Pre-Pregnancy Medical Tests

মা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন, সন্তানের সুস্থতার জন্য গর্ভধারণের আগে কী কী পরীক্ষা করানো জরুরি?

প্রথম সন্তান আসার আগ কিছু ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন হয়, পোশাকি ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং’। এখন অনেকেই বেশি বয়সে সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাই গর্ভধারণের আগে কিছু মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১৮
Before planning a pregnancy, you should have several tests to ensure your reproductive health

নিজের ও সন্তানের সুস্থতার জন্য মা হওয়ার আগে কী কী পরীক্ষা করাবেন? ফাইল চিত্র।

পড়াশোনা, চাকরি, বিয়ে, সবই যেমন পরিকল্পনা করে এগিয়েছেন, তেমনই মা হওয়ার কথা ভাবলে তার জন্যও আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। পোশাকি ভাষায় এর নাম ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং’। সন্তান আসার আগে অত্যন্ত জরুরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। এখন অনেকেই বেশি বয়সে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সাধারণ জৈবিক প্রক্রিয়ায় মা হতে না পারলে, ‘ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন’ বা আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান ধারণের চেষ্টাও করেন। সব ক্ষেত্রেই জটিলতা আসতে পারে। এর জেরে সন্তানের জন্মগত সমস্যা-সহ আরও নানা বিপত্তি হতে পারে। তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি।

Advertisement

এই বিষয়ে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের মত, মা হওয়ার আগে যে পরীক্ষাগুলি করে নিতে হয়, তার মধ্যেই একটি এই ‘এএমএইচ টেস্ট’। এখন বেশি বয়সে সন্তান চাইছেন অনেকেই। তাই জরায়ু সন্তানধারণের জন্য কতটা প্রস্তুত, কী পরিমাণ ডিম্বাণু তৈরি হচ্ছে, গর্ভে সন্তান এলে তা ধারণ করার মতো শক্তি জরায়ুর আছে কি না, সে সবই জানা যাবে রক্তের এই পরীক্ষায়। আইভিএফ যদি কেউ করাতে চান, তার আগেও এই পরীক্ষা করে নিতেই হবে।

কী কী পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি?

মায়ের যদি হাইপোথাইরয়েড থাকে, তা হলে হরমোনের গোলমালের কারণে শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভধারণের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া খুব জরুরি।

রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। এই পরীক্ষায় দেখে নেওয়া হয় হবু মা থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না। যদি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, তা হলে বাবাকেও পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। স্বামী ও স্ত্রী, দু’জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

আরও একটি পরীক্ষা খুবই জরুরি, তা হল রুবেলা আইজিজি টেস্ট। এতে বোঝা যাবে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা। মায়ের শরীরে কোনও সংক্রমণ থাকলে তার চিকিৎসা আগে হবে। চিকিৎসক রুবেলার প্রতিষেধক নেওয়ার পরামর্শ দেবেন।

‘এএমএইচ টেস্ট’ এখনকার সময়ে প্রায় সব মেয়েরই করিয়ে নেওয়া উচিত। জরায়ুতে সিস্ট হচ্ছে কি না, তা ধরা যাবে এই পরীক্ষায়। এখন অনেক মহিলাই ‘ফাইব্রয়েড’, ‘এন্ডোমেট্রিয়োসিস’ বা ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম’ (পিসিওএস)-এ ভুগছেন। কোন রোগ বাসা বেঁধে আছে তা আগে থেকে ধরা পড়লে চিকিৎসাও দ্রুত হবে। ফলে যেমন বন্ধাত্বের ঝুঁকি কমবে, তেমনই গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে না।

বয়স ৩৫ পেরিয়ে গেলে সন্তানধারণের আগে রক্তের এনআইপিটি টেস্ট করিয়ে নেওয়া ভাল। তাতে বলে দেওয়া যায়, শিশুর ডাউন সিন্ড্রোম হতে পারে কি না। তা ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের পরীক্ষাও জরুরি।

হবু মা যদি অতীতে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তা হলে সন্তানধারণের পরিকল্পনা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ আগে নিতে হবে। কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপি চলাকালীন গর্ভধারণ বিপজ্জনক হতে পারে। তবে যদি ক্যানসারের চিকিৎসা আগেই হয়ে থাকে, তা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এগোনো জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন