Camphor Side Effect

ঘরে সুগন্ধের জন্য কর্পূর জ্বালান? তাতে কি আদৌ লাভ হয়, না কি ক্ষতি হতে পারে?

কর্পূরকে মন শান্ত করা, মানসিক চাপ মুক্ত করা এবং মনসংযোগে সাহায্য করার উপায় হিসাবে দেখা হত। তবে বিজ্ঞান বলছে, ঘরে কর্পূর জ্বালালে পরিবেশ উন্নত হওয়ার যে দাবি, তা প্রমাণসাপেক্ষ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১২

ছবি : সংগৃহীত।

পুজোর আরতির সময় মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে কখনও মনে হয়েছে, মন শান্ত হল! যদি তা হয়ে থাকে, তবে তার সঙ্গে সরাসরি দৈবশক্তির কোনও সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। বরং ধুনোর ধোঁয়া, তেলের প্রদীপ আর কর্পূরের গন্ধ মিলিয়ে ‌মিশিয়ে যে পরিবেশ তৈরি হয়, ওই প্রশান্তি আসে তার থেকেই। আর এই গোটা বিষয়টায় একটা বড় ভূমিকা নেয় কর্পূরের গন্ধ। অন্তত তেমনই দাবি যাপন প্রশিক্ষক রাধিকা গুপ্তের।

Advertisement

অধিকাংশ ভারতীয় পরিবারেই বাড়িতে কর্পূর খুঁজলে পাওয়া যাবে। কেউ পুজোর জন্য ব্যবহার করেন। কেউ ব্যবহার করেন রান্নায়। মাইসুরুর বাসিন্দা যাপন প্রশিক্ষক রাধিকা জানিয়েছেন, কর্পূর স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। এমনকি, দৈনন্দিন জীবনের উদ্বেগ-আশঙ্কা কমিয়ে মন -মেজাজ ভাল রাখতেও সাহায্য করে। যা পরোক্ষে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু সত্যিই কি কর্পূর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে?

কর্পূরের কতটা উপকারী?

ভারতের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে কর্পূরকে মন শান্ত করা, মানসিক চাপ মুক্ত করা এবং মনসংযোগে সাহায্য করার উপায় হিসাবে দেখা হত। পুজোর আরতিতেও কর্পূর জ্বালানো হয় সেই যুক্তিতেই। তবে বিজ্ঞান বলছে, ঘরে কর্পূর জ্বালালে পরিবেশ উন্নত হওয়ার যে দাবি, তা কেবল দাবিই, তার বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ নেই তেমন। সুরতের এক চিকিৎসক পবন মাণ্ডব্য় বলছেন, ‘‘ঘরে কর্পূর জ্বালালে তা সত্যিই স্নায়ুতন্ত্র শান্ত করতে বা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে কি না, তা পরীক্ষাসাপেক্ষ। তবে এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে যদি ভাল কর্পূর ব্যবহার না করেন এবং যদি বদ্ধ ঘরে কর্পূর জ্বালান, তবে তা থেকে নিউরোলজিক্যল টক্সিসিটির সমস্যা হতে পারে।’’

কী ভাবে ব্যবহার করা উচিত?

১। খাঁটি কি না দেখে নিন: কর্পূর ব্যবহার করলে খাঁটি ভীমসেনী কর্পূর ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন রাধিকা। তিনি বলছেন, ‘‘বাজারে অনেক ধরনের কর্পূর পাওয়া যায়। যার অধিকাংশ কৃত্রিম পদার্থ এবং রাসায়নিক দিয়ে তৈরি করা। কিন্তু আসল কর্পূর তৈরি হয় কর্পূর গাছের কাঠকে পুড়িয়ে তার বাষ্পকে ঘনীভূত করে।’’ রাসায়নিক এবং কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি কর্পূরের ধোঁয়া থেকে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

২। পরিমাণ বুঝে ব্যবহার: কর্পূরের অধিক ব্যবহারের প্রভাবও পড়তে পারে শরীরে। বিশেষ করে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষায় দেখা দিয়েছে, কর্পূর থেকে শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, ফুসফুসে সংক্রমণও হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) প্রাকৃতিক ভাবে সংগৃহীত কর্পূরের ব্যবহারেও রাশ টানতে বলেছে।

৩। বাতাস চলাচল করে এমন জায়গা: কর্পূর জ্বাললে অবশ্যই ঘরে যাতে যথাযথ বাতাস চলাচল করে তা নিশ্চিত করা দরকার, এমন পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন