Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সহিষ্ণুতা সফরে অতিথি মমতা

হোটেল গ্রান মিলিয়া। কলকাতা থেকে উড়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এই হোটেলে। ভ্যাটিকান শহর আর সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা এই হোটেল থেকে হেঁটে পাঁচ মিনিটের পথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রোম শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৪
Share: Save:

হোটেল গ্রান মিলিয়া। কলকাতা থেকে উড়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এই হোটেলে। ভ্যাটিকান শহর আর সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা এই হোটেল থেকে হেঁটে পাঁচ মিনিটের পথ।

কলকাতা ছেড়ে আসতেই চান না মমতা। যেখানেই যান, নির্ধারিত কর্মসূচি বদলে পারলে আগেই ফিরে আসেন কলকাতায়। তা সে লন্ডনই হোক বা ঢাকা। এমনটাই হয়েছে অতীতে। মিশনারিজ অব চ্যারিটি-র আমন্ত্রণ রক্ষা করে মমতা যে রোমে এসেছেন, তা-ও কিন্তু কলকাতার জন্যই। মা টেরিজা মানে তো কলকাতা-ই! রবিবার তাঁর ক্যাননাইজেশন-এর পরে তিনি হবেন সেন্ট টেরিজা অব ক্যালকাটা। মমতার ভাষায়, বাঙালি টেরিজা।

রোমে থাকলে রোমান হতে হয়। মমতা রয়েছেন মমতাতেই। এই দেশে এসেও ভারত সরকারের রাষ্ট্রদূত আর বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নৈশভোজে আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়ার চেয়েও তাঁর কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সন্তায়নের অনুষ্ঠানের পরে মিশনারিজ অব চ্যারিটি আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেওয়া। তবে হোটেল কূটনীতি নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে একটা অস্বস্তির বাতাবরণ তৈরি হলেও মমতা-সুষমার ব্যক্তিগত সম্পর্কে তার আঁচ পড়েনি। আজ দুবাই বিমানবন্দরের লাউঞ্জে সুষমার সঙ্গে দেখা করেন মমতা। সেখানে তিনি জানান, রোমে হোটেলে থাকা নিয়ে কী হয়েছে। পরে একই বিমানে গল্প করতে করতে রোমে পৌঁছন তাঁরা। গোটা প্লেনে দাপিয়ে বেড়ালেন মমতা। সুষমা দেখলেন ‘দাবাঙ্গ।’

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগের আবহে সহিষ্ণুতার বার্তা দেওয়াও এই সফরের একটি লক্ষ্য। বিজেপি শাসনে ভারতে খ্রিস্টানদের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ বার বার উঠেছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে বিদেশ সচিব জন কেরি, মার্কিন প্রশাসকরা ভারত সফরে এসে এ বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। মোদীকেও প্রকাশ্যে খ্রিস্টানদের অভয়বার্তা দিতে হয়েছে। গোটা দেশের আর্চবিশপ এবং অন্য খ্রিস্টধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠকও করেন।

এই প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর বাড়তি তাৎপর্য পেয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের এই ভাবমূর্তি থেকে নিজেকে শুধু বিচ্ছিন্নই করছেন না, মোদী সরকারের গায়ে অসহিষ্ণুতার যে তকমা লেগেছে, তার বিরুদ্ধেও বার্তা দিচ্ছেন মমতা। দিল্লিতে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় যখন গির্জা আক্রান্ত হয়, তখন খ্রিস্টান মিশনারিদের নিরাপত্তার অভাব দেখা দিলে সক্রিয় হন মমতা। তিনি মিশনারিদের সঙ্গে কেজরীবালের যোগাযোগও করিয়ে দিয়েছিলেন।

তাই এই সফরে‌ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে না গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাদার টেরিজার প্রতিষ্ঠানের অতিথি হিসেবেই থাকতে চাইছেন। যে দিন মিশনারিজ অব চ্যারিটি তাঁকে এই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান, মমতা এক কথায় রাজি হয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE