Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Iraq

মসুলে ঢুকছে ইরাকি বাহিনী, শেষ দুর্গ রক্ষায় তীব্র প্রতিরোধে আইএস

ইরাকে পতনের মুখে আইএস-এর শেষ বড় ঘাঁটি। মসুলের শহরতলিতে ঢুকে পড়েছে মার্কিন সাহায্যপুষ্ট ইরাকি বাহিনী। ঘিরে ফেলা হয়েছে টাইগ্রিসের তীরবর্তী বিশাল শহরটিকে। আইএস-এর তরফ থেকে তীব্র প্রতিরোধের খবর আসছে।

মসুলের দক্ষিণ প্রান্তে আইএস ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে চলেছে ইরাকি ট্যাঙ্ক। ছবি: এএফপি।

মসুলের দক্ষিণ প্রান্তে আইএস ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে চলেছে ইরাকি ট্যাঙ্ক। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ১৮:০২
Share: Save:

ইরাকে পতনের মুখে আইএস-এর শেষ বড় ঘাঁটি। মসুলের শহরতলিতে ঢুকে পড়েছে মার্কিন সাহায্যপুষ্ট ইরাকি বাহিনী। ঘিরে ফেলা হয়েছে টাইগ্রিসের তীরবর্তী বিশাল শহরটিকে। আইএস-এর তরফ থেকে তীব্র প্রতিরোধের খবর আসছে। ফলে মসুলকে ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দর আল-আবাদি বলেছেন, মসুলে এক জন জঙ্গিকেও থাকতে দেওয়া হবে না।

সোমবার ভোরে এক বিধ্বংসী আক্রমণে মার্কিন সাহায্যপ্রাপ্ত ইরাকি বাহিনী কাউন্টার-টেররিজম সার্ভিস আইএস-এর হাত থেকে বাজওয়াইয়া গ্রামের দখল নিয়েছে। মসুলের পূর্ব শহরতলিতে পৌঁনোর আগে সেটিই শেষ গ্রাম। তার পর মঙ্গলবারের মধ্যে মসুল শহরের পূর্ব প্রান্তে কুকজালি শিল্পাঞ্চলও কাউন্টার-টেররিজম সার্ভিস (সিটিএস) বাহিনীর দখলে চলে এসেছে। ফলে কুকজালিতে অবস্থিত মসুলের টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ আবার সরকারের হাতে ফিরে এসেছে।

দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে মসুলে ঢুকছে মার্কিন সাহায্যপ্রাপ্ত সিটিএস বাহিনীর অন্যতম অংশ শিয়া মিলিশিয়াদের ট্যাঙ্ক। ছবি: এএফপি।

শুধু পূর্ব দিক থেকে নয়, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকেও মসুলে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে সিটিএস বাহিনীর অন্য একটি ইউনিট। সেই অংশে জুদায়াত আল-মুফতি নামের একটি এলাকায় সরকারি বাহিনী ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে প্রতি পদক্ষেপেই সিটিএস বাহিনীকে প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর। মসুলে ৩০০০-৫০০০ আইএস যোদ্ধা এই মুহূর্তে রয়েছে বলে সরকারি বাহিনীর কাছে খবর রয়েছে। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আইএস-এর এই বাহিনীর মোকাবিলায় ৫০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী মসুলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদিকেও ঘিরে ফেলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হায়দর আল-আবাদি বলেছেন, এক জন সন্ত্রাসবাদীকেও পালাতে দেওয়া হবে না। হয় তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হলে মরতে হবে।

আইএস-এর বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্যের পর মসুলের পশ্চিম প্রান্তে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন সিটিএস বাহিনীর কম্যান্ডার লেঃ জেনারেল আবদুল ঘনি আল-আসাদি। ছবি: রয়টার্স।

ইরাকে মসুল হল আইএস-এর শেষ বড় ঘাঁটি। ২০১৪ সালের জুন মাসে মসুলের দখল নিয়েছিল আবু বকর আল-বাগদাদির বাহিনী। আইএস-এর দাপটে ইরাকের বিস্তীর্ণ অংশে সে সময় কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইরাকের সরকারি বাহিনী। দেশের বিরাট এলাকা আইএস-এর নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল। তার পর থেকে মার্কিন বাহিনীর সাহায্য নিয়ে যৌথ ভাবে আইএস-বিরোধী অভিযান তীব্র করতে শুরু করে ইরাকের সরকারি বাহিনী। সেই সামরিক জোটে যোগ দেয় কুর্দিশদের নিজস্ব বাহিনী, সুন্নি-আরব উপজাতির বাহিনী এবং শিয়া মিলিশিয়া বাহিনী। আমেরিকার সহায়তায় পুষ্ট এই বিরাট সামরিক জোটের সামনে অনেক দিন ধরেই পিছু হঠছে আইএস। আবু বকর আল-বাগদাদির সাম্রাজ্য এখন ইরাকের উত্তর প্রান্তে সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আইএস-এর দখলে থাকা এক মাত্র বড় ইরাকি শহর এখন মসুল। সেই মসুল কেড়ে নিয়ে ইরাকে আইএস-এর শেষ দুর্ভেদ্য দুর্গটা ধুলিসাৎ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল কিছু দিন আগেই। পরিকল্পনা মাফিক ইরাকি সেনা, কুর্দ বাহিনী, সুন্নি-আরব উপজাতি বাহিনী এবং শিয়া মিলিশিয়া মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার যোদ্ধার বিরাট বাহিনী ঘিরে ফেলেছে মসুল।

আরও পড়ুন: ২৩২ জনকে খুন করল আইএস, শেষ ঘাঁটি রক্ষায় ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা!

টাইগ্রিস তীরবর্তী এই শহরে খুব শীঘ্রই যে তাদের বড়সড় যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে, তা আগেই আঁচ করেছিল আইএস। তাই লক্ষাধিক মানুষকে শহরে আটকে রাখা হয়েছে। শহরের আশপাশের জেলাগুলি থেকে সম্প্রতি বহু মানুষকে জোর করে মসুলে আনা হয়েছে। মার্কিন সাহায্যপুষ্ট বাহিনী শহরে ঢোকার চেষ্টা করলেই শহরে আটকে রাখা সাধারণ মানুষকে মানব-ঢাল হিসেবে সামনে এগিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে আইএস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iraq Mosul Battle for Mosul Iraq Force Enters
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE