Tollywood Celebrities On Teachers Day

কেউ কটাক্ষ শুনে সাহসী হয়েছেন, কেউ শত্রুদের থেকে শিক্ষা পেয়েছেন! টলি তারকাদের জীবনের ‘শিক্ষক’ কারা?

জীবনে চলার পথেও কিছু মানুষ বা কিছু ঘটনা শিক্ষা দিয়ে যায়। ভাল বা খারাপ— দু’রকম শিক্ষাই হতে পারে। আবার কখনও জীবনই হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় শিক্ষক। টলিপাড়ার জীবনে এমন শিক্ষক কারা পেয়েছেন?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৭
On teachers day Trina Saha , Saheb Bhattacharya, Sreemoyee Chattoraj shared how they have got some life lessons

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরোনোর পরে অনেকের কাছেই আরও যেন গভীর অর্থ বয়ে আনে শিক্ষক দিবস। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান থেকে যায় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। জীবনে চলার পথেও কিছু মানুষ বা কিছু ঘটনা শিক্ষা দিয়ে যায় অনেককে। ভাল বা খারাপ— দু’রকম শিক্ষাই হতে পারে। আবার কখনও জীবনই হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় শিক্ষক। টলিপাড়ার জীবনে এমন শিক্ষক কারা পেয়েছেন?

Advertisement

জীবনে বহু মানুষের থেকে বহু কিছু শিখেছেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। কিছু ক্ষেত্রে ঠেকে শিখেছেন। তবে তাঁদের শিক্ষকের মতো মনে করেন না তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষায় নিজে আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু কখনও কোনও ঘটনায় নিজেকে বদলে ফেলেননি। শ্রীময়ীর কথায়, “খারাপ কোনও শিক্ষা জীবনে পাওয়ার পরেও নিজেকে বদলে ফেলিনি। অনেকে এই ভুলটা করে থাকেন।” উদাহরণ হিসেবে শ্রীময়ী বলেছেন, “প্রেম বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা হলে, সেটাকেই বড় শিক্ষা মনে করে নিলে ভুল হবে। আমি যেমন সব সময়ে ভেবেছি, ভালবাসা বিষয়টাই খুব সুন্দর। মানুষটা খুব খারাপ ছিল। তাই পরের মানুষকেও একই ভাবে ভালবাসব। এটাই আমার জেদ।”

কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশ্যে আনার পরে কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন শ্রীময়ী। সেই কটাক্ষ আজও ধাওয়া করে বেড়ায় তাঁকে। অভিনেত্রী বলেন, “বহু কাদা ছোড়াছুড়ি হয়েছে। আমি কিন্তু সরে আসিনি। আমি যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারি, পারব। এই ধাক্কাগুলোই আমার সাহস বাড়িয়েছে। পিছিয়ে আসিনি বলেই এত সুন্দর করে সংসার করতে পারছি।” বাস্তবে শিক্ষাঙ্গনের বাইরে নিজের মা ও ঠাকুমাকে সবচেয়ে বড় শিক্ষিকা মনে করেন শ্রীময়ী। তার পর হাসতে হাসতে নিজেই বলেন, “এখন আমার সবচেয়ে বড় শিক্ষিকা হল কৃষভি। প্রতিদিন শেখাচ্ছে, মাতৃত্ব কেমন। এ ছাড়া কাঞ্চন ও খরাজদা আমার কর্মজীবনের শিক্ষক।”

তৃণা সাহার জীবনে সবচেয়ে বড় শিক্ষক তিন জন। অভিনেত্রী জানান, প্রথম শিক্ষা সবাই নিজের মায়ের থেকেই পায়। তাঁর ক্ষেত্রেও তাই। তবে আরও ভাল শিক্ষা দিয়ে যায় শত্রুরা। এ ছাড়া, জীবনকেও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক বলে মনে করেন তিনি। তৃণা বলেন, “জীবনের চেয়ে বড় শিক্ষক আর কে আছে! ভাল খারাপ সবটাই শিখিয়ে নেয়।”

কেউ ঠেকে শেখে। কেউ আবার ঠকেও শেখে। তৃণাও মনে করেন, কঠিন সময়টাও জীবনে বড় শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে। অভিনেত্রীর কথায়, “জীবনে আমরা অনেক সময়ে বিশ্বাস করে ঠকে যাই। তার পরে আবার হয়তো বিশ্বাস করি। কিন্তু কঠিন সময়গুলো সবচেয়ে ভাল বুঝিয়ে দেয়, কে সত্যিই বন্ধু। কে ভাল চায়, কে খারাপ চায়। টাকা উড়িয়ে পার্টি করার সময়ে অনেককে পাওয়া যায় পাশে। কিন্তু দুঃসময়ে, মন খারাপের সময়ে কেউ যদি পাশে থাকে, সে-ই তো বন্ধু! হাতে কাজ যখন থাকে না, তখনও যারা পাশে থাকে, ওরাই আসল বন্ধু।”

কাছের বন্ধুরা ভুল হলে বাধা দেয়, মুখের উপর বলে। কিন্তু শত্রুরা সেই সময়ে কিছু বলে না। তৃণার কথায়, “শত্রুরাও বড় শিক্ষক। ওরা আমাদের ক্ষতি হচ্ছে জেনেও কোনও বাধা দিতে আসবে না। এর চেয়ে বড় শিক্ষা আর কী!”

জীবনকে বড় শিক্ষক বলে মনে করেন সাহেব ভট্টাচার্যও। প্রথমেই অভিনেতা ছোটবেলায় পড়া সুনির্মল বসুর লেখা একটি কবিতার পংক্তি উল্লেখ করেন— ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র, নতুন ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র।’ সাহেব বলেন, “এই কথাটা আমি সবসময় মনে রাখি। গোটা বিশ্ব সত্যিই পাঠশালার মতো। প্রতিনিয়ত নানা বিষয় শেখাচ্ছে। একজন অভিনেতা হিসেবে ভাল পর্যবেক্ষক বা ভাল শিক্ষক হতে হবে। শিক্ষাটা গ্রহণ করতে জানতে হবে।”

জীবনে নিজের বাবা ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য ও আর এক ফুটবলার সুনীল ছেত্রীকে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা বলে মানেন সাহেব। এর মধ্যেই ছোটবেলার একটি বিপদের কথা মনে করেন অভিনেতা। তিনি বলেন, “বাজি পোড়াতে গিয়ে আমরা বন্ধুরা বড় বিপদে পড়েছিলাম। অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মায়ের হাতে মার খেয়েছিলাম। সেই দিন বুঝেছিলাম, সত্যিই আগুন নিয়ে খেলতে নেই।”

Advertisement
আরও পড়ুন