পোষ্যের সঙ্গে ফার্দিং
কাবুল বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণের জেরে পথপশুদের নিয়ে নিরাপদে দেশে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভবই হয়ে পড়েছিল। তাও ব্রিটেন প্রশাসনের সঙ্গে লাগাতার লড়াই-ঝগড়া করে ২০০ পথপশুকে সঙ্গে নিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় রবিবার সকালে দেশে ফিরেছেন পল ‘পেন’ ফার্দিং। কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আফগানিস্তান থেকে আসা ওই কুকুর, বিড়ালের শরীরে রোগ ধরা পড়লে ব্রিটেনের নিয়ম মেনে মেরে ফেলা হবে তাদের। এই বিষয়টি এ বার জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে নেটমাধ্যমে।
ফার্দিং এক সময় ব্রিটেনের রয়্যাল মেরিন কোরের সদস্য ছিলেন। সেনা-জীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছেন আফগানিস্তানেই। পরবর্তী কালে কাবুলে ফিরে এসে ‘নওজাদ’ নামে একটি পশুশালা খুলেছিলেন তিনি। চলতি মাসের মাঝামাঝি তালিবানের হাতে গনি সরকার উৎখাত হওয়ার পরই পথপশুদের নিয়ে দেশে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন ফার্দিং। কিন্তু নিজেও জানতেন, কাজটা সহজ নয়। তালিবানি শাসন থেকে বাঁচতে তখন আফগানদের মধ্যে দেশ ছাড়ার হিড়িক। ওই সময়ে এতগুলি পোষ্য নিয়ে দেশে ফেরা সম্ভব নয়। কিন্তু তবুও হাল না ছেড়ে ব্রিটেনের বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে নেটমাধ্যমে নিজের দেশের প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেন ফার্দিং। তখনও প্রচুর নাগরিক কাবুল বিমানবন্দরে আটকে থাকায় ফার্দিংয়ের ফিরে আসার ব্যবস্থা হলেও ওই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে তাঁর পোষ্যদের দায়িত্ব নিতে রাজি ছিল না ব্রিটিশ সরকার। তবে ফার্দিং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, পোষ্যদের ফেলে কাবুল ছাড়বেন না তিনি। চাপের মুখে পড়েই তাঁর দাবি মানতে কার্যত বাধ্য হয়েছিল ব্রিটিশ প্রশাসন। ব্যবস্থাও হয়ে গিয়েছিল। পোষ্যদের নিয়ে কাবুল বিমানবন্দরে চলেও এসেছিলেন ফার্দিং।
আর তার পরই জোড়া বিস্ফোরণ বিমানবন্দরে। শতাধিক মানুষের মৃত্যু। সুরক্ষিত অবস্থায় পথপশুদের নিয়ে ফার্দিংয়ের দেশে ফেরার পরিকল্পনা তখন বিশ বাঁও জলে। তিনি লাগাতার ফোন করতে থাকেন ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা সচিব বেন ওয়ালেসকে। ওয়ালেসের বিশেষ উপদেষ্টা পিটার কোয়েন্টিনকে নাকি গালিগালাজও করেছেন ফার্দিং। এ কথা নিজেই জানিয়েছেন কোয়েন্টিন। শেষমেশ বাধ্য হয়েই ফার্দিংয়ের জন্য কার্গো বিমান পাঠাতে হয়েছিল ওয়ালেসকে। পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরে এলেও ফার্দিং তাদের নিজের কাছে রাখতে পারবেন কি না, এখন এই প্রশ্ন নিয়েই তোলপাড় নেটমাধ্যম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy