Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International

মার্কিন ভোটে বড় ফ্যাক্টর কোন কোন স্টেট?

বিশ্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার সবচেয়ে দামি কুর্সিটা কার কাছে যাবে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন নাকি রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে, তা ঠিক করে দেবে আমেরিকার মূলত আটটি প্রদেশ (স্টেট)। এগুলিকেই বলা হয় ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট’। নজর সবচেয়ে বেশি ফ্লোরিডার দিকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২০
Share: Save:

বিশ্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার সবচেয়ে দামি কুর্সিটা কার কাছে যাবে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন নাকি রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে, তা ঠিক করে দেবে আমেরিকার মূলত আটটি প্রদেশ (স্টেট)। এগুলিকেই বলা হয় ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট’। নজর সবচেয়ে বেশি ফ্লোরিডার দিকে। কারণ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে গেলে পপুলার ভোটের চেয়েও যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট সবচেয়ে বেশি এই ফ্লোরিডাতেই। ২৯টি। আর এই ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট’গুলির মধ্যে ইলেক্টোরাল কলেজের শক্তির নিরিখে সবচেয়ে ‘হীনবল’ উইসকনসিন। যেখানে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট মাত্র ১০টি। বাকি ৬টি ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট’-এর মধ্যে রয়েছে পেনসিলভানিয়া (২০), ওহায়ো (১৮), মিশিগান (১৬), নর্থ ক্যারোলিনা (১৫), ভার্জিনিয়া (১৩) এবং মিনেসোটা (১০)। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়াটাই বড় বিচিত্র। কিছুটা জটিলও। পপুলার ভোটে জিতে আসাটাই সেখানে বড় কথা নয়। জেতা মানে সেখানে ইলেক্টোরাল কলেজে জেতা। সব মিলিয়ে মোট ৫৩৮টি ভোট এই ইলেক্টোরাল কলেজে। ফলে, হিলারি হোন বা ট্রাম্প, যিনি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে ২৭০টির বেশি জয় করতে পারবেন, তিনিই জিতবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তাই ২০০০ সালে জর্জ বুশ পপুলার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর চেয়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটে হেরে যাওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছিলেন, কারণ ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে জিতেছিলেন ২৭১-২৬৬ ভোটে।

তবে আমেরিকাতেও একেকটা স্টেট বা প্রদেশ একেকটা দলকে দীর্ঘ দিন ধরে জিতিয়ে আসছে। যেমন প্রায় ২০ বছর ধরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে জিতিয়ে আসছে ক্যালিফোর্নিয়া (৫৫টি ইলেক্টোরাল কলেজ) ও নিউ ইয়র্ক (২৯টি ইলেক্টোরাল কলেজ)। ঠিক তেমনই টেক্সাস, টেনেসি, লুইজিয়ানার মতো স্টেটগুলি যুগ যুগ ধরে জিতিয়ে আসছে রিপাবলিকানদের। তার ফেল হাতে গোনা কয়েকটি স্টেট পড়ে থাকে, প্রেসিডেন্টের কুর্সিটি দখল করার জন্য যাদের নিয়ে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। এমনই কিছু স্টেট হল, পেনসিলভানিয়া (২০), নিউ হ্যাম্পশায়ার (৪), নেভাদা (৬), ওহায়ো (১৮), আইওয়া (৬), ফ্লোরিডা (২৯), নর্থ ক্যারোলিনা (১৫), কলোরাডো (৯) আর নিউ মেক্সিকো (৫)। ডেমোক্র্যাটদের বাঁধা বলে ট্রাম্প এক বারও প্রচারে যাননি ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউ ইয়র্কে। আবার টেক্সাস (৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ) রিপাবলিকানদের বরাবরের ঘাঁটি বলে সেখানে যাওয়ার প্রয়োজনই মনে করেননি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি।

সেই ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের নিরিখে দেখা যাচ্ছে নিউ হ্যাম্পশায়ার, পেনসিলভানিয়া, কলোরাডো আর নিউ মেক্সিকোতে জিততে পারলেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বহু-কাঙ্খিত কুর্সিটি এ বার পেয়ে যাবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন। তবে তার সঙ্গে এ বার হিলারি উইসকনসিন, মিশিগান ও মিনোসোটাতেও জিতবেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। গত বার ওবামাও জিতেছিলেন ওই স্টেটগুলিতে। যদি এই হিসেব শেষ পর্যন্ত মেলে, তা হলে হিলারি প্রয়োজনীয় ২৭০টিরও বেশি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট পেয়ে যাবেন। ২০১২ সালে ওবামা ইলেক্টোরাল কলেজের ৩৩২টি ভোট পেয়েছিলেন। আর রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রামনি ২০৬-এ থেমে গিয়েছিলেন। তার মানেটা হল, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এ বার জিততে হলে ২০১২-য় রিপাবলিকানদের জেতা সবকর্টি ‘রেড স্টেট’ তো হাতে রাখতে হবেই, ওবামার জেতা আরও ৬৪টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটও তাঁকে ছিনিয়ে আনতে হবে। আর এখানেই চলে আসছে পেনসিলভানিয়ার গুরুত্ব। কারণ, এই স্টেটের হাতে রয়েছে ২০টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট। গত ৬টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেনসিলভানিয়ার নাগরিকরা একটানা জিতিয়ে এসেছেন ডেমোক্র্যাটদের। এ বারও দেখা যাচ্ছে, আপাতত হিলারির চেয়ে জনপ্রিয়তার নিরিখে ৫ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুন- আমেরিকায় ফল ঘোষণা শুরু, নিউ হ্যাম্পশায়ারে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE