দিনের পর দিন অত্যাচার চালাতেন স্বামী। মেরে দাঁত, হাতের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। কোনওক্রমে ৮ শিশুসন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছিলেন আফগানিস্তানের মারওয়া। আমেরিকান সেনার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকার সময় আফগান সরকারের উদ্যোগে স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় মারওয়ার। কিন্তু ২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের শাসনভার নেওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। মারওয়ার প্রাক্তন স্বামী অভিযোগ করেন, জোর করে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তারপরই মারওয়াকে স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তালিবান।
তালিবানের দাবি, ইসলামি আইন মেনে ডিভোর্সের আবেদন করেননি মারওয়া। তাই তাঁকে স্বামীর কাছেই ফিরে যেতে হবে। তালিবদের এই ফরমান শুনে মারওয়া বলছেন, “জীবনে আবার শয়তান ফিরে এল।” স্বামীর হাতে নিগৃহীত হওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে মারওয়া বলেন, “দিনের পর দিন আমায় মারধর করা হত। মারের চোটে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকতাম। আমার ছেলেমেয়েরা বলত, মা পালিয়ে যাও। খেতে না পেলেও অন্তত শান্তিতে বাঁচতে পারব।” ছেলেমেয়েদের মুখ চেয়েই তিনি ১০০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলেন।
নাজ়িফা নামের এক আইনজীবী এই প্রসঙ্গে জানান, কাবুলে যখন আমেরিকার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল, তখন মারওয়ার মতো অনেকেই ডিভোর্সের আবেদন জানিয়েছিলেন। গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে কোনও রকম আপসের পথে যেতে চায়নি এই সরকার। তিনি নিজেই বেশ কিছু ডিভোর্সের মামলা লড়েছেন বলে জানান নাজ়িফা। তবে ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তান পুনর্দখল করার পরই মেয়েদের বিরুদ্ধে একাধিক ফতোয়া জারি করে তালিবান। বাধ্যতামূলক হয় হিজাব এবং বোরখা। পুরুষসঙ্গী ছাড়া বাইরে বেরনো নিষিদ্ধ হয়। তাদের উচ্চশিক্ষায় দাঁড়ি পড়ে। চাকরি থেকেও ইস্তফা দিতে বলা হয় আফগান মেয়েদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy