স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত টলিউডের খ্যাতনামীরা। নিজস্ব ছবি।
২০২৫ সালের স্ক্রিনিং কমিটির শেষ বৈঠক শনিবার। কমিটির সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, স্বরূপ বিশ্বাস, শ্রীকান্ত মোহতা, রানা সরকার-সহ উপস্থিত কমিটির সদস্যরা। বৈঠকশেষে সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, “স্ক্রিনিং কমিটির সমর্থনে নেই দেব।”
পিয়ার কথায়, “এ দিনের বৈঠকে কমিটির অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হয়। সেখানেই ভোটাভুটির পর দেব জানান, কমিটির উপরে সমর্থন নেই তাঁর।” কেন সমর্থন তুলে নিলেন প্রযোজক-অভিনেতা? জানা যায়নি। কারণ, এ দিনের বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তবে, বড়দিনের ছবি ‘প্রজাপতি ২’-এর মুক্তির আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে দেবের অনুযোগ, বছরশেষে নাকি ‘বন্ধু’দের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাঁকে, যা তাঁকে খুবই ব্যথিত এবং বিস্মিত করেছে। তারই কি ছায়া পড়ল স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকে?
তা হলে কমিটিকে সমর্থন করছেন কারা? পিয়া জানিয়েছেন, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্রীকান্ত মোহতা, নিসপাল সিংহ রানে, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, শতদীপ সাহা, ফিরদৌসল হাসান, রাজকুমার দামানি, পঙ্কজ লাডিয়া, রানা সরকার, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। এ দিনের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল টলিউডের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের। তালিকায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, নবীন চৌখানি, নীলরতন দত্ত,সমীরণ দাস, সুভাষ সেন, ঋতব্রত ভট্টাচার্য, সরোজ মুখোপাধ্যায়। এঁরা প্রত্যেকে স্টেক হোল্ডার। একই সঙ্গে কমিটিকে সমর্থন জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম-কে প্রসেনজিৎ বলেছেন, “কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণরক্ষা করতেই এসেছি। আলাদা করে কোনও মতামত জানাইনি।”
কমিটির এক সদস্যের মতে, প্রথম সারির পরিচালক-প্রযোজকদের পাশাপাশি নতুন পরিচালক-প্রযোজকদেরও প্রাইম ডেট পাওয়া উচিত। তবেই তাঁরা কাজে উৎসাহী হবেন। এ দিনের আলোচনায় তাঁর মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, ১৯ জানুয়ারি ফের সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকাশ্যে আনা হবে ২০২৬ সালের বাংলা ছবির ক্যালেন্ডার। বাংলা বিনোদনদুনিয়ায় ক্রমশ কালো ছায়া ফেলছে সমাজমাধ্যম। পরস্পরের প্রতি আক্রমণ, কটাক্ষ, কুমন্তব্য প্রকাশ্যে চলে আসছে, যা টলিউডের সুস্থ পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলছে। এ বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে আজকের আলোচনায়।
এ দিন পিয়া বলেন, “গত বছর পুজোয় সমাজমাধ্যমে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছিল কাহিনিকার-চিত্রনাট্যকার জ়িনিয়া সেনকে। এ বছরেও সেই যুদ্ধ চলছেই। অবিলম্বে এই লড়াই বন্ধ হওয়া উচিত। আমরা তীব্র নিন্দা করছি বিষয়টির এবং সমর্থন জানাচ্ছি জ়িনিয়াকে।” রানা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্ক্রিনিং কমিটি এবং ইম্পা সম্মিলিত ভাবে প্রশাসনের দ্বারস্থ হবে, যাতে টলিউডের সঙ্গে জড়িত কেউই এ ভাবে হেনস্থার শিকার না হন।
একই ভাবে এ বছর, বড়দিনের ছবিমুক্তির আগের দিন নবীনা সিনেমাহলের টিকিট বিক্রির জায়গা ঘেরাও করেছিলেন কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। এই ঘটনারও তীব্র নিন্দা করেছে স্ক্রিনিং কমিটি। এ প্রসঙ্গে প্রযোজক শ্রীকান্তের বক্তব্য, “টলিউড এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে চলতে অভ্যস্ত নয়। এই ধরনের অনভিপ্রেত কাণ্ডকেও তাই আমরা সমর্থন করি না। মন থেকে চাইছি, এই ন্যক্কারজনক কার্যকলাপ বন্ধ হোক। তবেই টলিউডের সার্বিক উন্নতি।”
শিবপ্রসাদ বলেন, “ছবিমুক্তিকে ঘিরেই যাবতীয় গোলযোগ। প্রাইম ডেটে ছবিমুক্তি ঘটাতে চাইলে বাকিদের সঙ্গে সিনেমাহল, শো— সবই ভাগ করে নিতে হবে। যিনি সেটা মানবেন না তিনি নন প্রাইম ডেটে ছবি আনতে পারেন। টলিউড তাঁদের পাশে থাকবে।” তিনি উদাহরণ দেন ‘অ্যানিম্যাল’, ‘ধুরন্ধর’, ‘সঁইয়ারা’র মতো ছবির। যারা প্রাইম ডেটে না এসেও বিশ্বের বাজারে কোটি কোটি ব্যবসা করছে।