নিজস্ব চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় লোকোমোটর ডিজ়এবিলিটি বা অস্থি, পেশি, স্নায়ুর সমস্যাগ্রস্ত 'যোগ্য' পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক, তাঁদের সংরক্ষণ নীতি মেনে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে! এই দাবি নিয়ে বিকাশ ভবন এর সামনে গত চারদিন ধরে শীত উপেক্ষা করে অবস্থান চালাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
তাঁদের দাবি স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় এ বার হাঁটাচলা করা, হাত দিয়ে লেখার ক্ষমতা থাকা প্রার্থীদের সাধারণ শ্রেণিতে সংরক্ষণে সুবিধায় রাখা হয়নি। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও তাঁরা চাকরির সুযোগ পাননি এই ধরনের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
এদের সমর্থনে এবং সরকার যাতে দ্রুত সমাধান করে তার জন্য যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের অন্যতম নেতা মেহবুব মন্ডল বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, "২০১৬ সালের এসএসসিতে ও লোকোমোটর প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি মানেনি সরকার। এ বছর সংরক্ষণ ছিল না বলে অনেকে জেনারেল ক্যাটাগরিতে চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু আমাদের নিয়োগ সংরক্ষণ নীতি কেন মানা হবে না?"
মেহবুব নিজেও লিখিত পরীক্ষায় কাট-অফ নম্বরের থেকে কিছুটা বেশি পেয়ে একাদশ দ্বাদশে তথ্য যাচাই তালিকায় তিনি এসেছিলেন। কিন্তু সংরক্ষণ নীতির কারণে তিনি ছিটকে গেছেন।
আন্দোলনরত প্রতিবন্ধী শ্রেণি শিক্ষক শিক্ষিকাদের দাবি, দেশের প্রতিবন্ধী আইনে বলা হয়েছে শ্রবণ সংক্রান্ত, অস্থি সংক্রান্ত, দৃষ্টি সংক্রান্ত এবং অন্যান্য নানা শ্রেণী প্রতিবন্ধীরা ১% করে মোট ৪ শতাংশ সংরক্ষণ পাবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের ভুলে অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ আসন আর নেই। এই সংরক্ষণ নীতির না থাকায় অন্তত ৫০ জন 'যোগ্য' চাকরিহারা শিক্ষক, যাদের অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁরা পুনরায় চাকরিতে যোগদান করতে পারছেন না।
সংরক্ষণ নীতি মেনে নিয়োগের দাবিতে ইতিমধ্যেই মামলা হয়েছে আদালতে। 'যোগ্য' প্রতিবন্ধকতা সংরক্ষণ কারণে বঞ্চিত তাজমুল শেখ বলেন, "২০১৯ সালে সরকারের তরফে অস্থি সংক্রান্ত শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য রোস্টার প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল। সেখানে শুধুমাত্র যাদের হাতে পায়ে সমস্যা তাঁদের জন্য সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। বাকিদের তুলে দেওয়া হয়েছে। এই নয়া সংরক্ষণ নীতির কারণে আমরা যোগ্য হয়েও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।"
এসএসসি-র এক ভারপ্রাপ্ত কর্তা বলেন, "এদের নিয়োগ সংক্রান্ত সংরক্ষণ নীতি কি হবে সেটা রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগ ঠিক করে পাঠায়। এক্ষেত্রে এসএসসির কিছু করার থাকে না। তবে ইতিমধ্যে এই বিষয়টি তারা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগকে জানিয়েছেন।"
'যোগ্য' শিক্ষক সুমন বিশ্বাস বলেন, "অবিলম্বে বঞ্চিত 'যোগ্য' এই সমস্ত চাকরিহারাদের সঙ্গে সরকারের কথা বলা উচিত। আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমস্যারত প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কথা বলে মানবিক দিক দিয়ে এদের সমস্যা সমাধান করুন। চাকরি না থাকলে এরা বাঁচার অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলবে।"