Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ইরান সঙ্কট: ইরাক থেকে কর্মী সরাচ্ছে আমেরিকা

গত সোমবার একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক দাবি করেছিল, ইরাক-সহ গোটা পশ্চিম এশিয়ায় অন্তত ১ লক্ষ ২০ হাজার সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে আমেরিকা। যদিও গোটা রিপোর্টটিই উড়িয়ে দেন ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউস।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০৩:৩৯
Share: Save:

খবরের কাগজের রিপোর্ট উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কাল জানিয়েছিলেন, ইরানকে চাপে রাখতে পশ্চিম এশিয়ায় এখনই অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে না তাঁর প্রশাসন। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-ও কাল টিভিতে বার্তা দিয়েছিলেন, আমেরিকার সঙ্গে কোনও যুদ্ধে জড়াতে চায় না তাঁর দেশ। কিন্তু ইরাকে বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস এবং আরবিলের মার্কিন কনসুলেটে যাঁরা আপৎকালীন ভিত্তিতে কাজ করেন না, সেই সব কর্মীকে অবিলম্বে ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ফলে উপসাগরীয় অঞ্চলে আতঙ্ক বাড়ছেই।

গত সোমবার একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক দাবি করেছিল, ইরাক-সহ গোটা পশ্চিম এশিয়ায় অন্তত ১ লক্ষ ২০ হাজার সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে আমেরিকা। যদিও গোটা রিপোর্টটিই উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। তাঁর সংযোজন ছিল, ‘‘আমরা যদি পশ্চিম এশিয়ায় আরও সেনা পাঠানোর কথা ভাবি, তবে সেই সংখ্যা হবে বিপুল।’’ গত এক সপ্তাহ ধরে ট্রাম্প-সহ গোটা মার্কিন প্রশাসন দাবি করে এসেছে, আমেরিকা বা তার বন্ধু দেশগুলির উপরে হামলার ছক কষছে তেহরান। কিন্তু কাল টিভিতে খামেনেই বলেছেন, ‘‘আমারও যুদ্ধ চাই না, আমেরিকারও চাই না। কারণ ওরা ভাল করেই জানে, এই যুদ্ধে ওদের কোনও লাভ নেই।’’ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এ কথা বললেও প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির উপদেষ্টা কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রেখেছেন তাঁর টুইট বার্তায়: ‘‘আপনারা আমাদের সঙ্গে আরও ভাল পরমাণু চুক্তি চান। কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে, আপনারা তার বদলে যুদ্ধটাই চান।’’ মার্কিন দৈনিকটি আরও দাবি করেছে, আমেরিকার দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং ইরান চুক্তির অন্যতম অংশগ্রহণকারী দেশ ব্রিটেনের এক সিনিয়র সেনা কর্তা পেন্টাগনে বলেছেন যে, ইরানের আক্রমণের যে ভয় আমেরিকা পাচ্ছে, তা অযৌক্তিক। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের তরফে হামলা হলেই কড়া হাতে তার মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে তারা।

আজ হোয়াইট হাউসের তরফে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ইরাক সীমান্তে ইরানি মদতপুষ্ট জঙ্গিদের সক্রিয়তা বেড়ে গিয়েছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সেখানকার বিভিন্ন দূতাবাস বা কনসুলেটে মার্কিন কর্মীদের উপরে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে কাজ করেন না, এমন কর্মীদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপসাগরীয় এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে রাশিয়াও। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস বুধবার বলেছে, আমেরিকা-ইরান উত্তেজনার কারণে তারা ইরাকে তাদের সেনাদের প্রশিক্ষণ আপাতত বন্ধ রাখছে। ইরাকে জার্মানির ১৬০ জন এবং নেদারল্যান্ডসের ৫০ জনের বেশি সেনা রয়েছেন।

এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই আবার সৌদি আরবের সরকার আজ জানিয়েছে, দু’টি তেলবাহী জাহাজের পরে এ বার তাদের তেলের পাইপ লাইনের উপরে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। সৌদি আরবের শক্তিমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ জানিয়েছেন, কাল রিয়াধের পশ্চিম উপকূলে দু’টি পাইপলাইনে ড্রোন হামলা চালানো হয়। কিন্তু তাতে তেল সরবরাহ স্থগিত হয়নি। ইরানের সঙ্গে আমেরিকার এই দ্বন্দ্বে ইতিমধ্যেই ব্যারেল-প্রতি তেলের দাম বেড়েছে এক ডলার। এটা ঘটনা যে, ইরান যে দিন থেকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে, বিশ্বের তেল মানচিত্রে সৌদি আরবের গুরুত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। যদিও কালকের হামলার সঙ্গে সরাসরি ইরান-আমেরিকার দ্বন্দ্বের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। হামলার পরে ইয়েমেনের হুথি জঙ্গি গোষ্ঠী টুইটারে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। হুথিদের মুখপাত্র মহম্মদ আবদুল সালাম বলেছেন, ‘‘ইয়েমেনে এত বছর ধরে সৌদি জোটের নেতৃত্বে যে গণহত্যা চলছে, এটা তারই পাল্টা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iraq White House Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE