School Education Department

উঠে যাচ্ছে টিচার ইন-চার্জ পদ, রাজ্যের সমস্ত স্কুলের জন্য নয়া নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের

বৃহস্পতিবার স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে আর কোনও স্কুলেই ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক’ বলে কোন পদ থাকবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০৪
কয়েক দশকের বিতর্কের অবসান, দাবি শিক্ষামহলের একাংশের।

কয়েক দশকের বিতর্কের অবসান, দাবি শিক্ষামহলের একাংশের। — ফাইল চিত্র।

কাকদ্বীপের স্কুলে পড়ুয়াদের সামনেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু স্কুল শিক্ষা দফতর নির্দেশিকা জারি করে অবলুপ্ত করে দিল টিআইসি (টিচার ইনচার্জ) বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে নিউ ইন্টিগ্রেটেড মডেল স্কুলগুলি ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক’ বলে কোন পদ থাকবে না। এই নিয়ম জারি হচ্ছে সমস্ত সরকারি এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের ক্ষেত্রে।

জানানো হয়েছে, কোনও স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকলে সেই জায়গায় যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন তার পদের নাম হবে অ্যাসিস্ট্যান্ট-মাস্টার-ইনচার্জ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট-মিস্ট্রেস-ইন-চার্জ।

এত দিন পর্যন্ত যে সমস্ত স্কুলে প্রধান শিক্ষক ছিলেন না, সেখানে স্কুলের সব থেকে অভিজ্ঞ শিক্ষকদেরই টিচার ইনচার্জ পদে দায়িত্ব সামলাতে হত। কিন্তু গত কয়েক বছরে অভিযোগ উঠেছে, রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে এই নিয়ম না মেনেই শাসকঘনিষ্ঠ জুনিয়র শিক্ষকদের এই পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। আবার টিআইসি পদের অপব্যবহার করে স্কুলে নানা কাজকর্ম করা হচ্ছে বলেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে শিক্ষা দফতরে। পদের অপব্যবহার নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরে।

প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকলে সেই জায়গায় যিনি দায়িত্ব নেবেন, তাঁর নাম হবে অ্যাসিস্ট্যান্ট-মাস্টার-ইনচার্জ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট-মিস্ট্রেস-ইন-চার্জ।

প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকলে সেই জায়গায় যিনি দায়িত্ব নেবেন, তাঁর নাম হবে অ্যাসিস্ট্যান্ট-মাস্টার-ইনচার্জ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট-মিস্ট্রেস-ইন-চার্জ। —ফাইল চিত্র।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এই পদের নামকরণ কী হবে তা নিয়ে কয়েক দশক ধরেই বিতর্ক চলছিল। এক শ্রেণির শিক্ষক, বিশেষ করে সরকারপন্থী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এই পদের আকর্ষণ খুব বেশি। শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশ বহুদিনের জটিলতা নিরসনে সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সহ-শিক্ষকদের একাংশের বিবাদে কার্যত অচলাবস্থার পরিস্থিতি হয়েছে অন্ডাল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরিবর্তনের দাবিতে জেলা স্কুল পরিদর্শক, স্থানীয় বিধায়ক-সহ নানা জায়গায় চিঠি দিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। আবার কোথাও টিচার ইনচার্জের একটি পদে দু’জন বসার অভিযোগ রয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুলের মিড-ডে মিল।

হিসেব বলছে, ২০১৮ সালের পর থেকে সরকারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। বেশির ভাগ স্কুলেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। তার ফলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে কোনও কোনও স্কুলে।

শিক্ষকদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে খুশি। নারায়ণদাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “টিচার-ইন-চার্জ পদটি তুলে দেওয়ায় স্কুলগুলির ভাল হবে। বহু স্কুলে প্রধান শিক্ষকেরা কাজে যোগ দিয়েও কাজ করতে পারতেন না, ইন-চার্জদের দাপটে।”

Advertisement
আরও পড়ুন