WBBPE TET

আইনি জটিলতা-ওবিসি শংসাপত্র বাতিল, কোথায় থমকে টেট নিয়োগ? রইল পর্ষদের ব্যাখা

ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলার কারণেই সম্পূর্ণ তালিকা পাচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তার ফলে পরীক্ষা নিয়েও যোগ্য শিক্ষক পদপ্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারছে না পর্ষদ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪২

প্রতীকী চিত্র।

২০২২ থেকে ২০২৫। গত তিন বছরে দু’বার টেট পরীক্ষা নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তার পরেই থমকে ইন্টারভিউ। বেরোয়নি শেষ পরীক্ষার ফলও। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দাবি, ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলার কারণেই সম্পূর্ণ তালিকা পাচ্ছে না তারা। তার ফলে পরীক্ষা নিয়েও যোগ্য শিক্ষক পদপ্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারছে না পর্ষদ।

Advertisement

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি সংক্রান্ত মামলাটি বিচারাধীন থাকায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার থেকে শ্রেণিভিত্তিক শূন্যপদের সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পর্ষদও কোনও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না’’।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে টেট উত্তীর্ণ হয়েছিলেন দেড় লক্ষের কিছু বেশি পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে ৬৯ হাজার ৪০৮ জন ছিলেন মহিলা, ৮১ হাজার ৭৭ জন পুরুষ। এ ছাড়া, ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের পরীক্ষার্থী। সেই সময়ে বর্তমান পর্ষদ সভাপতি ঘোষণা করেছিলেন, উত্তীর্ণদের দ্রুত ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল ২০২৩-এর ১০ ফেব্রুয়ারি। তার পরে কেটে গিয়েছে দু’বছর। বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করেনি পর্ষদ। যার জেরে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক চাকরিপ্রার্থী কাশ্মীরা খাতুন বলেন, ‘‘পূর্ব বর্ধমানে ২০২২-এর যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা টেট পাস করেছে। ৫০ হাজার শূন্য পদ-সহ যেন ইন্টারভিউয়ের তারিখ প্রকাশ করা হয়। আমরা যোগ্য হয়েও বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি গত দু’বছর ধরে। আমরা চাই রাস্তায় নেমে আন্দোলন নয়, আমাদের দ্রুত নিয়োগ করা হোক।’’

উল্লেখ্য, গত বছর ২২ মে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাইকোর্ট জানায়, ২০১০ সালের পর থেকে পদ্ধতি মেনে ওই সব সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়নি। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। পরে একই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনও। সেই মামলার শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হচ্ছে বিচারপতি গগৈ বেঞ্চেই।

এরই মধ্যে এ বিষয়ে নতুন করে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি পর্ষদের ব্যাখা, টেট-ই একমাত্র মানদণ্ড নয় নিয়োগের। সংরক্ষণ, অসংরক্ষিত আসন, তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি তালিকার প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মধ্যেও অনেক ধাপ রয়েছে। তার মধ্যে টেট-এ রয়েছে মাত্র পাঁচ নম্বর। বাকি ৪৫ নম্বর বিভিন্ন বিষয়ের যোগ্যতার নিরিখে নির্ধারিত করা থাকে। আইনি জটিলতা না মিটলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাতে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে পর্ষদকে। এই বিষয়টি যোগ্য প্রার্থীদের বুঝতে হবে বলে জানিয়েছে পর্ষদ।

Advertisement
আরও পড়ুন