পুরনো একটা টুইট। ঠিক চার বছরের মাথায় সেটাই ব্যুমেরাং হয়ে গেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। তখনও অবশ্য ট্রাম্প শুধুই ধনকুবের। চুটিয়ে ব্যবসা করছেন, আর একটু একটু করে ভোটে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। সময়টা ২০১৪-র অগস্ট। বারাক ওবামাকে বিঁধতে গিয়ে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘‘আমাদের এমন এক প্রেসিডেন্ট দরকার, যিনি বিশ্বের কাছে হাসির পাত্র হবেন না।’’ অথচ কাল যখন রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় হাসির রোল উঠল, পোডিয়ামে তখন দাঁড়িয়ে ট্রাম্পই।
নিজের গুণ গাইতে গিয়েই কাল লোক হাসালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ দিন আধ ঘণ্টা দেরিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের বার্ষিক সাধারণ সভায় এসে পৌঁছন ট্রাম্প। পরনে কালো স্যুট, লাল টাই। বুকে ব্যাজ— মার্কিন পতাকা। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নিয়ে ফিরিস্তি দিতে গিয়েই একটা সময়ে তিনি বলে বসেন, ‘‘দক্ষতা ও ক্ষমতার বিচারে আমাদের সেনা এখন সর্বকালের সেরা। আর তা ছাড়া দু’বছরেরও কম সময়ে আমার সরকার যা করেছে, আমেরিকার ইতিহাসে কোনও প্রশাসনই তা করতে পারেনি।’’ টেলি-প্রম্পটার দেখে বলছিলেন ট্রাম্প। পুরো বাক্যটাও তখনও শেষ হয়নি, হঠাৎ শোনা গেল হাসির রোল। ব্যাপার কী! ক্যামেরা রোল করতেই নজরে এল, মুখ টিপেও হাসছেন অনেকে। এমনটা ওবামার ক্ষেত্রে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘ট্রাম্পই ফার্স্ট। গত বার এই সভায় হুঙ্কার দিয়ে তিনি চমকে দিয়েছিলেন বিশ্ব নেতাদের। এ বার নিজেই হাসির খোরাক হলেন।’’
পোডিয়ামে স্পষ্টতই অপ্রস্তুত দেখায় ট্রাম্পকে। খানিক পরে বলেন, ‘‘এমন প্রতিক্রিয়া আশা করিনি, তবে ঠিক আছে।’’ পরে সাংবাদিকদেরও জানান, ব্যাপারটাকে তিনি সহজ ভাবেই নিয়েছেন। কূটনীতিকদের একাংশ কিন্তু দাবি করছেন, ট্রাম্প এতটাও সরল নন। নানাবিধ কারণে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এমনিতেই আমেরিকার অবস্থান এখন নড়বড়ে। এই হাসির রেশ সেই জল আরও ঘোলা করবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের।