ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার, ২৭ জুলাই— রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ঠিক তিন মাস আগে। এখনও প্রকাশিত হয়নি ফলাফল। কবে ফল প্রকাশ হবে, জানেন না পরীক্ষার্থীরা। উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে কয়েক হাজার পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের।
এ বিষয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের এক কর্তা জানান, তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন ফল ঘোষণার জন্য। কিন্তু ওবিসি সংরক্ষণ মামলা বিচারাধীন থাকায় ফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে তাঁর দাবি।
এ দিকে, ইতিমধ্যেই বহু পড়ুয়া ভিন্ রাজ্যে পড়তে চলে গিয়েছেন বলে খবর। আবার বহু অভিভাবকই অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছেন সন্তানকে। যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয় আশঙ্কা করছে এর পর মধ্য ও নিম্ন মেধার পডুয়ারা ভর্তি হবেন এ রাজ্যের কলেজগুলিতে। আখেরে ক্ষতি হবে রাজ্যের। ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং আসনগুলি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, স্নাতক স্তরেও আসন ফাঁকা থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতার বাসিন্দা দেবরাজ কুণ্ডর ছেলে এ বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বসেছিলেন। দেবরাজ বলেন, “পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে গত ২৭ এপ্রিল। তিন মাস পরও ফল প্রকাশ হল না। ইতিমধ্যেই আমার ছেলেকে রাজস্থানের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়ে ভর্তি করাতে হয়েছে। ওখানে চার বছরে খরচ প্রায় ৪০ লক্ষ।” পাশাপাশি তিনি জানান, জেইই মেন-এর মাধ্যমে শিবপুরে ভর্তি করা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে। এই মূল্য ফেরতযোগ্য নয়। ফলে দেদার টাকা নষ্ট হয়েছে দেবরাজের। তাঁর প্রশ্ন, “আমার সমর্থ্য অনুযায়ী খরচ করেছি। সকলের এটুকু সামর্থ্য নেই। তাঁরা কী করবেন?”
লা মার্টিনিয়ার বয়েজ থেকে আইএসসি পাশ করেছেন অনিন্দ্য দাশগুপ্তের ছেলে। স্বপ্ন ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন। সম্ভব হচ্ছে না। অনিন্দ্য বলেন, “কতদিন আর অপেক্ষা করব! বছর নষ্ট হবে। তাই সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি করেছি বিএসসি-তে। ফল প্রকাশের পর আদৌ আর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে কি না, তা নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে।”
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি তালিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফ থেকে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রধান বিচারপতির কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে মামলা শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হলেও প্রধান বিচারপতি এজলাসে না বসায় শুনানি হয়নি। সোমবার এই শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।