Cooking Gas

নতুন বছর থেকে বন্ধ হবে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি? বাড়ছে আশঙ্কা

২০২৬ সালে আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণে এলপিজি কিনবে ভারতীয় তেল বিপণন সংস্থাগুলি। চুক্তির মেয়াদ আপাতত এক বছর। পরে তা আরও বাড়তে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:০৯

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

গৃহস্থের রান্নার গ্যাসে (১৪.২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার) ভর্তুকি এখন মাত্র ১৯.৫৭ টাকা। নতুন বছরে কি তাতেও হাত পড়তে চলেছে? সূত্রের ইঙ্গিত অন্তত তেমনই। একই দাবি এক সংবাদ সংস্থারও। সরাসরি ভর্তুকিতে কোপের কথা না বললেও সূত্রটির বক্তব্য, এলপিজির ভর্তুকির হিসাব কষার সমীকরণে বদল আসতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে ভর্তুকি কমারই সম্ভাবনা বেশি। নতুন ভাবে ওই সমীকরণ তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। সরকার তাতে সায় দিয়েছে এমন খবর এখনও পর্যন্ত না থাকলেও সূত্রের দাবি, পেট্রলিয়াম মন্ত্রক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। শীঘ্রই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারে তারা। কেন্দ্রের তরফে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সাধারণ ক্রেতাদের অবশ্য বক্তব্য, ভর্তুকি এখন সামান্যই। এই অঙ্ক আর কতটুকু কমবে!

২০২৬ সালে আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণে এলপিজি কিনবে ভারতীয় তেল বিপণন সংস্থাগুলি। চুক্তির মেয়াদ আপাতত এক বছর। পরে তা আরও বাড়তে পারে। পণ্যটির উপর এত দিন ভর্তুকির হিসাব কষা হত মূলত সৌদি আরব থেকে কেনা জ্বালানির খরচের উপরে ভিত্তি করে (সৌদি কনট্রাক্ট প্রাইস)। কিন্তু আমেরিকা থেকে জ্বালানি এলে সেই হিসাব অনেকটা বদলে যাবে। বস্তুত, খরচ কিছুটা বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, তা সত্ত্বেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চড়া আমদানি শুল্কের চাপে সে দেশ থেকে তেল কিনতে কার্যত বাধ্য হয়েছে তেল সংস্থাগুলি। তার জেরেই সাধারণ গৃহস্থের কপাল পুড়তে পারে। তিন তেল সংস্থার চুক্তি অনুযায়ী, আগামী বছরে আমেরিকা থেকে ২২ লক্ষ টন এলপিজি কেনা হবে। যা দেশের মোট চাহিদার প্রায় ১০%।

অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৪ সালে ইউপিএ আমলের শেষের দিকেও রান্নার গ্যাসে ৮৫৪ টাকা ভর্তুকি পেতেন সাধারণ মানুষ। তার পর থেকে টানা তা কমতে থাকে। কলকাতায় এখন গৃহস্থের এলপিজিতে ভর্তুকি মেলে ১৯.৫৭ টাকা। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় ভর্তুকির অঙ্ক ৩০০ টাকা বেশি। সূত্রের দাবি, আমেরিকা ও সৌদি আরবে জ্বালানির নিট দাম মোটামুটি এক। কিন্তু সেই জ্বালানি আমেরিকা থেকে ভারতে নিয়ে আসার খরচ সৌদি আরবের প্রায় চার গুণ। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই খরচ যে সংস্থাগুলি নিজেদের পকেট থেকে দেবে না তা বলাই বাহুল্য।

উল্লেখ্য, অগস্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল রান্নার গ্যাস কম দামে বিক্রির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলিকে আগামী এক বছরে ৩০,০০০ কোটি টাকা সাহায্য করা হবে। কিন্তু একাংশের দাবি, আমেরিকা থেকে গ্যাস কিনতে যে খরচ বাড়বে, সেই ফারাক এতে মিটবে না। ফলে ভর্তুকি কমানো অন্যতম রাস্তা হতে পারে।

আরও পড়ুন