Viruses To fight Bacteria

ব্যাক্টিরিয়াকে জব্দ করবে ভাইরাস! অ্যান্টিবায়োটিকের বদলে শতাব্দীপ্রাচীন ভাইরাস থেরাপি নিয়ে গবেষণা

ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নামবে ভাইরাস। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করলেও চিন্তা নেই, অসুখ সারাতে আসছে ‘ব্যাক্টেরিয়োফাজ’।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৫৩
As antibiotic resistance rises, researchers are revisiting century old Virus therapy

অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প ভাইরাস-থেরাপি দিয়েই সারবে দুরারোগ্য রোগ। ছবি: এআই।

অ্যান্টিবায়োটিকেও মরে না, এমন সব ব্যাক্টিরিয়াই যত নষ্টের মূলে। অ্য়ান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই সংক্রামক অসুখবিসুখ ডালপালা মেলছে। ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছে না কিছুই। ফলে মাথায় হাত পড়েছে চিকিৎসকদের। কোন ওষুধে এমন দাপুটে সুপারবাগদের নাশ করা যাবে, সে নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়েই। তার মধ্যেই আশার আলো দেখেছেন জেরুজ়ালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। জাঁদরেল ব্যাক্টিরিয়াকে দমন করতে শতাব্দীপ্রাচীন ভাইরাস থেরাপিকে ফের সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা শরু হয়েছে।

Advertisement

ওষুধে ভয় না পেলেও, ওই ভাইরাসকে বেশ সমঝে চলবে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সুপারবাগেরা। এমনটাই দাবি গবেষকদের। ১০০ বছর আগে অ্যান্টিবায়োটিকের নামও যখন জানা ছিল না, তখন ওই ভাইরাসই ছিল ভরসা। সংক্রামক অসুখবিসুখ সারাতে ওই ভাইরাসই নাকি কাজে আসত। অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে, তাদের আর কেউ মনে রাখেনি। আর এখন অ্যান্টিবায়োটিক যখন বিফলে যাচ্ছে, তখন ফের সেই ভাইরাসকেই ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে। ‘সেল রিপোর্ট’ জার্নালে সেই গবেষণার খবরও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জানানো হয়েছে, ব্যাক্টিরিয়া মারতে এখন অন্যতম বড় অস্ত্র হতে চলেছে ‘ব্যাক্টেরিয়োফাজ’ বা ‘ফাজ ভাইরাস’। অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে এই ব্যাক্টেরিয়োফাজ রোগীর শরীরে ঢুকিয়ে দেখা গিয়েছে, যে অসুখ ওষুধেও সারেনি তা দ্রুত সারিয়ে দিয়েছে ভাইরাস। শুধু তা-ই নয়, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ আর এক বারের জন্যও ফিরে আসেনি রোগীর শরীরে।

ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নামতে চলেছে ভাইরাস!

ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নামতে চলেছে ভাইরাস! ছবি: এআই।

এমন চিকিৎসাপদ্ধতির কথা পেনিসিলিন আবিষ্কারের সময়েই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পেনিসিলিন নিয়ে আগ্রহের আতিশয্যে এই ধরনের গবেষণা ধামাচাপা পড়ে যায়। এক দশক আগে ফের শুরু হয় এই গবেষণা। তবে কিছু সমস্যাও দেখা দেয়। দেখা যায়, অ্যান্টিবায়োটিকের অতি প্রয়োগে ব্যাক্টেরিয়া যেমন অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, তেমনই তারা হয়ে উঠতে পারে ব্যাক্টেরিয়োফাজ-প্রতিরোধীও। তবে যদি ভাইরাসের জিনে সূক্ষ্ম অদলবদল ঘটানো যায়, তা হলে তাদের শক্তি বাড়বে এবং ব্যাক্টেরিয়া আর এঁটে উঠতে পারবে না।

জিনের রদবদল ঘটানোর ব্যাপারে ব্যাক্টেরিয়ার থেকে অনেক বেশি দক্ষ ভাইরাস। খুব তাড়াতাড়ি তারা নিজের জিনের বিন্যাসের অদলবদল ঘটাতে পারে। তাই কোনও ব্যাক্টেরিয়া যদি কখনও ব্যাক্টেরিয়োফাজ-প্রতিরোধী হয়েও ওঠে সেটা খুবই সাময়িক। নিজের জিনে বদল ঘটিয়ে ব্যাক্টেরিয়োফাজের মতো ভাইরাস কিছু দিনের মধ্যেই ফের ব্যাক্টেরিয়া-বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারবে। অ্যান্টিবায়োটিকে এই বদলটা তাড়াতাড়ি আনা সম্ভব নয়। তাই ভাইরাস থেরাপিকেই নতুন ভাবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে জোরকদমে।

Advertisement
আরও পড়ুন