Sugar Alternative Allulose

চিনির পুষ্টিকর বিকল্প, দেখতেও এক, স্বাদে মিষ্টি কিন্তু ক্ষতিকর নয়, কী সেটি? কী ভাবে পাওয়া যায়?

চিনির মতো দেখতে, তবে চিনি নয়। কৃত্রিম চিনিও নয়। এটিও প্রাকৃতিক উপাদান যা এখন তৈরি হচ্ছে বাণিজ্যিক ভাবেও। চিনির এই বিকল্প নিয়েই হচ্ছে চর্চা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৫
Rare Sugar Alternative Allulose doesnt spike blood sugar level

চিনির মতো দেখতে কিন্তু চিনি নয়, কী সেটি? ছবি: ফ্রিপিক।

চিনির বিকল্প কী হতে পারে, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন গবেষক থেকে চিকিৎসকেরা। চিনি শরীরের জন্য বিষ, তাই এর বিকল্প হিসেবে কৃত্রিম চিনি খান অনেকে। সেটিও সমান ক্ষতিকর বলেই জানা গিয়েছে একাধিক গবেষণায়। কাজেই চিনি বা কৃত্রিম চিনি বাদ দিয়ে মধু, গুড় বা মিষ্টি সিরাপে ভরসা রাখছেন অনেকে। তবে তাতেও সুক্রোজ়ের মাত্রা বেশি। তা হলে উপায়?

Advertisement

এমন এক রকম চিনি আছে, যা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না। ইনসুলিন হরমোনের হেরফেরও হবে না। গবেষকেরা এখন এই চিনিকেই সেরা বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। এর নাম অ্যালুলোজ়। চিনির মতোই, কিন্তু ঠিক চিনি নয়। স্বাদেও মিষ্টি, তবে ডায়াবিটিসের কারণ হয়ে উঠবে না। দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রেও অ্যালুলোজ় নিয়ে লেখা হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, চিনির বিকল্প এই উপাদানটি ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমায়। বহু জনের উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, চিনির বদলে অ্যালুলোজ় খেলে ওজন কমে, এটি ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স অর্থাৎ, ইনসুলিন হরমোনের তারতম্য ঘটার আশঙ্কা থাকে না।

কী এই অ্যালুলোজ়?

এটি এক ধরনের মনোস্যাকারাইড। অর্থাৎ, এটি চিনির একটি সরলতম রূপ, যেমন গ্লুকোজ় বা ফ্রুক্টোজ়। কিন্তু এর রাসায়নিক গঠন গ্লুকোজ় ও ফ্রুক্টোজ়ের থেকে কিছুটা আলাদা। তাই শরীরে এর কার্যকারিতাও অন্য রকম। তবে এর গঠন চিনির মতোই।

প্রতি গ্রাম অ্যালুলোজ়ে ০.২ থেকে ০.৪ ক্যালোরি থাকে। সাধারণ চিনির থেকে এর ক্যালোরির মাত্রা দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র। খুব কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হওয়ায়, এটি রক্তে শর্করা বাড়ায় না। বরং অ্যালুলোজ মেশানো খবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে না।

ওজন কমাতে উপযোগী অ্যালুলোজ়। শরীরে জমা বাড়তি মেদ ঝরাতে পারে চিনির এই বিকল্প উপাদানটি। শুধু তা-ই নয়, শরীরে প্রদাহের মাত্রাও কমাতে পারে। চিনি বেশি খেলে যেমন লিভার, কিডনির ক্ষতি হয়, অ্যালুলোজ় খেলে তা হয় না। বদলে শরীরে শক্তি তৈরি হয় এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়ে যায়। বেশি মিষ্টি খেলে যেমন দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়, অ্যালুলোজ খেলে তা হয় না।

অ্যালুলোজ় পাবেন কী ভাবে?

বেকারির খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবারে এখন চিনির বদলে অ্যালুলোজ় মেশানোর চল হয়েছে। অ্যালুলোজ় আলাদা করে তৈরি করা হচ্ছে, তা বিক্রিও হচ্ছে বাজারে। তবে প্রাকৃতিক ভাবে অ্যালুলোজ় পেতে হলে খেতে হবে কিশমিশ, শুকনো ডুমুর, কাঁঠাল বীজ, গুড়। ম্যাপেল সিরাপে অল্প পরিমাণে অ্যালুলোজ থাকে। চিনির প্রক্রিয়াকরণের সময়ে অ্যালুলোজ় তৈরি হয়, এর ঘনত্ব চিনির থেকে কম। ফ্রুক্টোজ বা কর্ন সিরাপ থেকেও অ্যালুলোজ় তৈরি করা হয়, সে ক্ষেত্রে ফ্রুক্টোজের রাসায়নিক গঠন বদলে দেওয়া হয়।

অ্যালুলোজ় যতই পুষ্টিকর হোক না কেন, খেয়াল রাখতে হবে, সেটিও বেশি মাত্রায় খাওয়া চলবে না। স্বাদে মিষ্টি ভেবে অত্যধিক পরিমাণে অ্যালুলোজ় খেতে শুরু করলে পেটের সমস্যা দেখা দেবে। ঘন ঘন ডায়েরিয়াতেও ভুগতে পারেন। তাই অ্যালুলোজ় খেতে হলে কী পরিমাণে খাবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন