Chocolate Day Spacial

কারও সঙ্গে ‘চকোলেট’ শব্দটাই বেমানান! কেউ নিজেই ‘চকোলেট’ তাঁর প্রিয় মানুষটির কাছে!

শরীর সচেতন এই প্রজন্ম কি একটা দিন চকোমাখো হবেন? প্রিয়জন উপহার দিলে একটা কোনা ভেঙে দাঁতে কাটবেন? তারকারাও কি এই দলে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৩
‘চকোলেট ডে’-তে চকোমাখো হবেন তারকারা?

‘চকোলেট ডে’-তে চকোমাখো হবেন তারকারা? গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

চোখ বন্ধ করে সেই বিজ্ঞাপনটি মনে করুন! সেই যে, ঐশ্বর্যা রাই (তখনও বচ্চন নন) তারিয়ে তারিয়ে চকোলেট খাচ্ছেন। তাঁর পাশে বসা পুরুষটি জিভ, ঠোঁট চেটে একাকার। কোনও মতে একটি টুকরো তাঁকে দিয়ে শরীরী বিভঙ্গেই রাইসুন্দরী যেন বুঝিয়ে দিলেন, ‘এ স্বাদের ভাগ হবে না!’ সময়টা নব্বইয়ের শেষ বা শূন্য দশকের গোড়া।

Advertisement

কাট টু একুশ শতক। ইংরেজি মতে, এখন প্রেম বেড়ে সাত দিন। ৭ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এখনও এই একটি সপ্তাহ জুড়ে গ্রিটিং কার্ডের আর উপহার সামগ্রীর দোকানগুলি যেন স্বপ্নের পসরা মেলে বসে। নানা মাপের টেডি, গোলাপ, দেশি-বিদেশি চকোলেট— সাত দিন ব্যাপী প্রেম দিবসের কত রকমারি তোড়জোড়!

প্রেম দিবস আসার আগে তার কত রকমের প্রাক্‌ভাষ! গোলাপ দিবস, লাল কিংবা গোলাপি গোলাপ দিয়ে শুরু। প্রেমপ্রস্তাবের দিনে ভালবাসায় সিলমোহর মিললেই মিষ্টিমুখের পালা। প্রেম যখন ইংরেজি মতে মিষ্টিতেও বিলিতি ছোঁয়া। অতএব ‘চকোলেট ডে’। একুশ শতক বলছে, ইহাতে নাকি কিঞ্চিৎ ভাটার টান! বিজ্ঞাপনের ঐশ্বর্যার মতো কেউ আর নাকি চেটেপুটে চকোলেট খান না। কেন? বাড়তি ক্যালোরি জমে মুঠো মাপের কোমর যদি বেড়ে যায়! সাধারণ থেকে খ্যাতনামী— সকলেই ইদানীং শরীর সচেতন। দিনটা কি তা হলে মাঠে মারা যাবে? তা কেন! দোকানে যখন দেশি-বিদেশি চকোলেট থরে বিথরে সাজানো তখন প্রিয় বা প্রিয়া অন্তত একটি কোনা ভেঙে খাবেন বইকি।

আর যাঁরা শরীর বা বয়সের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন? তাঁরা হয়তো অতীতের মিষ্টি স্মৃতিতে বুঁদ হবেন। যেমন, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, ইশা সাহা, ঋষি কৌশিক, স্বস্তিকা দত্ত, ঊষসী রায়।

চকোলেট ঠিক আমার সঙ্গে মানায় না...

আজ বুঝি ‘চকোলেট ডে’? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে পাল্টা জানতে চাইলেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। তিনি তখন বিমানবন্দরে। সেখান থেকেই জানালেন, তাঁর আমলে এ সব ব্যাপার ছিলই না। জানতেনই না, কবে গোলাপ দিবস, কবেই বা চকোলেটে মিষ্টিমুখের দিন। অভিনেতার ‘মাচো’ ইমেজের ছায়া তাঁর কথাতেও। বললেন, “আমার সঙ্গে চকোলেট ব্যাপারটা ঠিক যায় না। আমারও বড্ড ন্যাকা লাগে। ফলে, বিশেষ একটি দিনে কাউকে চকোলেট দেব ভাবতেই পারি না।” ইন্দ্রনীল কি তা হলে চকোলেট থেকে শত হস্ত দূরে? “তা কেন! খাই তো। যা বয়স আমার, কখনও-সখনও ডার্ক চকোলেট মুখে পুরি।” ফাঁস করলেন, কারও জীবনে বিশেষ দিন এলে উপহার হিসেবে অনেক সময় চকোলেট দিয়েছেন। আর হ্যাঁ, মেয়ে যখন ছোট ছিল তখন ছোট্ট মুঠি ভরিয়ে দিতেন রকমারি চকোলেটে।

ডার্ক চকোলেট পছন্দ হলে আমায় পছন্দ হবে...!

সতর্ক করলেন নাকি ইশা সাহা? উঁহু, অভিনেত্রী আদতে এ রকমই। একটুও চকোলেট ভালবাসেন না। তাই বিশেষ দিনের কথা উঠতেই তাঁর দাবি, “আমার একটুও পছন্দ নয়। যিনি দেবেন আদতে তাঁরই লোকসান! যদি আমার জীবনে কেউ থেকেও থাকেন তিনি কিন্তু ভুলেও চকোলেট দেন না!” শরীরচর্চা করতে করতে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বললেন অভিনেত্রী। তা হলে কি তাঁর জীবনে এই বিশেষ উদ্‌যাপন পর্ব ডার্ক চকোলেটের মতোই তেতো? “উমমম্‌! কিছুটা বলতে পারেন। যাঁদের ডার্ক চকোলেট পছন্দ, তাঁদের আমায় পছন্দ হবে”, বলেই হাসিতে ভেঙে পড়লেন ইশা। তাঁর পছন্দের কেউ যদি চকোলেট ভালবাসেন? সেটা জানা থাকলে তাঁকে খুশিমনে চকোলেট উপহার দেবেন ইশা। নইলে তাঁর জীবনে চকোলেটের মাহাত্ম্য অসার। তা হলে প্রেম দিবসে মিষ্টিমুখ হবে কী দিয়ে? অভিনেত্রীর দুষ্টু জবাব, “আগে জানতে হবে, আমি চাই কি না।” অভিনেত্রী সবুজ সঙ্কেত দিলে ‘ডার্ক চকোলেট’ একটু হলেও চলতে পারে!

আমার তো ইমেজটাই রাগী রাগী

“এমন ইমেজে চকোলেট মানায়?”, প্রশ্ন শুনে পাল্টা কৌতূহল ঋষি কৌশিকের। না খেতে ভালবাসেন, না ‘চকোলেট হিরো’ ইমেজে খুশি তিনি। সপাট জানিয়ে দিলেন, ছোটবেলা থেকেই আইসক্রিম আর চকোলেট টানেনি তাঁকে। তাঁর কাছে আইসক্রিম মানে ‘গোলা’। আর কেক অন্য যে কোনও স্বাদের। শরীর সচেতনতাই কি হেতু? প্রেমে পড়লেও তো লোকে চকোলেট খায় বা উপহার দেয়! অভিনেতার রসিকতা, “সে রকম কিছু হলে বা থাকলে সকলকে জানাব কেন?” তার পর বললেন, “একেবারে খাইনি, এমন নয়। তবে বেশি নয়। বরং কেউ দিলে আশপাশে সেই সময় যাঁরা থাকেন তাঁদের ভাগ করে দিয়ে দিই।”

মন আর মুখ মিষ্টি থাকলেই সব মিষ্টি...

এমনটাই মনে করেন স্বস্তিকা দত্ত। “সারা বছর তাই ‘চকোলেট ডে’ হোক, মন থেকে চাইছি। সারা বছর তা হলে সকলের মুখ, মন মিষ্টি থাকবে। উপহারেও চকোলেট আবশ্যিক হোক”, দাবি তাঁর। স্বস্তিকা যে নিছক বলার জন্য বলেছেন, এমন নয় কিন্তু। তিনি এতটাই ‘চকোলেটি’ যে, আরাধ্য দেবতা জগন্নাথদেবকে রোজ চকোলেট খেতে দেন! পছন্দের মানুষদেরও ছুতোয়নাতায় চকোলেট উপহার দিতে ভালবাসেন। তার পরেই ফাঁস, “যদিও দেওয়ার থেকে আমি চকোলেট উপহার পাই বেশি।” বলেই ফোনের ও পারে হা হা হাসি।

ভিকিকে পেলে নিজেই ‘চকোলেট’ হয়ে যাব

ভিকি কৌশল তাঁর নয়নমণি! তাঁকে পেলে নিজেই ‘চকোলেট’ হতে রাজি ঊষসী রায়! ‘চকোলেট ডে’ প্রসঙ্গ তুলতেই অভিনেত্রী লাজুক কণ্ঠে এই কথা জানালেন। সঙ্গে আফসোস, “কলকাতায় ভিকি ঘুরে গেলেন। দেখাই করতে পারলাম না। বিশ্বাস করুন, ওকে এত ভালবাসি! যদি ডেট করতে পারতাম...!” ধরুন, বিশেষ দিনে আপনি আর ভিকি পাশাপাশি, কোন স্বাদের চকোলেট উপহার দেবেন? এ বার অভিনেত্রী সাহসী, “ভিকির কাছে পৌঁছতে পারলে নিজেকেই ওঁর হাতে সঁপে দেব। তার পর যদি চকোলেট খেতে চায়, দেব।” এ-ও জানাতে ভোলেননি, তিনি চকোলেটের পোকা। সারা বছর নিজে কেনেন, নয়তো উপহার পান। তাঁর তাই আলাদা করে ‘চকোলেট ডে’-র প্রয়োজন পড়ে না।

Advertisement
আরও পড়ুন