বিধ্বস্ত: বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কাবুলে বৃহস্পতিবার। রয়টার্স
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে বারোটা। পরপর তিন বার বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। ওই আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪১ জন। আহত আরও ৮০ জন। তাঁদের ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলার দায় নিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আইএস।
আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র নসরত রাহিমি জানিয়েছেন, কাবুলের কেন্দ্রস্থল, ৬ নম্বর পুলিশ ডিস্ট্রিক্টে, তাবায়ান সংস্কৃতি কেন্দ্রে বোমাগুলি ফাটে। সেখানে আফগান মাটিতে রুশ আগ্রাসনের ৩৮তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছিল। গোটা হামলার লক্ষ্য ছিল কাবুলের সংবাদ মাধ্যম ‘আফগান ভয়েস এজেন্সি’-র কয়েকটি দফতর। তালিবান ওই হামলায় তাদের হাত থাকার কথা অস্বীকার করার কিছু ক্ষণ পরেই, আইএস এক বিবৃতিতে ওই দায় নেয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা, শিশু এবং এক জন সাংবাদিক। ওই সাংবাদিক আফগান ভয়েস এজেন্সির কর্মী। রাহিমি জানিয়েছেন, কাবুলের দাশতে দারচি সংস্কৃতি কেন্দ্রের একটি সভাঘরে আলোচনাচক্র চলার সময়ে বোমাটি ফাটে। ভিড়ে ঠাসা হলটিতে তখন হাজির ছিলেন অনেকে পড়ুয়াও। তাদের সঙ্গেই বসেছিল আত্মঘাতী হামলাকারী। প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক এহসানুল্লাহ আমিরি জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের জেরে রক্তে ভেসে যায় ঘরটি। আতঙ্কিত মানুষজনের ছোটাছুটি, আহতদের গোঙানির মধ্যেই পর পর দু’বার বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। এই আতঙ্কের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ। আহত ও মৃতদের নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। পরিজনদের বিলাপের শব্দে ভারী হয়ে ওঠে চার দিক।
বার বার জঙ্গি নিশানায় রক্তাক্ত হচ্ছে কাবুলের সাধারণ জীবন। সপ্তাহের শুরুতেই, আইএস-এর হানায় আফগান গোয়েন্দা দফতরের ঢিল ছোড়া দূরত্বে, প্রাণ হারান ছয় জন। তার পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরের এই হামলা। এ বার জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকরা। সন্ত্রাসবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে সাংবাদিকদের পক্ষে কাজ করা কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, আজ তা ফের সামনে এল। গত নভেম্বরেও আইএসের হানায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক টিভি-সাংবাদিক। এ বার যে হামলা হতে পারে, তার আগাম খবরও ছিল। তা সত্ত্বেও বিস্ফোরণ আটকানো যায়নি।
বিস্ফোরণে মুখের এক দিক পুড়ে গিয়েছে মহম্মদ হাসান রেজায়ি নামে এক ছাত্রের। এমন আঘাতে অনেকেই কাতরাচ্ছেন হাসপাতালে। হাসপাতাল প্রধান সাবির নসিব জানিয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমটি হামলার পরে তাদের দফতরের ছবি ফেসবুকে দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে পাথরের চাঁই পড়ে। তাতে রক্তের ছোপ। ওই বাড়িটিতেই শিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদ রয়েছে বলে খবর। সাধারণ মানুষকে ঘটনাস্থলের কাছে আসতে নিষেধ করেছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy