WB HS Results 2025

হুইলচেয়ারেই স্বপ্ন দেখা শ্রেয়া উচ্চ মাধ্যমিকে জয়ী মেধার লড়াইয়ে, জানালেন, ফেলুদা তাঁর প্রিয় চরিত্র

অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরেই একের পর এক পরীক্ষায় ভাল ফল করেছেন শ্রেয়া। স্কুলের তরফে তাঁকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
অরুণাভ ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৫ ১৯:০৮
নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

হুইলচেয়ারের বসেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে শ্রেয়া। সেরিব্রাল পলসির কারণে জন্ম থেকেই ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁর। তা সত্ত্বেও রাইটারের সাহায্য নিয়ে একের পর এক পরীক্ষার বৈতরণী পেরিয়েছেন তিনি। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের কলা বিভাগের পড়ুয়া শ্রেয়া সাহা এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে ৪০৪ নম্বর (৮১ শতাংশ) পেয়েছেন। দর্শনে পেয়েছেন ৯১, ইতিহাসে ৮৪ এবং ইংরেজিতে পেয়েছেন ৮০ নম্বর। ভবিষ্যতে দর্শন নিয়ে পড়তে চান তিনি।

Advertisement

অদম্য ইচ্ছে শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে একটানা শুয়ে থেকে রাইটারকে বলে বলে পরীক্ষা দেওয়ার মত অসাধ্য সাধন করেছেন কৃতী। শ্রেয়ার কথায়, ‘‘পরীক্ষার সময় ছোট ছোট বোনেরা অনেক সাহায্য করেছে। যদি ভগবান আরও একটু শক্তি দিত, তা হলে হয়ত আরও ভাল নম্বর পেতাম।’’ গোয়েন্দা গল্পের বইয়ে ক্লান্তি মেটে তাঁর, প্রিয় চরিত্র সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা।

Shreya was also given a special reception by Bethune Collegiate School along with Srijita Dutta, a ninth-grader in higher secondary.

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের তরফে উচ্চ মাধ্যমিকে নবম সৃজিতা দত্তের সঙ্গে শ্রেয়াকেও বিশেষ ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

নিমতলা ঘাট স্ট্রিটের বাসিন্দা শ্রেয়ার বাবা সঞ্জয় সাহা মুদি দোকান চালান, মা জোনাকি সাহা গৃহবধূ। জোনাকি বলেন, ‘‘মেয়ের সেরিব্রাল পলসির অনেক চিকিৎসা করিয়েছি। আগের থেকে একটু ভাল থাকলেও অনেকটাই অসুবিধার মধ্যেও পড়াশোনা করিয়েছি। কিন্তু মেয়ের প্রচন্ড ইচ্ছের কাছে সব বাধা হার মেনেছে। আমি চাই ও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করুক, কারণ ওই বিষয়ে ও ভাল নম্বর পেয়েছে।’’

তবে, কৃতীর লড়াই শুধু উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিটেই থেমে থাকেনি। যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২৩-এর মাধ্যমিকে। সেই বছর মাধ্যমিকে তাঁর ঝুলিতে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৫০২। পঞ্চম শ্রেণি থেকেই শ্রেয়া বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী, তাই স্কুলের তরফে তাঁকে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করা হত। আর শ্রেয়াও জানিয়েছেন, গৃহশিক্ষক থাকলেও স্কুলের উপর তাঁর ভরসা ছিল অগাধ।

কৃতী ছাত্রীর প্রসঙ্গে আপ্লুত বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শবরী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকে শ্রেয়ার মাকে দেখেছি ক্লাসরুমের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে। শ্রেয়া নিজেও প্রচন্ড ধৈর্য্য ধরে মন দিয়ে ক্লাস করত। ওর এই সাফল্যে আমরা ভীষণ খুশি। আমরা আমাদের কর্তব্য করলেও মূল অবদান শ্রেয়ার অভিভাবকদেরই।’’

Advertisement
আরও পড়ুন