। সন্ধ্যার উড়ান। দিল্লির।

তানিয়া সান্যাল

তানিয়া সান্যাল

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:২২
Share: Save:

তড়িঘড়ি উড়ান ধরতে ছুটলেন তিনি। সন্ধ্যার উড়ান। দিল্লির।

আজ, শুক্রবার বিশ্ব নারী দিবসে সেখানে পুরস্কার দেবে বলে বাঙালি এই তনয়াকে ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লির মহিলা কমিশন। রোগা দোহারা চেহারার সপ্রতিভ মেয়েটি এখন ২৬।

এ দেশের বিমানবন্দর নিয়ে কেউ ইতিহাস লিখলে সিঁথির এই তানিয়া সান্যালের নাম লিখতে হবে। কারণ, বিমানবন্দরের বিশেষ দমকলবাহিনীর প্রথম মহিলা অফিসার তিনি। শুধু কলকাতায় নয়, সারা দেশে। ২০১৮ সালে প্রশিক্ষণ সেরে তিনি জুলাইয়ে যোগ দেন কলকাতা বিমানবন্দরের দমকল বিভাগে। তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে অন্য এক মহিলা যোগ দিয়েছেন জয়পুর বিমানবন্দরের দমকলে।

আরও পড়ুন: সংসারের সঙ্গেই সামলান রেলগেট

বিমানবন্দরের ওই দমকলবাহিনী ‘বিশেষ’ কেন? সেখানে ‘রিঅ্যাকশন টাইম’ মাত্র ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ড, বৃহস্পতিবার নারায়ণপুরে বিমানবন্দরের দমকল বিভাগের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বসে জানালেন তানিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘বিমান ভেঙে পড়লে ওই সময়ের মধ্যে যদি আগুন নেভানো না-যায়, যাত্রী বা বিমানকর্মীদের এক জনকেও জীবিত উদ্ধার করা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের খুব তাড়াতাড়ি রেসপন্স করতে অর্থাৎ কাজে নেমে পড়তে হয়।’’ এখন সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষকের কাজ করছেন তানিয়া।

‘‘এটা শরীরের জোরের বিষয় নয়, টেকনিক বা কৌশলের ব্যাপার। নজল দিয়ে যখন জেট গতিতে জল বেরোয়, তাকে ঠিক নিশানায় ধরে রাখাতে সেই টেকনিকটা শিখতে হয়েছে। ফোমের ক্ষেত্রেও তা-ই,’’ বললেন অগ্নিযোদ্ধা তানিয়া। এমন ঝুঁকির কাজে এলেন কেন? তানিয়া জানান, ছোট থেকেই তাঁর ‘অন্য রকম’ কিছু করার ইচ্ছে ছিল। উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে এমএসসি করেছেন। ‘‘কিন্তু মনে হত, চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে হবে। একঘেয়ে চাকরি আমার জন্য নয়। টিভিতে বিভিন্ন ঘটনায় দমকলকর্মীদের কাজ করতে দেখেছি। বেশ রোমাঞ্চ হত। যেখান থেকে সবাই ছুটে পালাচ্ছে, হোসপাইপ নিয়ে ওঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন সে-দিকেই। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচাচ্ছেন,’’ বললেন তানিয়া।

২০১৭ সালে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞাপনটা তানিয়ার চোখে পড়ে— ‘জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট, ফায়ার সার্ভিস চাই’। বেসরকারি সংস্থা থেকে অবসর নেওয়া কিশোর সান্যাল, ঘরকন্না সামলানো রুমাদেবী মেয়ের ইচ্ছের পথে কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়াননি। তাঁরা চিরকালই চেয়েছেন, মেয়ে নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচুন। ‘‘সেই প্রশ্রয়টা আমার কাছে বড় অনুপ্রেরণা,’ বললেন তানিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

International Women's Day Airport fire Brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE