Brain Fog

সাময়িক স্মৃতিলোপ, গুলিয়ে যায় চিন্তা, 'ব্রেন ফগ'-এর সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসও নাকি জড়িত, দাবি গবেষণায়

দেশের ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, রোজের পাতে খুব বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যেমন ভাত, রুটি, আলু খেলে এবং কম পরিমাণে প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম, পনির ইত্যাদি খেলে ব্রেন ফগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৫ ১৭:৩৮
Experiencing Brain Fog after meal could indicate severe health disease, new study says

খাবার খাওয়ার সঙ্গে ব্রেন ফগের কী সম্পর্ক? ছবি: ফ্রিপিক।

বয়স হলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে অল্প বয়সেই যদি সব ভুলতে শুরু করেন, সে ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া জরুরি। মাথা ঝিমঝিম করা, চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যাওয়া, কিছু ক্ষণ আগে ঘটা ঘটনা ভুলে যাওয়া অথবা স্মৃতিশক্তি কমতে থাকা ‘ব্রেন ফগ’-এর লক্ষণ। মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা কেন হয়, তার কারণ খুঁজতে উঠেপড়ে লেগেছেন গবেষকেরা। সম্প্রতি খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে এর একটা যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। পাত পেড়ে ভূরিভোজের পরেই মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি বেশি হয়। এর সঙ্গে নাকি ব্রেন ফগের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

Advertisement

দেশের ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, রোজের পাতে খুব বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, যেমন ভাত, রুটি, আলু রাখলে এবং কম পরিমাণে প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম, পনির ইত্যাদি খেলে ব্রেন ফগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। কখন খাচ্ছেন ও কতটা, তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। বেশি রাতে খাবার খাওয়া, অথবা দু’টি মিলের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান থাকলে এমন সমস্যা বেশি হয়। পরিমিত আহার যাঁরা করেন না, একবারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন, তাঁরাও ভোগেন মস্তিষ্কের ধোঁয়াশায়।

খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ব্রেন ফগের কী সম্পর্ক?

‘ব্রেন ফগ’ কথাটি আদতে কোনও বৈজ্ঞানিক অভিধা নয়। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা নিজেদের শারীরিক অবস্থা ব্যাখ্যা করার জন্য এই শব্দটি বলে থাকেন। আচমকা ভাবনাচিন্তা শ্লথ হয়ে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, স্মৃতিলোপের মতো নানা ধরনের সমস্যা এর উপসর্গ। এত দিন জানা ছিল, হরমোনের গোলমাল হলে অথবা কম ঘুমোলে, মানসিক চাপ বাড়লে ব্রেন ফগ হতে পারে। কিন্তু এখন সিডিসি জানাচ্ছে, এই কারণগুলি তো রয়েছেই, তার সঙ্গে খাবার খাওয়ার বিষয়টিও জড়িত।

কী ভাবে?

বাইরের খাবার বেশি খেলে, খুব বেশি ভাজাভুজি খেলে সেই খাবার রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ লাগামছাড়া হয়ে যাবে। এমন যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে, তা হলে রক্তে জমা অতিরিক্ত শর্করা সরাসরি আঘাত হানবে মস্তিষ্কের কোষে। মস্তিষ্কের রক্তজালিকাগুলি ছিঁড়েখুঁড়ে যেতে থাকবে, ফলে সমস্যা দেখা দেবে স্নায়ুতন্ত্রেও। যখন তখন মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি, ভাবনাচিন্তা গুলিয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া’। এতে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও স্মৃতিলোপ পেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এর কারণে মনের উপর চাপ আরও বাড়বে। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়বে।

ব্রেন ফগ থেকে বাঁচতে হলে পরিমিত আহার করতে হবে। রোজের পাতে অন্তত ৩০-৩৫ গ্রাম প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতেই হবে।

খাবার খাওয়ার পরে ১৫-২০ মিনিট হাঁটা খুবই জরুরি।

নরম পানীয়, ডায়েট সোডা ও অ্যালকোহলের পরিমাণ কমাতে হবে। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় পানীয় খেলে ইনসুলিনের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে।

খেতে হবে ধীরে ধীরে এবং চিবিয়ে। তাড়াহুড়ো করে গিলে খেলেই মুশকিল।

প্রতি দিন পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে এবং তরল খাবার ডায়েটে রাখতেই হবে। শরীরে জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনও কিন্তু ব্রেন ফগ হওয়ার অন্যতম বড় কারণ।

Advertisement
আরও পড়ুন