Sustainability Development Goals

পৃথিবীকে বাঁচাতে সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন সঠিক নির্দেশনা, পথ দেখাবে আইআইএসইআর

দেশে সুস্থায়ী দূষণহীন অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কী ভাবে করা সম্ভব, তা নিয়ে পর্যালোচনার পাশাপাশি এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনায় জোর দেওয়াও চলছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ১৭:০২
How much learning opportunity is there to meet the Sustainable Development Goals?

সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের জন্য় পঠনপাঠনের সুযোগ কতটা রয়েছে? ছবি: আইআইএসইআর, কলকাতার ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

সময় যত পেরোচ্ছে, উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মাটি। জলের স্বাদ বদলাচ্ছে, কার্বনের চাদর হয়ে উঠছে পুরু। এরই মাঝে, বিজ্ঞানীদের সতর্কবাণী বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, উষ্ণায়নের প্রকোপ রুখতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে দেওয়া যাবে না। প্রাক্‌-শিল্পবিপ্লব যুগে যে তাপমাত্রা ছিল, তার চেয়ে বড়জোর ১.৫ ডিগ্রি বাড়তে পারে পৃথিবীর তাপ। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়িত করার জন্য যে সব পরিকল্পনা ছিল, বিশ্বের বেশির ভাগ উন্নত দেশ তা রূপায়নে ব্যর্থ।

Advertisement

বিশ্ব জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, পৃথিবীর সাম্প্রতিক ইতিহাসে ২০২৩-এর আটটি মাস ছিল উষ্ণতম! এই প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বলছেন বিজ্ঞানীরা। এরই সঙ্গে ক্রমশ জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। যে কোনও দেশের উৎপাদন নির্ভর করে এই জ্বালানির উপর। পাশাপাশি ক্রমাগত বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ, জলবায়ুর ক্ষতি বাড়িয়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে সুস্থায়ী দূষণহীন অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কী ভাবে করা সম্ভব, তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর) কলকাতার বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক পুণ্যশ্লোক ভাদুড়ি জানিয়েছেন, সুস্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বিষয়টি শিল্পক্ষেত্রের উৎপাদন পদ্ধতিতে পরিবর্তন বা সরকারি নিয়ম নীতি প্রয়োগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যাঁরা সুস্থায়ী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন, বা বর্তমানে পড়াশোনা বা গবেষণা করছেন, তাঁদেরও অবদান সমান ভাবে প্রয়োজন।

Experts say that it is equally necessary to emphasize education to increase awareness about the issue to prevent the problem of global warming.

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের সমস্যা রুখতে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পঠনপাঠনেও জোর দেওয়া সমান ভাবে প্রয়োজন। প্রতীকী চিত্র।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ক্লিন গঙ্গা প্রজেক্ট’ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার ফিনানশিয়াল অ্যাকাউন্টিংয়ের ক্ষেত্রে সুস্থায়ী উন্নয়ন আধিকারিকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট বিষয় যাঁরা পড়াশোনা বা গবেষণামূলক কাজ করেছেন, তাঁরাই পরবর্তীতে এই আধিকারিক হিসাবে কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন।

দেশে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সাস্টেনেবেল ডেভেলপমেন্ট, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড সাস্টেনেবিলিটি এবং নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাস্টেনেবেল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ানো হয়ে থাকে। চলতি বছর থেকে আইআইএসইআর কলকাতায় স্নাতকোত্তর স্তরে সাস্টেনেবিলিটি সায়েন্স বিষয়টিতে মাস্টার অফ সায়েন্স ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়েছে। ভর্তির আবেদন ৯ জুলাই পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে। তবে, কোর্সটি মাত্র ১০ থেকে ১৫ জন পড়ুয়ারা করার সুযোগ পাবেন।

আসন সংখ্যা কম রাখার কারণ হিসাবে অধ্যাপক পুণ্যশ্লোক ভাদুড়ি জানিয়েছেন, সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ক্ষেত্রে সঠিক বিশেষজ্ঞ তৈরি করার কাজটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপরই শুধুমাত্র নির্ভর করে না। সমস্ত আবেদনকারীর মেধা এবং তাঁর ভাবনা সমান ভাবে পাঠ্যবিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য তৈরি করতে পারবে কিনা, তাও যাচাই করে নেওয়া হবে।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজিক্যাল স্টাডিজ় বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জয়ন্তকুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, স্কুল বা কলেজ স্তরে এই বিষয়ে চর্চা তেমন ভাবে প্রচলিত নয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। তিনি বলেন “সাধারণত পরিবেশ বিজ্ঞান বা পরিবেশ বিদ্যার বিষয়টির শাখা প্রশাখার হাত ধরেই সুস্থায়ী উন্নয়ন নিয়ে চর্চা চলে। অদূর ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর স্তরের গণ্ডি পেরিয়ে এই বিষয়টি স্কুলস্তর থেকেই পড়ুয়ারা সচেতন হওয়ার সুযোগ পাবে, এটাই আশা করা যেতে পারে।”

Advertisement
আরও পড়ুন