ঢাকা মহানগর পুলিশের কঠোর সমালোচনা করল বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাফাই বিভাগের ইনস্পেক্টর বিকাশচন্দ্র দাসকে বেধড়ক পুলিশ মারধরের ঘটনায় কমিশনের এই মন্তব্য। কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের মন্তব্য, সরকার অবিলম্বে পুলিশের এই বেপরোয়া আচরণ বন্ধ না করলে দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন।
বিকাশচন্দ্র দাসকে শুক্রবার ভোরে ঢাকার কয়েকজন পুলিশকর্মী অকারণে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। সরকারি কর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েও বিকাশবাবু রেহাই পাননি। মারধরের সময় সেখানে উপস্থিত এক পুলিশকর্মী বিকাশবাবুকে বলেন, ‘‘মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ।’’ পুলিশকর্মীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা শোনা গিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের মুখে। মিজানুর রহমান পুলিশের এই মন্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং ‘ভয়ানক’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশে যে অবস্থা চলছে, তা রুখতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন। এর পরিণতি ভাল হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে বিকাশচন্দ্র দাসের সঙ্গে দেখা করেন মিজানুর রহমান। তার পর তিনি বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলারক্ষীদের মধ্যে এক ধরনের দায়মুক্তির ভাব এসে গিয়েছে। তারা ভাবছে, তাদের কোনও কিছু হবে না, কোনও কিছু স্পর্শ করতে পারবে না। ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন। আমরাও তাঁর কথায় আস্থা রাখতে চাই, বিশ্বাস রাখতে চাই।’
মিজানুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মন্ত্রক প্রমাণ করুক আইন সবার জন্য প্রযোজ্য। পুলিশের কেউ অপরাধ করলেও রাষ্ট্র তা সহ্য করবে না তা আমরা দেখতে চাই।
শুক্রবার ভোরে ঢাকা মহানগর পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন বিকাশচন্দ্র দাস। সাদা পোশাকের পুলিশকে দেখে ছিনতাইকারী বলে ভুল করে পালাতে চেষ্টা করেছিলেন বিকাশবাবু। তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশ বেধড়ক মারধর করে। বিকাশচন্দ্র দাস নিজের পরিচয়ও দিয়েছিলেন। সিটি কর্পোরেশনের সাফাইকর্মীরা তাঁদের বিভাগীয় ইনস্পেক্টরের হেনস্থা দেখে পুলিশকে জানান বিকাশবাবুর পরিচয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বেধড়ক মারধর করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়েছিল বিকাশবাবুকে। সাফাইকর্মীদের হাতে ঘেরাও হয়ে পুলিশ বিকাশচন্দ্র দাসকে ছেড়ে দেয়। এর কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তা গোলাম রাব্বিও মাঝরাতে পুলিশি হেনস্থার শিকার হন। সারা রাত নির্যাতনের পর তাঁকে ছাড়া হয় বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy