বারংবার মৃত্যুকামনায় আঘাত পেয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী? ছবি: ফেসবুক।
ভাগ করে নেওয়া ভিডিয়ো শুরুই হয়েছে জীবনমুখী বার্তা দিয়ে। “মৃত্যুর মুখ থেকে বারংবার ফিরে মন্দ লাগছে না।” সেই ভিডিয়োবার্তার শেষেই অন্য সুর! “এ বার আপনারা মৃত্যুঘোষণা করলেই কথা দিচ্ছি, মরে যাওয়ার চেষ্টা করব।”
‘জীবনমুখী’ গায়কের কণ্ঠে, প্রকাশ্যে এ ভাবে মরণের সুর এই প্রথম! সদ্য হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন তিনি। হার্টে দুটো স্টেন্ট বসেছে। নচিকেতা কি ভয় পেয়েছেন?
আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। প্রশ্ন করতেই চেনা ভঙ্গিতে অট্টহাসি। বলেছেন, “কোনও সমস্যা নেই।” চেনা গানের ছন্দ তাঁর কথায়, “এই বেশ ভাল আছি।” জানিয়েছেন, সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই হয়তো মঞ্চানুষ্ঠানে ফিরবেন। হাসির দাপটে সব অস্বীকার করলেও অনুরাগীদের মত, তাঁর ভিডিয়োবার্তায় যেন শোকের ছায়া। সে বিষয়ে মুখে কুলুপ গায়কের। তবে ঘনিষ্ঠসূত্রে খবর, স্টেন্ট বসানোর খবর প্রকাশ্যে আসতেই একদল নেটাগরিক সমাজমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুকামনা করেছেন! যা নাকি আঘাত করেছে বছর একষট্টির ‘আগুনপাখি’কে।
এই মত থেকে কি সরে গেলেন নচিকেতা চক্রবর্তী? ছবি: ফেসবুক।
গায়ক না চাইলেও ভিডিয়োবার্তার শেষে কি সেই অভিমান ধ্বনিত? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের থেকে এই প্রশ্নের জবাব মিলেছে। নচিকেতার সাম্প্রতিক অসুস্থতার সময়ে যে সব চিকিৎসক তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন, তিনি সেই দলের অন্যতম। জবাব দিতে গিয়ে তাঁর কথাতেও বেদনার ছাপ স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “গায়ক বাংলা গানের দুনিয়াকে দু’হাত ভরে দিলেন। বদলে কী পেলেন? তাঁর অসুস্থতার খবরে খুশি নেটাগরিকের একটি দল। নচিকেতা চক্রবর্তীর মৃত্যুকামনা করতেও বাধছে না তাদের! দিনের শেষে একজন খ্যাতনামীও রক্তমাংসের মানুষ। তাঁরও তো অভিমান হয়!”
অভিমানী নচিকেতা চক্রবর্তী! ছবি: ফেসবুক।
পর ক্ষণেই ওই চিকিৎসকের দাবি, গায়ক যদিও এ সব গায়ে মাখেন না। তিনি হেসে উড়িয়ে দেন। ঠিক যেমন নচিকেতা উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর অতিসাম্প্রতিক বার্তায়। সাত বছর বয়স থেকে তিনি ভাগ্যগুণে মৃত্যুকে ফেরাতে পেরেছেন। কখনও বিপ্লবী শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে অনুকরণ করতে গিয়ে। কখনও নানা প্রতিবাদকাণ্ডে। আবার কখনও গুরুতর অসুস্থতার কারণে। এ বারেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হয়েও ফের গতি পেয়েছে চিকিৎসাশাস্ত্রের সৌজন্যে। এর পরেই সপাট দাবি নচিকেতার, “এটা আমি লিখছি যাতে লোকে পড়ে। ভাল লাগলে ভালটা নিজের কাছে রাখবেন। ভাল না লাগলে ভুলে যান, কমেন্ট করবেন না। কারণ, আমি আপনার কমেন্টের আশায় এটা লিখছি না।” এ-ও জানান, যা আয়ু তার থেকে বেশি বার তাঁকে মারা হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে।
৬ ডিসেম্বর চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন নিয়মমাফিক পরামর্শ নিতে। তখনই ধরা পড়ে, তাঁর হার্টে ব্লকেজ। হৃদস্পন্দন অনিয়মিত। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকেরা স্টেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। গায়কের পরিবারের অনুমতি নিয়ে সুস্থ করে তোলেন তাঁকে। আনন্দবাজার ডট কম-কে এ কথা জানিয়েছিলেন নচিকেতা-কন্যা ধানসিড়ি। ছ’দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে বাড়ি ফেরেন গায়ক। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসক সেই সময় জানিয়েছিলেন, পরিমিত খাওয়াদাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রামের বাইরে বড় কোনও নিয়ম মানতে হবে না নচিকেতাকে।