Blood Group and Stroke

কোন রক্তের গ্রুপে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি? আপনার সেই গ্রুপ নয় তো! সতর্ক হবেন কী ভাবে?

রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ব্রেন স্ট্রোকের কী সম্পর্ক? সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, রক্তের গ্রুপের সঙ্গে স্ট্রোক হওয়ার সম্পর্ক আছে। সেই গ্রুপের রক্ত যাঁদের আছে, তাঁদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১১:৩১
A Recent study reveals that the people with this type of blood group face higher risk of early-onset stroke

রক্তের গ্রুপ কী হলে, ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকবে? ছবি: ফ্রিপিক।

রক্তের গ্রুপের সঙ্গে স্ট্রোকের কী সম্পর্ক— এমন মনে হতেই পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সেই গ্রুপের রক্ত শরীরে বইলে, কম বয়সে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। প্রতি বছর বিশ্বে দেড় কোটির বেশির মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা তেমনই বলছে। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ লাখ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর শরীর পক্ষাঘাতে পঙ্গু হয়ে যায়। স্ট্রোক আচমকাই আসে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিপদ ঘটে যায়। স্ট্রোক কী ভাবে প্রতিরোধ করা যাবে, সে নিয়ে গবেষণা চলছেই। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা জানাচ্ছে, রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ব্রেন স্ট্রোকের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার পরে, সেটিই স্ট্রোক প্রতিরোধের হাতিয়ার হতে পারে। কিন্তু কী ভাবে?

Advertisement

আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকেরা খুঁজে বার করেছেন রক্তের গ্রুপ যদি ‘এ’ হয়, তা হলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি হবে, ‘ও’ গ্রুপ আবার সে দিক থেকে অনেক নিরাপদ। এই গ্রুপের রক্ত হলে স্ট্রোকের ঝুঁকি তেমন থাকবে না। বাকি দুই রক্তের গ্রুপের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকলেও ‘এ’ গ্রুপের মতো নয়। ‘এবি’ গ্রুপের ক্ষেত্রে আবার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যাওয়া বা স্মৃতিনাশের মতো রোগ ও টিউবারকিউলোসিসের ঝুঁকি বেশি।

কেন হয় স্ট্রোক?

উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া-সহ নানা রিস্ক ফ্যাক্টর মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ আটকে দেয়। তখন রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে এবং ধমনীতে রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি করে। ফলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হতে হতে অকেজো হয়ে যায়। এই ব্যাপারটাই স্ট্রোক। সাধারণত, দু’ধরনের স্ট্রোক হয়— ইস্কিমিক ও হেমারেজিক। ইস্কিমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধা পেয়ে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আর হেমারেজিকে রক্তজালিকা গুলি স্ফীত হয়ে ছিঁড়ে যেতে থাকে। ফলে মস্তিষ্কের ভিতর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

মেরিল্যান্ডের গবেষক স্টিভেন জে কিটনার ও তাঁর টিমের তরফে জানানো হয়েছে, ৬ লক্ষের বেশি মানুষের উপর প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষাটি করা হয়েছে। ১৭ হাজার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, যাঁদের রক্তের গ্রুপ ‘এ’ তাঁদের ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি ১৬ শতাংশের বেশি এবং যাঁদের ‘ও’ গ্রুপের রক্ত, তাঁদের ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কম।

বাঁচার উপায় কী?

তবে রক্তের গ্রুপ যা-ই হোক না কেন, স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে অতি অবশ্যই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে শর্করার মাত্রা যাতে না বাড়ে, তা দেখতে হবে।

ওজন স্বাভাবিক রাখা আবশ্যক, রোজ নিয়ম করে অন্তত আঁধ ঘণ্টা হাঁটা বা শরীরচর্চা করতেই হবে।

পরিবারে ব্রেন স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলে বয়স ত্রিশ পেরোনোর পরেই সুগার, প্রেশার, ও কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়ে রাখতে হবে।

ধূমপান, মদ্যপান কমিয়ে ফেলতে পারলেই ভাল, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

কয়েক মিনিটের জন্য জিভ অসাড় হওয়া, কথা বলতে না পারা, হাত বা পা অসাড় হয়ে যাওয়া অথবা চোখে অন্ধকার দেখার মতো ঘটনাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘ট্র্যানজ়িয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক’ বা ‘টিআইএ’। একে 'মিনি স্ট্রোক'ও বলা হয়। এমন হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন