Rare Disease Frontotemporal dementia

মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত ব্রুস উইলিস! কথা বলা, হাঁটাচলা সব ভুলে গিয়েছেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা

সত্তরোর্ধ্ব ব্রুস এক সময়ে ‘অ্যাফাসিয়া’ নামে মস্তিষ্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমন শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এখন ধরা পড়েছে, তিনি অতি বিরল স্নায়বিক রোগ ‘ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া’য় আক্রান্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৫:২৮
Bruce Willis’s Frontotemporal dementia diagnosis has put a rare brain disease in the global spotlight

বিরলের মধ্যে বিরলতম রোগে আক্রান্ত ব্রুস উইলিস। কী হয়েছে তাঁর? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

যেমন সুঠাম চেহারা, তেমনই ক্ষুরধার বুদ্ধি। ‘ডাই হার্ড’ খ্যাত ব্রুস উইলিস এক সময়ে ঝড় তুলেছিলেন বহু তরুণীর হৃদয়ে। হলিউডের ‘অ্যাকশন হিরো’ হিসেবে পরিচিত অভিনেতার ঝুলিতে ছিল বিস্তর হিট ছবি। মারকুটে চরিত্রে অভিনয় করা ব্রুস এখন নাকি হাঁটতে-চলতেও ভুলে গিয়েছেন। কথা বলতে পারেন না, স্মৃতি লোপ পেয়েছে, এমনকি পড়তেও সমস্যা হয় তাঁর। সত্তরোর্ধ্ব ব্রুস এক সময়ে ~অ্যাফাসিয়া@ নামে মস্তিষ্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমন শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এখন ধরা পড়েছে, তিনি অতি বিরল স্নায়বিক রোগ ‘ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া’-য় আক্রান্ত।

Advertisement

বিরলতম ব্যাধি ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া কাদের হয়?

স্নায়ুর জটিল রোগ। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজ়অর্ডার’। মস্তিষ্কের সামনের ও দু’পাশের স্নায়ু ক্ষয়ে যেতে থাকে। মূলত, মস্তিষ্কের ওই অংশগুলিই আচার-আচরণ, কথা বলা, ভাষা, বুদ্ধি, বিবেচনাবোধ সবই নিয়ন্ত্রণ করে। তাই সেখানে ক্ষতি হলে, স্বভাব ও আচরণে বড় বদল আসে। রোগী গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না, অন্যের কথা বুঝতেও সমস্যা হয়। সাধারণ ষাট বছর বা তার বেশি বয়সিরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে চল্লিশের পরেও হানা দিতে পারে এই রোগ। দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে এ বছরই প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই রোগটি সম্পর্কে জানা গিয়েছে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, সাধারণ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের থেকে আলাদা ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া। কিন্তু রোগটি নিয়ে তেমন প্রচার না থাকায়, রোগীকে আলাদা করে বুঝতে সমস্যা হয় চিকিৎসকদের। শুধু ভুলে যাওয়া নয়, এই রোগের আরও কিছু লক্ষণ খুবই মারাত্মক হতে পারে।

কেমন লক্ষণ দেখা দেয়?

অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো গোড়াতেই ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় না। বরং রোগের প্রাথমিক লক্ষণই হল রোগীর আচরণে বদল। যিনি শান্তশিষ্ট মানুষ ছিলেন, তিনিই হঠাৎ করে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবেন। পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের সন্দেহের চোখে দেখবেন, তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারেন। কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যাবে, অচেনা কাউকে দেখলেই অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করবেন।

হাঁটাচলা করতে, খাবার খেতে, এমনকি কিছু লিখতে ও পড়তেও সমস্যা হবে রোগীর। যখন-তখন বদলে যাবে মেজাজ, কাছের মানুষকেই ঠিকমতো চিনতে পারবেন না।

ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া কেন হয়, তার কোনও কারণ জানা যায়নি। ধূমপান-মদ্যপান বা যাপনপদ্ধতির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। গবেষকদের অনুমান, মস্তিষ্কে বিশেষ একরকম প্রোটিন টিডিপি-৪৩ যদি জমা হতে থাকে, তা হলে মস্তিষ্কের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্নায়ুর কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে যেতে থাকে। তখনই নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। মস্তিষ্কের প্রতিটি অংশের নিজস্ব কর্মক্ষমতা রয়েছে। তাই যে যে অংশের স্নায়ু ও কোষের ক্ষতি হয়, সেই অংশগুলি অকেজো হতে থাকে। ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া তাই নানা রকম মস্তিষ্কের ব্যাধির সংমিশ্রণ। এই রোগের আওতায় স্মৃতিনাশও হয়, আবার রোগীর আচরণ ও স্বভাবেও বদল আসে। এর চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে। তেমন কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার কথা এখনও জানা যায়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন