Advertisement
০১ জুন ২০২৪
Medicine in Grocery Store

মুদির দোকান থেকেও ওষুধ বিক্রি, কেন্দ্রের প্রস্তাবে প্রশ্নে জন-স্বাস্থ্য

সাধারণ দোকান ও মুদিখানায় সেই ওষুধ বিক্রির বিষয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব কার্যকর হলে তা জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করল ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (বিসিডিএ)।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৮:০৯
Share: Save:

আগামী দিনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ওষুধের দোকানের বাইরেও মিলবে বেশ কিছু ওষুধ। তবে, সাধারণ দোকান ও মুদিখানায় সেই ওষুধ বিক্রির বিষয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব কার্যকর হলে তা জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করল ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (বিসিডিএ)।

এ দিন কেন্দ্রের ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠক
করেন বিসিডিএ-র কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘শিডিউল কে’ তালিকাভুক্ত অ্যান্টিসেপটিক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল, মাউথওয়াশ, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ক্রিম, কাশির লজেন্স, অ্যান্টি অ্যালার্জি, জ্বর-ব্যথা, নাকের স্প্রে, খুশকির শ্যাম্পু, কোষ্ঠকাঠিন্যের সিরাপ, অ্যান্টি-ব্যাক্টিরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক লোশন এবং গর্ভনিরোধক বিভিন্ন ওষুধ এ বার সাধারণ দোকান থেকে বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। ওই সমস্ত ওষুধ বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্ট দোকানগুলির কোনও ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন হবে না। এমনকি, ওষুধগুলি কেনার জন্য কোনও প্রেসক্রিপশনেরও দরকার হবে না। এরই বিরোধিতা করে বিসিডিএ-র সভাপতি শঙ্খ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপ দেশের ড্রাগ অ্যান্ড কসমেটিক্স আইনকে লঙ্ঘন করবে।’’

তিনি আরও জানান, ওষুধের দোকানে কী ভাবে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সংরক্ষণ করতে হবে, তা স্পষ্ট ভাবে ওই আইনে উল্লেখ করা আছে। এমনকি, নিয়মে এ-ও বলা আছে, প্রতিটি ওষুধের দোকানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। কিন্তু, কেন্দ্রের নতুন প্রস্তাবে সাধারণ দোকান ও মুদিখানায় ফার্মাসিস্টের প্রয়োজন হবে না।

বিসিডিএ-র কর্তাদের দাবি, এর ফলে লোকজনের মধ্যে নিজেদের ইচ্ছে মতো ওষুধ কেনার প্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই কোনও রোগী ওষুধ খাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট
পরামর্শ থেকেও বঞ্চিত হবেন। সংগঠনের নেতৃত্বের প্রশ্ন, ‘‘ওষুধের দোকানে যে ভাবে নিয়ম মেনে, কোল্ড-চেন বজায় রেখে ওষুধ সংরক্ষিত হয়, তা কি মুদিখানার দোকানে আদৌ সম্ভব?‘‘ এতে ওষুধের গুণগত মান বজায় থাকা নিয়েও তাঁরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।

এ দিন বিসিডিএ-র সম্পাদক সজল গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘শিডিউল কে’ তালিকাভুক্ত ওই
ওষুধগুলি ছাড়াও আরও কী কী ওষুধ সংযোজিত করা যায়, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে।
সজল জানান, সাধারণ দোকানে অবাধে ওষুধ বিক্রির সুযোগ তৈরি হলে নকল ওষুধের দিকটিও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটের পরে আমাদের সর্বভারতীয় স্তরের সংগঠনের তরফে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার দিকটি তুলে ধরব।’’

এর পাশাপাশি, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ ও যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি এবং মেয়াদ-উত্তীর্ণ বা নকল ওষুধের বিষয়ে ওষুধের দোকানগুলিতে নজরদারি চালাতে জেলা প্রশাসনের কর্তাকে চেয়ারম্যান করে জেলা স্তরে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এ দিন সেই বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সজল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওই নজরদারির জন্য ড্রাগ সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং দক্ষতা রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে হবে। এক জন পুলিশ বা পুরকর্মী কখনওই সেটা দেখতে পারেন না। কারণ, নকল ওষুধ বা গুণমান পরীক্ষার জন্য রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার স্বীকৃত একটি মাত্র পরীক্ষাগার রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medicine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE