জাহারি আহমেদ শাহ
গত কুড়ি দিন ধরে তাঁর ভূমিকা নিয়ে কম জল্পনা হয়নি। কিন্তু মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ ৩৭০-এর পাইলট জাহারি আহমেদ শাহের পরিবারের তরফে কখনওই কিছু শোনা যায়নি। তবে বিপর্যস্ত মন নিয়ে জাহারি বিমানের ককপিটে বসেছিলেন, গত কাল এমন জল্পনা ছড়ানোর পরে আজ মালয়েশিয়ার এক ইংরেজি দৈনিকে মুখ খুলেছেন তাঁর ছোট ছেলে আহমেদ শেঠ।
বছর ছাব্বিশের ওই যুবক বলেছেন, ৮ মার্চ এমএইচ ৩৭০ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে বাবার সম্পর্কে অনেক মন্তব্য তিনি জেনেছেন। যেমন, জাহারি মালয়েশিয়ার বিরোধী দলনেতার অন্ধ ভক্ত ছিলেন বা বিমান ছিনতাই করেছেন জাহারি। অথবা বিমান ওড়ানোর আগের দিন তাঁর স্ত্রী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। অন্য এক মহিলার সঙ্গে জাহারির সম্পর্ক ঘিরে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল, প্রকাশ হয়েছে এমন খবরও।
আহমেদের কথায়, “আমি সব পড়েছি। কিন্তু জল্পনাকে পাত্তা দিইনি। আমি আমার বাবাকে অনেক ভাল চিনি। বাবা এত ঘুরতেন বলে কথা কম হতো। কিন্তু আমি ওঁকে বুঝতে পারতাম।” গুজবে কান দেননি আহমেদের মা ফৈজা খানুম মুস্তাফা খান, বড় ভাই আহমেদ ইদ্রিশ এবং বোন আইশাও। কেউ মুখ খোলেননি সংবাদমাধ্যমেও।
পরিবহণমন্ত্রী হিশামুদ্দিন হুসেন বলেছিলেন, কোনও সূত্র হাতে আসার আগেই চালক, সহ-চালক বা কোনও যাত্রী সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু না ভাবতে। কিন্তু তার আগেই বাবাকে যারা ছিনতাইকারীর তকমা দিয়েছে, তাদের প্রতি কোনও রাগ নেই আহমেদের। বাবার পরিণতি যে খুব মারাত্মক কিছুই হবে, মনে মনে এক রকম ভেবেই রেখেছিলেন। তাই ১৮ দিন অপেক্ষার পরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী যখন জানালেন, ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে তলিয়ে গিয়েছে বিমান তখন খুব অবাক হননি। তবে আহমেদ এখনও বলছেন, “কেউ বেঁচে নেই এটা তখনই মেনে নেব, যখন হাতে তার জোরদার প্রমাণ পাব।” মা বা বাকি ভাইবোন কী ভাবছেন, তা নিয়ে বিশদে কিছু বলতে চাননি আহমেদ। শুধু জানালেন, পরিবারে তাঁরই মনের জোর সব চেয়ে বেশি। আর সেটা সম্বল করেই বাবার সম্পর্কে রটনা বন্ধ করতে প্রকাশ্যে এসেছেন তিনি।
তবুও জাহারি সম্পর্কে আলোচনা থামছে না। মালয়েশিয়া পুলিশের এক পদস্থ অফিসারকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদপত্র দাবি করেছে, তদন্তকারীরা মনে করছেন এমএইচ ৩৭০-র পরিণতির জন্য দায়ী পাইলটই। কারণ বিমানকে অন্য পথে নিয়ে যাওয়ার কৌশল একমাত্র তিনিই জানতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালয়েশিয়া পুলিশের ওই অফিসারের বক্তব্য, “জাহারি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই বিমানের অভিমুখ বদল করেছিলেন। বিমানে আর যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কারও পক্ষেই ওই কাজ করা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy