Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
বন্যার কবলে তাইল্যান্ড

বন্যা বিধ্বস্ত তাইল্যান্ডের রাস্তায় ঘুরছে ক্ষুধার্ত কুমির!

প্রবল বৃষ্টি আর বন্যার চোখরাঙানি তো ছিলই। খাঁড়ার ঘা হয়ে বেরিয়ে এল ওরাও। বন্যার জল ঢুকে পড়ায় তাইল্যান্ডের দক্ষিণ প্রদেশের জাতীয় অভয়ারণ্য থেকে অন্তত ১০টি কুমির বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়।

জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে রাস্তাঘাট। — এএফপি

জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে রাস্তাঘাট। — এএফপি

সংবাদ সংস্থা
ব্যাঙ্কক শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

প্রবল বৃষ্টি আর বন্যার চোখরাঙানি তো ছিলই। খাঁড়ার ঘা হয়ে বেরিয়ে এল ওরাও। বন্যার জল ঢুকে পড়ায় তাইল্যান্ডের দক্ষিণ প্রদেশের জাতীয় অভয়ারণ্য থেকে অন্তত ১০টি কুমির বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়।

এক সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। যার জেরে বিপর্যস্ত তাইল্যান্ডের দক্ষিণ অংশ। বন্যায় ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন ১৮ জন। হাজার হাজার গ্রাম বিধ্বস্ত।

ব্যাঙ্ককের এক দৈনিক জানিয়েছে, বন্যায় ভেসে গিয়েছে থা লাড চিড়িয়াখানা। এটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণের মুয়াং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। কারণ কুমিররা আর স্বস্থানে নেই! চিড়িয়াখানা সংলগ্ন সমডেট ফ্রা শ্রীনাগারিন্দ্র ৮৪ পাবলিক পার্কের বাসিন্দাদের জন্য সেটা মোটেই সুখবর নয়। উন্মুক্ত ওই চিড়িয়াখানায় বাস ১০টি কুমিরের। এদের কয়েকটি পাঁচ মিটারের কাছাকাছি লম্বা। বন্যার জেরে খাবারদাবার না পেয়ে তারা দল বেঁধে বেরিয়ে পড়েছে বাইরে। সেই ক্ষুধার্ত কুমিররা যদি চড়াও হয় মানুষের উপরে— তাই আগেভাগে সাবধান হতে বলেছে প্রশাসন। বন্যায় অবস্থা এতটাই গুরুতর যে চি়ড়িয়াখানা থেকে প্রাণীদের সরানোর সুযোগটাও পাননি কর্তৃপক্ষ। এখন নৌকায় চড়ে বাইরে কুমির খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁরা।

মুয়াং জেলা ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অংশে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা। দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের দাবি, দক্ষিণের ১০টি প্রদেশের ১০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জন নিখোঁজ। বৃষ্টির জেরে রাস্তাগুলো এখন নদীর চেহারা নিয়েছে। কোথাও কোথাও জলের উচ্চতা ছাদের সমান। এলাকার ১৫০০ স্কুলের বেহাল দশা। কৃষিজমিও জলের তলায়। তাইল্যান্ডের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আরও দু’দিন চলবে এই ভয়ঙ্কর বৃষ্টি। হড়পা বানের আশঙ্কাও রয়েছে।

আপাতত বন্যা দুর্গতদের দ্রুত সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। অস্থায়ী শিবিরে তাঁদের রাখা হচ্ছে। নাখোন সি থাম্মারাট প্রদেশে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা। সেখানে জলের তোড়ে রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছে। দু’টি সেনা হেলিকপ্টারের সাহায্যে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বাফা সুতিফানিয়া নামে ৬০ বছরের এক বাসিন্দা জানালেন, গত তিন রাত তিনি অস্থায়ী শিবিরেই রয়েছেন। মাথার সমান জল উঠে যাওয়ায় ঘর ছেড়ে বেরোতে বাধ্য হয়েছেন। বললেন, ‘‘এই সময়ে এমন বন্যা! জলস্তরও এত উঁচুতে উঠতে দেখিনি। সাঁতার জানি না।’’

আবহবিদরাও বলছেন, এই সময়ে তাইল্যান্ডে এমন বৃষ্টি অস্বাভাবিক। নভেম্বর থেকে আবহাওয়া ভালই থাকে। তাই এই সময় পর্যটকদের ভি়ড় জমে। বন্যায় তাই সমস্যায় পড়েছেন তাঁরাও। জনপ্রিয় গন্তব্য সামুই এবং ফানগান দ্বীপে অনেকেই আটকে পড়েছেন। কারণ বেশ কিছু বিমান বাতিল করতে হয়েছে। বাস-ট্রেন চলাচল বন্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Flood Bangkok
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE