Kasba Rape Case

এক সপ্তাহ পরও পঠনপাঠন বন্ধ কেন! শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে কী জানাল কসবার আইন কলেজ?

কসবা ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে কলেজের পরিচালন সমিতি। অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কলেজের অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীর চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত ‘এম’কে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৭
South Calcutta Law College, Kasba.

কসবা আইন কলেজ। — ফাইল চিত্র।

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের পঠনপাঠন বন্ধ কেন? জানতে চেয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পরিচালন সমিতির কাছে রিপোর্ট তলবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিল কলেজ। শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির উত্তরে কলেজ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ কলেজ ক্যাম্পাসকে সিল করে রেখেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই পঠনপাঠন চালু করা হবে।

Advertisement

ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন-এর (ডিপিআই) মাধ্যমে কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, কলেজ প্রাঙ্গণের বাইরে ও ভিতরে পুলিশি প্রহরা থাকায় পঠনপাঠন ব্যাহত হতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও প্রশাসনিক কাজ চলছে, অফিস খোলা থাকছে বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন ঘটনার সাত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন ক্লাস শুরু হয়নি? তিনি বলেছিলেন, “আমি খানিকটা বিস্মিত, পঠনপাঠন চালু থাকারই কথা। আশা করছি, ছাত্রছাত্রীরা দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে। পরিচালন সমিতির কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি।”

বৃহস্পতিবার একটি জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম তালাবন্ধ থাকবে। এই মর্মে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরকে বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে হবে। কলকাতা হাই কোর্টের আরও নির্দেশ, জরুরি কোনও প্রয়োজন হলে এই বিষয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করতে হবে। তা ছাড়া ইউনিয়ন রুম তালাবন্ধই থাকবে।

উল্লেখ্য, তিন মাস আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাসের ইউনিয়ন রুমে অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ প্রকাশ্য আসে। সেই খবর পাওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের সঙ্গে বৈঠকের পর সমস্ত ক্যাম্পাসের ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘‘১০ থেকে ১২ বছর ছাত্রভোট হয়নি, সেই পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন রুমের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে আদালতের কাছেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বক্তব্য রাখা হয়েছিল। আদালত তাতে মান্যতা দিয়েছে।’’

Union rooms on all Calcutta University campuses were closed three months ago.

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্যাম্পাসের ইউনিয়ন রুমগুলি তিন মাস আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নিজস্ব চিত্র।

এর আগে বুধবার সকালে আইন কলেজ পরিদর্শন করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল। পাঁচ সদস্যের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ বৈঠক করে পুলিশ এবং কলেজের উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কলেজকে একাধিক বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই আলোচনায় উঠে আসে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ইউনিয়ন রুম ব্যবহার করার প্রসঙ্গও।

ইতিমধ্যেই কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীর পদ থেকে মূল অভিযুক্ত ‘এম’কে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর কর্মজীবনের প্রাপ্ত বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশিকা জারি হবে শীঘ্রই। অভিযুক্ত অন্য দুই ছাত্রকেও কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতর রক্ষীর ঘরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীকে। ওই প্রাক্তনীই কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসাবেও নিযুক্ত। এঁরা সকলেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তা খারিজ করার পরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)

Advertisement
আরও পড়ুন