প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মোবাইল ফোনে আসক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই ছোট-বড় নির্বিশেষে স্ক্রিন টাইম নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। রাতে ভাল ঘুমের জন্য ডিজিটাল পর্দা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। আবার সূর্যাস্তের পর বিশেষ করে ঘুমোতে যাওয়ার আগে আলোর প্রভাবে হার্টের ক্ষতির ঝুঁকি অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমনই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘জামা নেনওয়ার্ক ওপেন’ জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। ঘুমের আগে আলোর উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা করেছে অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক। তাঁরা ইংল্যাল্ডের প্রায় ৮৯ হাজার রোগীর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেছেন। ১০ বছরের সময়কালে রোগীদের হার্টের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। আলোর উপস্থিতি একটি বিশেষ স্মার্ট ট্র্যাকারের সাহায্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, রাতে যাঁরা বেশি আলোর সংস্পর্শে থাকেন, তাঁদের নানা ধরনের হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে গবেষকেরা জানতে পেরেছেন, হার্ট ফেলিওরের সমস্যা ৪৫ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ থেকে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত। আলোর উৎস সম্পর্কে গবেষকেরা কোনও তথ্য প্রকাশ করেননি। তাঁরা শুধু আলোর তীব্রতা নিয়ে কাজ করেছেন। গবেষক ড্যানিয়েল উইনড্রেড বলেন, ‘‘এটি প্রথম বৃহৎ আকারের গবেষণা, যা দেখিয়েছে যে শুধুমাত্র রাতে আলোর সংস্পর্শে থাকা হৃদরোগের অন্যতম এবং শক্তিশালী কারণ হতে পারে।’’
রাতে আলোয় বেশি ক্ষণ তাকালে দেহের ‘সির্কাডিয়ান রিদম’ (ঘুমোতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার জন্য দেহের নিজস্ব ‘ঘড়ি’) নষ্ট হয়। তার ফলে হৃৎপিণ্ডের উপরেও ক্রমাগত চাপ তৈরি হতে থাকে। কারণ মস্তিষ্ক আলোর সংস্পর্শে রাতকে দিন বলেই মনে করে। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়।
ভাল ঘুমের জন্য গবেষকেরা রাতে শোয়ার ঘরে আলো না জ্বালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বাইরে থেকে যাতে আলো ভিতরে প্রবেশ না করে তার জন্য জানলায় মোটা কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। অন্ধকার ঘরে দ্রুত ঘুম আসে, দাবি তাঁদের।