গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-কে (যার মরাঠী সংস্করণের নাম ‘মহাজুটি’) ঠেকাতে দু’দশকের শত্রুতা ভুলে তুতো ভাই রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। ফলে বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র (এমভিএ) অন্য দুই শরিক, কংগ্রেস এবং এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার) হাত মিলিয়েছে দলিত নেতা প্রকাশ অম্বেডকরের ‘বঞ্চিত বহুজন অঘাড়ী’ (ভিবিএ) এবং আরও কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে।
মুম্বই পুরসভার (সরকারি দস্তাবেজে যার নাম ‘বৃহম্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন’ বা বিএমসি) ভোটে ভাঙন এড়াতে পারেনি শাসক মহাজুটিও। উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি-কে দূরে ঠেলে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের দল বিজেপি আসন সমঝোতা করেছে আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দের শিবসেনার সঙ্গে। অন্য দিকে, অজিতের এনসিপি ৩৭টি আসনে লড়ছে আলাদা ভাবে। সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আর এক শরিক সমাজবাদী পার্টিও ৩০টি ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছে।
মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। তার আগেই ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেসের জোট। বাবাসাহেব অম্বেডকরের পৌত্র প্রকাশের দলের জন্য ৬২টি আসন বরাদ্দ করা হলেও তারা অন্তত ২০টিতে প্রার্থীই দিতে পারেনি! আগামী ১৫ জানুয়ারি বিএমসি-র ২২৭টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হবে। গণনা ১৬ জানুয়ারি। গত ১৫ ডিসেম্বর দেশের বৃহত্তম (জনসংখ্যা এবং বাজেটের নিরিখে) পুরসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র রাজ্য নির্বাচন কমিশন। জানানো হয়েছে, বিএমসির সঙ্গে সে রাজ্যের আরও ২৮টি পুরসভার ভোট হবে। ২০২২ সালের জুনে শিবসেনার ভাঙনের পরে এই প্রথম বার বিএমসির ভোট হতে চলেছে।
এর আগে ২০১৭ সালে শেষ বার বিএমসির ভোট হয়েছিল। ২২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮৪টিতে জিতে বৃহত্তম দল হয়েছিল উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত শিবসেনা। ২০১৯ পর্যন্ত বিজেপির সমর্থনে পুরসভা চালালেও সে বছর বিধানসভা ভোটের পর এনডিএ ছেড়েছিলেন উদ্ধব। তার পর কংগ্রেস এবং এনসিপির সমর্থনে পুরসভা চালাচ্ছিল তাঁর দল। কিন্তু মেয়াদ ফুরোনোর পরে ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত এক বছরে মহাজুটি সরকারের আমলে বিএমসি-র বরাদ্দের ৯৯ শতাংশই খরচ করা হয়েছে শাসকজোটের দখলে থাকা জনপ্রতিনিধিদের এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী শিবিরের দুই প্রধান দলের (উদ্ধবসেনা এবং কংগ্রেস) ভোট ভাগাভাগির কারণে বিজেপি-শিন্দেসেনা জোট কিছুটা এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন ভোটপণ্ডিতদের অনেকে।