গুপ্তচর রাজকন্যা হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। তাঁর সাহস, আত্মত্যাগ তাঁকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম এক নারী চরিত্র করে তুলেছে। এই নুর ইনায়ত খানের ছবি দিয়ে একটি নতুন ডাকটিকিট প্রকাশ করল ব্রিটেনের ডাক দফতর। গত কয়েক দশকে এই প্রথম কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূতের ছবি প্রকাশিত হল ব্রিটেনের ডাকটিকিটে। নুর ইনায়ত খানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রিটিশ সরকারের তরফে এই পদক্ষেপ।
১৯১৪ সালে রাশিয়ার মস্কোয় জন্মগ্রহণ করেন নুর। বাবা হজরত ইনায়ত খান টিপু সুলতানের বংশধর। পশ্চিমী দুনিয়ায় সুফি সঙ্গীত প্রচার করার সূত্রেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন হজরত। ঘটনাচক্রে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সপরিবার লন্ডনে চলে আসেন তিনি। সে সময়েই স্পেশ্যাল অপারেশনস্ এগ্জিকিউটিভ (এসওই)-এর গুপ্তচর হিসেবে যোগ দেন বছর পঁচিশের তরুণী নুর।
বছর পাঁচেক কাজ করার পর জার্মান সেনাদের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। জার্মানির দাচাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে কাটে জীবনের শেষ কয়েকটা দিন। জানা যায়, অসহ্য শারীরিক নির্যাতনেও মুখ খোলেননি নুর। এমনকী নিজের আসল নামটুকুও উচ্চারণ করানো যায়নি তাঁকে। গুলি করে খুন করা হয় তিরিশ বছরের নুরকে। শোনা যায়, মৃত্যুর ঠিক আগে তাঁর শেষ উচ্চারিত শব্দটি ছিল, “লিবার্টি”। মৃত্যুর বহু বছর পরে অবশ্য স্বীকৃতি পেয়েছে তাঁর কীর্তি। ব্রিটেন সরকারের তরফে ‘জর্জ ক্রস’ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে তাঁকে। ফ্রান্সের তরফেও দেওয়া হয়েছে ‘ক্রইক্স দে গু্যয়ের’ সম্মান। ২০০৬ সালে ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় প্যারিসে গিয়ে নুরের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। ২০১২ সালের নভেম্বরে লন্ডনের জর্ডন স্কোয়ারে উন্মোচিত হয় নুর ইনায়ত খানের মূর্তি।
ব্রিটেনের ডাকটিকিটে তাঁর ছবি প্রকাশের ঘটনায় ফের স্বীকৃতি পেল অগ্নিকন্যার সাহসী আত্মত্যাগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy