প্রতিবাদে ছাত্ররা। রবিবার কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছবি: রয়টার্স
প্রতিবাদ আর স্লোগানে ফের উত্তাল মিশর। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত দু’জনের মৃত্যু ঘিরে ফের উত্তপ্ত তাহরির স্কোয়ার। ‘গণহত্যার নায়ক’, দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের শাস্তির দাবিতে এখনও অনড় দেশের একটা বড় অংশ।
মিশরের এক আদালতের রায়ে গণহত্যা ও দুর্নীতি মামলায় ‘বেকসুর’ সাব্যস্ত হয়েছেন দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারক। তারই প্রতিবাদে গত কাল সন্ধে থেকেই অন্তত হাজার তিনেক প্রতিবাদী এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাহরির স্কোয়ারে। জাতীয় পতাকা হাতে আদালতের রায়ের বিরোধিতায় স্লোগান আসতে থাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। বিক্ষোভ দমনে তৎপর হয় প্রশাসন। লাঠিচার্জ, জলকামানের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন দুই প্রতিবাদী। আহত অন্তত ১০। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রেও আজ এমনটাই জানানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ২০১১ সালের তুলনায় তাহরির স্কোয়ারের এ বারের জমায়েত আকারে ছোট হলেও, অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সে বারের আন্দোলন ছিল মূলত মুবারক সরকারের দুর্নীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বার প্রতিবাদের লক্ষ্য খোদ মুবারক। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও। আজ প্রায় সারাদিন চলে বিক্ষোভ।
টানা প্রায় তিরিশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানের জেরে ইস্তফা দেন মুবারক। অভিযোগ, তার আগে আন্দোলন রুখতে গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। নিহত হয়েছিলেন প্রায় আটশো সাধারণ নাগরিক। ২০১২ সালে এই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় মুবারককে। গত কালের রায়ের পর অবশ্য বেকসুর তিনি। ইজরায়েলে গ্যাস রফতানি-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক তছরুপ ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল মুবারক এবং তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে। আদালতের রায়ে বেকসুর সাব্যস্ত হয়েছেন তাঁরাও।
বছর ছিয়াশির মুবারক তাই স্বাভাবিক কারণেই স্বস্তিতে। গণহত্যার দায় নিতে প্রথম থেকেই নারাজ ছিলেন। রায় ঘোষণার পর দেশের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “তিরিশ বছরের শাসনকালে আমি কোনও ভুল করিনি। ২০১২ সালে আদালত যখন আমায় দোষী সাব্যস্ত করল, শুধু হেসেছিলাম। জানতাম সুবিচার পাবই।”
অবশ্য অন্য একটি আর্থিক তছরুপ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের সাজা ভোগ করছেন মুবারক। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আপাতত গৃহবন্দি এবং হাসপাতালে ভর্তি। অন্য দিকে, আদালতের সাম্প্রতিক রায়ের বিরোধিতা করে মুবারক-বিরোধীদের উচ্চ আদালতে যাওয়ারও সুযোগ থাকছে বলে মত দেশের আইনজীবীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy