Diabetes Risk of Men

অফিসের কাজের চাপে কি ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়ছে? ৩০-৪০ বছর বয়সি পুরুষেরা বিপদে

সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, কর্পোরেট সেক্টরে কর্মরত ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি পুরুষেরাই বেশি ঝুঁকিতে। ডায়াবিটিস শুধু নয়, বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের ঝুঁকিও।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১২:৪১
Desk job, stress raise greater risk of Diabetes for corporate Men at their age 30s, New study says

ডেস্কে বসে কাজে বিপদ বাড়ছে, অত্যধিক মানসিক চাপ বাড়াচ্ছে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি। ছবি: ফ্রিপিক।

অফিসের চেয়ারে এক বার বসার পরে আর উঠতে মন চায় না। চেয়ারখানিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে কাজের টার্গেট পূরণ হয় ঠিকই, কিন্তু শরীরের পেশিগুলি অচল ও অকেজো হতে শুরু করে। সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষের তাড়না কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, তা জানা গেল ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে। ডেস্কে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ, সময়ের মধ্যে রোজের ’টার্গেট’ পূরণ করার মানসিক চাপ এতটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, তার থেকে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি উত্তরোত্তর বাড়ছে। সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, কর্পোরেট সেক্টরে কর্মরত ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি পুরুষেরাই বেশি ঝুঁকিতে। ডায়াবিটিস শুধু নয়, বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের ঝুঁকিও।

Advertisement

রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে তখন পেটের মধ্যে থাকা ফ্যাট ভাঙতে থাকে। সেগুলি ভেঙে ‘ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ তৈরি হয়। সেগুলি যখন রক্তজালিকার মধ্যে যায়, তখন প্রদাহ তৈরি করে। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ার ফলে যে হারে রক্ত সঞ্চালন হত, সেই হারে হয় না। রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হলে ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ‘মাইক্রো অ্যান্ড ম্যাক্রো ভাস্কুলোপ্যাথি’ হয়। এতে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলিতে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। মূলত চারটি অঙ্গ— ব্রেন, হার্ট, কিডনি, লিভারে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে, শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা যায়। ডায়াবিটিস রোগীদের ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে গেলেই মারাত্মক অবস্থা হয়। দীর্ঘ দিন ডায়াবিটিসে ভুগলে হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখের ক্ষেত্রে রেটিনোপ্যাথি কিংবা অন্ধত্বও আসতে পারে।

বিপদ এড়াতে কী করণীয়?

একটানা বসে না থেকে প্রতি ২০-৩০ মিনিট অন্তর উঠে ঘোরাঘুরি করতে হবে। এতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে এবং রক্তে শর্করা জমতে পারবে না।

ফোন এলে ডেস্ক ছেড়ে উঠে হেঁটে হেঁটে কথা বলুন। লিফ্‌ট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ভাঙার চেষ্টা করুন।

দুপুরের খাবার খেয়ে খানিক ক্ষণ হেঁটে আসুন। খাওয়ার পরেই আবার বসে পড়ে কাজ করতে শুরু করবেন না।

ডায়াবিটিস থেকে বাঁচতে দিনের এক ঘণ্টা সময় নিজের জন্য রাখতে হবে। ওষুধের থেকেও বেশি কার্যকরী হাঁটা। ডায়াবিটিস আক্রান্তদের প্রতি দিন নিয়মিত হাঁটতে হবে। ডায়াবিটিস না থাকলেও এই অভ্যাস বজায় রাখতে হবে।

হাঁটাহাঁটির সময় না হলে যোগাসন বা স্ট্রেচিং করতে হবে। চেয়ারে বসেও স্ট্রেচিং করা যায়। চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। কাঁধ সোজা রেখে দুই হাত পিঠের দিকে নিয়ে যান। এ বার পিঠের দিকে এক হাত দিয়ে অন্য হাত ধরুন। পিঠ টানটান রেখে দুই হাত যতটা সম্ভব পিছনের দিকে টানুন। বুক প্রশস্ত হবে, ওই অবস্থানে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকুন। গভীর ভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। ৩০ সেকেন্ড পরে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন।

পরিমিত খাবার খেতে হবে। একসঙ্গে বেশি খাবার খেলে অগ্ন্যাশয়ের উপর চাপ পরে। সেই জন্য অল্প অল্প করে দিনে ছ’বার খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। খাবারে শাক-সব্জির পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রতি দিন ১৪০০ থেকে ১৬০০ ক্যালোরির খাবার খেতে হবে। সঙ্গে থাকবে নিয়মিত শরীরচর্চা।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। তার জন্য মেডিটেশন জরুরি। রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমও জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন