বিস্ফোরণের পর জ্বলছে সমাধিক্ষেত্র
আশঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। সেটাই সত্যি হল!
কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপেই শেষকৃত্য চলছিল এক নেতার ছেলের। হাজির ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরা। ভারাক্রান্ত পরিবেশ। কিন্তু শেষরক্ষা হল না! আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আশপাশ। পরপর তিন বার। বুধবারের ট্রাক হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ ফের রক্তাক্ত হল কাবুল। আর এই ঘটনায় প্রমাণ হল, হামলায় ছাড় নেই সমাধিক্ষেত্রেরও।
ধারাবাহিক বিস্ফোরণে আজ প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। আহত বহু। যদিও নিহতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। বেশ কয়েকটি আফগান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা প্রায় ১৮। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।
চলতি সপ্তাহেই কাবুলে শুরু হয়েছে নতুন করে হামলার ঘটনা। বুধবারই কাবুলের অন্যতম কড়া নিরাপত্তায় মোড়া এলাকা জানবাক স্কোয়ারে ট্রাক-বোমা বিস্ফোরণ হয়। তাতে নিহত হয়েছিলেন প্রায় ৯০ জন। সেই ঘটনার তিন দিনের মাথায় ফের এই বিস্ফোরণের জেরে প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
জখম: রাস্তায় পড়ে রয়েছেন বিস্ফোরণে আহত এক বৃদ্ধ। কাবুলে শনিবার। ছবি:রয়টার্স
বুধবারের হামলার পরে কালই প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বহু মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ময়দানে নামে আফগান পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে থাকে ক্ষিপ্ত আন্দোলনকারীরা। এর পর পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের হটাতে শূন্যে গুলিও ছোড়ে পুলিশ। সেই সংঘর্ষে নিহত হন অনেকেই।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, সেই নিহতদের তালিকায় ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আলম ইজাদিয়ারের ছেলে সালিমও। আজ সালিমের শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্তারা। ফলে হামলার আশঙ্কা করেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল সেই এলাকা। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এই বিস্ফোরণ হল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
সংবাদমাধ্যমের যে ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘটনাস্থল। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নিহতদের দেহাংশ। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিস্ফোরণ এতটাই জোরালো ছিল যে নিহতদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে।
গত কালের বিক্ষোভ-আন্দোলনের পরে দেশ জুড়ে জারি হয়েছে কড়া সতর্কতা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আরও হামলা হতে পারে। বিশেষ করে কোনও জমায়েত বা মিছিলকেই বিস্ফোরণের জন্য বেছে নিচ্ছে জঙ্গিরা। ফলে সাধারণ মানুষকে কোনও জমায়েতে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy