Rituparna Sengupta

‘কারও ক্ষতি করে বা কাউকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায় না’, হঠাৎ কেন এই উপলব্ধি ঋতুপর্ণার?

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে আরও একটি ছবি— ‘অন্নপূর্ণা’। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব আগে গিয়েছিল ঋতুপর্ণার কাছে। অভিনেত্রী বলেন, “আমি করতে পারব না, আগেই বলেছিলাম। আমিই বলেছিলাম, তোমরা অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে নাও।”

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:০৯
Tollywood actress Rituparna Sengupta shares her feelings as the producer of film Puratan

প্রযোজক হিসেবে নিজের উপলব্ধি জানালেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।

বড় পর্দায় অভিনেত্রী হিসেবে সফর শুরু ‘শ্বেত পাথরের থালা’ ছবিতে। তার পর থেকে ৩০ বছর টলিপাড়ায় কাজ করে চলেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এর মধ্যেই প্রযোজক হিসেবেও পথচলা শুরু হয়েছে তাঁর। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘পুরাতন’। এই ছবিতে তিনি অভিনেত্রী ও প্রযোজকও। এই ছবি বক্স অফিস ও দর্শকমহলে সাড়া ফেলেছে। ছবিতে শর্মিলা ঠাকুরের কন্যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা। প্রযোজক হিসেবে তাঁর পর্যবক্ষেণ কী? মুম্বই থেকে ফোনে আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে তা ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী।

Advertisement

তথাকথিত বড় প্রযোজনা সংস্থা নেই। পরিচালক সুমন ঘোষও দীর্ঘ দিন টানা পরিচালনা করছেন, এমন নয়। তা-ও ‘পুরাতন’ ছবি দর্শক ফেরাবে না। এই বিশ্বাস ছিল ঋতুপর্ণার। বললেন, “প্রথম থেকেই আমি একটা কথা বলেছিলাম। এই ছবি শুধু আমার একার নয়। এটা আমার তরফ থেকে বাংলা ছবির জগৎকে দেওয়া একটা উপহার। শুধু আমার বা প্রযোজনা সংস্থা নয়। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির কাছেই এই ছবি বড় পাওয়া। শর্মিলা ঠাকুর আবার বাংলায় ফিরলেন এই ছবির মাধ্যমে। এই ছবির মাধ্যমে সুমনও নিজের পরিসর বড় করতে পেরেছেন। সাধারণত প্রযোজনা সংস্থা নিজেদেরই প্রচারে রাখে। কিন্তু আমি পরিচালককে সেই জায়গা দিয়েছি।”

কলকাতায় গত সাত দিনে প্রেক্ষাগৃহগুলি প্রায় ভর্তি থেকেছে। বর্তমানে ছবির প্রচার নিয়ে মুম্বই শহরে ব্যস্ত তিনি। এই সাফল্য নিয়েও গভীর উপলব্ধি রয়েছে তাঁর। ঋতুপর্ণার কথায়, “আমি সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে ভালবাসি। আমার ৩০ বছরের কেরিয়ারে অনেকে অনেক কিছু বলেছেন— কোনটা করা উচিত, কোনটা উচিত নয়। তবে আমি আমার লক্ষ্য থেকে কখনও সরে আসিনি। বক্স অফিসের সাফল্য তো রয়েছেই। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, দর্শক ‘পুরাতন’-কে ফেরাবে না।”

ছবি মুক্তির পরে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখতে পৌঁছে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছবি দেখার পরে বহু দর্শকের চোখে জল দেখেছেন অভিনেত্রী। আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন অনেকেই। অভিনেত্রী ও প্রযোজক হিসেবে এটাই তাঁর কাছে বড় প্রাপ্তি বলে জানান ঋতুপর্ণা। “তবে এই প্রথম নয়। এর আগে ‘আলো’ ছবির সময়ও এমন প্রতিক্রিয়া ছিল দর্শকের। ‘আলো’র মতো আর একটা ছবির কথা আজও অনেকেই বলেন।” স্মৃতিচারণ করেন ঋতুপর্ণা।

‘আলো’ ছবির প্রযোজনার পরে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘ইচ্ছে’ ছবিতে পরিবেশক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। সেই কথা মনে করে বলেন, “‘ইচ্ছে’ ছবিই কিন্তু নন্দিতা-শিবপ্রসাদ জুটির কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।”

এ ছাড়াও ‘ভালবাসার বাড়ি’ ও ‘আহারে’ ছবিতেও সহ-প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। এক দিকে অভিনয়, আর এক দিকে প্রযোজনা। ঋতুপর্ণার কথায়, “আসলে, আমি কখনওই অন্যের ক্ষতি করে, বা অন্যকে ছোট করে বড় হওয়ার চেষ্টা করিনি। অন্যকে সরিয়ে নিজে কাজ করতে চাইনি। বরং আমি কারও জন্য কিছু করতে পারলে, ভাল বোধ করি। আমি জোট বেঁধে কাজ করায় বিশ্বাসী।”

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে আরও একটি ছবি— ‘অন্নপূর্ণা’। ছবির প্রস্তাব আগে গিয়েছিল ঋতুপর্ণার কাছে। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব আগে গিয়েছিল ঋতুপর্ণার কাছে। অভিনেত্রী বলেন, “আমি বলেছিলাম কাজটা করতে পারব না। আমিই বলেছিলাম, তোমরা অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে নাও।”

ঋতুপর্ণা জানান, শুধু অনন্যাই নন। বহু ছবিতেই অভিনয়ের জন্য অন্যদের নামের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এটাই তাঁর স্বাভাবিক প্রবণতা। দীর্ঘ দিন কাজ করার সুবাদে, তিনি কোনও একটা জায়গায় পৌঁছোলেও, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আসা নতুন মুখকে তিনি কোনও দিনই ছোট করে দেখেননি। এ ভাবেই তিনি কাজ করেছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন