Lychee Toxins

লিচু থেকে হতে পারে বিষক্রিয়া, এমনকি মৃত্যুও! কেনার আগে কী দেখে নেবেন?

লিচুর যেমন অনেক গুণ, তেমনই খারাপ দিকও রয়েছে। লিচুর টক্সিন মস্তিষ্কে চলে গেলে জ্বর, খিঁচুনি, মস্তিষ্কে প্রদাহ, পেটের সংক্রমণ হতে পারে। তাই লিচু কী ভাবে খাবেন ও কখন খাবেন, তা জেনে নেওয়া ভাল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ১৩:৫৬
Brain disease linked to lychee toxins, here what you should know to avoid risk

লিচু কেনার সময়ে কী কী পরখ করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

বাজারে লিচু উঠছে। গরমের দিনে বাঙালি আম-লিচু খাবেই। তবে লিচু কিনে নিয়ে যাওয়ার আগে ভাল করে পরখ করে নেওয়া জরুরি। লিচুর মধ্যে এমন সব বিষাক্ত পদার্থ থাকে, যা শরীরে গেলে মৃত্যু অবধি হতে পারে। ২০১১ সালে বিহারে লিচু থেকে এনসেফেলাইটিসের সংক্রমণ ঘটে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলেন, লিচুর টক্সিন মস্তিষ্কে চলে গেলে জ্বর, খিঁচুনি, পেটের সংক্রমণ হতে পারে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি শিশু ও বয়স্কদের। তাই সাবধান হওয়া জরুরি।

Advertisement

লিচুর ভাল-মন্দ

লিচু এমনিতে খুব উপকারী ফল। এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজ, যা হাড়ের গঠন মজবুত করে। লিচুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের জন্য ভাল। এ ছাড়াও লিচুর মধ্যে রয়েছে অলিগোনল, যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করতে সাহায্য করে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ নাইট্রিক অক্সাইড থাকলে হার্টে রক্ত চলাচল ভাল হয়। রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

লিচুতে ক্যালোরি খুব কম, ফাইবার বেশি। তাই পরিমিত পরিমাণে লিচু খেলে দুম করে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এক কাপ লিচুতে ক্যালোরির পরিমাণ ১২৫। তাই লিচু খেলেও চট করে ওজন বাড়তে পারে না। লিচুতে থাকে ফ্ল্যাভেনল, যা শরীরের প্রদাহ কমায়।

এ তো গেল ভাল দিক। কিন্তু লিচুতে এমন কিছু টক্সিনও থাকে, যার মধ্যে থাকে হাইপোগ্লাইসিন এ ও মিথিলিন সাইক্লোপ্রোপাইল-গ্লাইসিন (এমসিপিজি)। এই দুই রাসায়নিক বেশি পরিমাণে শরীরে গেলে বিষক্রিয়া হতে পারে। দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, লিচু যদি অধিক পরিমাণে খাওয়া হয় ও খালি পেটে খাওয়া হয়, তা হলে ওই দুই রাসায়নিকের প্রভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা কমে যাবে। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দেবে। এর থেকে জ্বর, ঘন ঘন বমি, খিঁচুনি, মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহ শুরু হতে পারে। খাদ্যনালিতে সংক্রমণও হতে পারে। রোগের বাড়াবাড়ি হলে মৃত্যু অবধি হতে পারে।

লিচুর টক্সিন থেকে লিভারের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। যাঁরা লিভারের কোনও জটিল অসুখে আগে থেকেই ভুগছেন, তাঁদের লিচু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।

লিচু কেনার সময়ে কী দেখে নেবেন?

কাঁচা বা আধপাকা, পচন ধরে যাওয়া লিচু কিনলে বিপদ হতে পারে। ঠিকমতো না-পাকা লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন এ-র মাত্রা বেশি থাকে। এর প্রভাবে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। তা ছাড়া লিচুর বীজ ও শাঁসে এমসিপিজি রাসায়নিক থাকে, যা থেকে এনসেফেলাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

কখন ও কী ভাবে খাবেন?

লিচু কখনও খালি পেটে খাবেন না। দিনের বেলায় কিছু খাবার খেয়ে তার পর লিচু খেতে পারেন। রাতের বেলায় লিচু খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। শিশুর যদি অ্যালার্জির ধাত থাকে, অপুষ্টিজনিত রোগ থাকে অথবা কোনও ক্রনিক অসুখ থাকে, তা হলে লিচু না খাওয়ানোই ভাল।

দিনে ৭-৮টির বেশি লিচু খাওয়া ঠিক নয়। ডায়াবিটিস থাকলে ভরা পেটে ৬টি লিচু খাওয়াই যথেষ্ট।

বিকেলের পর আর লিচু খাবেন না।

Advertisement
আরও পড়ুন