ঋণ নেওয়ার সময় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করে পদক্ষেপ করে বাংলাদেশ, জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।
শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক সঙ্কট বাংলাদেশে হবে না বলেই জানিয়ে দিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে তাঁর ভরসা, বাংলাদেশের মেপে পা ফেলার নীতি। হাসিনা বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার তুলনায় আমাদের অর্থনীতি অনেক শক্তসমর্থ। কারণ বাংলাদেশ আগাম পরিকল্পনা এবং হিসেব করে কাজ করে।’’ তবে একই সঙ্গে হাসিনা এ কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য তাঁদের দেশ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
সোমবারই ভারত সফরে আসার কথা হাসিনার। তার আগে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনা জানান, তিনি অনেককেই বলতে শুনছেন, বাংলাদেশেরও শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হবে। তবে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েই হাসিনা বলেছেন, ‘‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সেই অঘটন ঘটনার কোনও সুযোগ নেই। কারণ হল বাংলাদেশ সব সময় পরিকল্পনা করে কাজ করে। আমরা ঋণ নিই মেপেজুপে, অনেক হিসেব কষে।’’
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সমস্যা বিশ্লেষণ করে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলি অনেক ক্ষেত্রেই ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে। উন্নয়নের কথা ভেবে ঋণ প্রদানকারী দেশগুলির থেকে মোটা সুদে ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু শেষে গিয়ে আর সেই ঋণ শোধ করতে পারে না। যদিও বাংলাদেশের ঋণনীতিতে পূর্ণ আস্থা রেখেছেন হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দেশ ঋণ নেওয়ার সময় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করে পদক্ষেপ করে। শুধু অর্থের অপচয় করার জন্য ঋণ গ্রহণ করে না। বরং, আগে দেখে নেয় যার জন্য ঋণ নেওয়া হচ্ছে সেই উন্নয়ন সত্যিই কতটা উপযোগী হবে দেশের উন্নতি এবং দেশের মানুষের উন্নতির জন্য। তার পরই ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসিনা বলেন, ‘‘আমরা সব সময় আমাদের প্রাপ্য বুঝে নিই। দেখ নিই এই ঋণের বদলে আমাদের হাতে কী আসছে? কী ভাবে এর সাহায্যে আমাদের অর্থনীতি আরও উন্নত হবে। মানুষের উপকার হবে? না হলে অকারণ অর্থের অপচয় করি না।’’
হাসিনা বেশ জোর দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ভুল বাংলাদেশ করেনি এবং করবেও না। তার কারণ বাংলাদেশ সামর্থ্য বুঝে ঋণ নেয় আর সেই ঋণের অর্থ সময়ে মিটিয়েও দেয়। যে কারণে বাংলাদেশের ঋণের হার শ্রীলঙ্কার তুলনায় বেশ কম। তবে একই সঙ্গে হাসিনা জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যে একা শ্রীলঙ্কাকেই যেতে হচ্ছে, তা নয়। গোটা পৃথিবীই এখন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলেছে। বাংলাদেশও অন্যান্য দেশের মতো সেই কঠিন সময় সামলাচ্ছে। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে, কেন না ওই দেশগুলি থেকে বাংলাদেশ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy