Fatima Sana Shaikh suffering from Epilepsy

মাঝ-আকাশে প্রবল খিঁচুনি ফতিমার, মৃগী নিয়ে কি বিমানযাত্রা করা নিরাপদ? কী ভাবে বশে রাখা যায় এই রোগ?

মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণেই এই রোগ দেখা যায়। নিয়মিত চিকিৎসা এবং কিছু সতর্কতা মেনে চললে মৃগী রোগেরও নিরাময় সম্ভব।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ১১:৪৬
Fatima Sana Shaikh on having multiple seizures during a flight, is flying safe for such patients having Epilepsy

মৃগী নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় কী কী? ছবি: সংগৃহীত।

সম্প্রতি বিমানযাত্রার সময়ে ঘোরতর বিপদে পড়েন বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। হঠাৎই সারা শরীরে কাঁপুনি শুরু হয় তাঁর, তড়িঘড়ি বিমানে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। মৃগী রোগে আক্রান্ত ফাতিমা। এর আগেও সিনেমার শ্যুটিং চলার সময়ে মৃগীতে আক্রান্ত হন তিনি। এই রোগ থাকলে যথেষ্টই সতর্ক ভাবে চলতে হয়। জীবনধারায় পরিবর্তন আনাও জরুরি। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। এখন কথা হল, মৃগী থাকলে কি বিমানযাত্রা নিরাপদ? কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এই রোগকে, তা জেনে রাখা জরুরি।

Advertisement

কেন হয় মৃগী?

মৃগী হল স্নায়ুঘটিত রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জিনগত কারণে এই সমস্যা দেখা যায়। তবে মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত থেকেও মৃগী হতে দেখা গিয়েছে অনেকের। সদ্যোজাত থেকে শুরু করে বয়স্কদেরও এই রোগ হতে পারে। তবে কারণটা ভিন্ন। মস্তিষ্কের স্নায়ু কিংবা গঠনগত কোনও সমস্যা থাকলেও কিন্তু এই রোগ হানা দিতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কে অসংখ্য সূক্ষ্ম স্নায়ুর ‘সার্কিট’ থাকে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। সেই স্নায়ুর সার্কিটে অতিরিক্ত ‘স্পার্কিং’-এর কারণেই মৃগী রোগ দেখা দেয়।

মৃগী দু’ধরনের হতে পারে। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি। চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক জানাচ্ছেন, প্রাইমারি এপিলেপ্সিতে মস্তিষ্কের গঠনগত ত্রুটি থাকে না। অন্য দিকে, মাথায় চোট পাওয়ার কারণে, মাথায় টিউমার থাকলে বা হঠাৎ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে হতে পারে সেকেন্ডারি এপিলেপ্সি।

কী ভাবে সতর্ক থাকতে হবে?

প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে বলা যায়, রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। খিঁচুনি হতে পারে। রোগীর শরীরে যত ক্ষণ খিঁচুনি হবে, তাঁকে স্পর্শ না করাই ভাল। খেয়াল রাখতে হবে, রোগী যাতে আঘাত না পান। সম্ভব হলে তাঁকে মাটিতে শুইয়ে দিন, মাথার নীচে বালিশ জাতীয় নরম কিছু দিন। খিঁচুনির সময়ে রোগীর হাত-পা সঞ্চালনে বাধা দেবেন না। এতেও তিনি চোট পেতে পারেন। এমনকি, হাড়ে চিড়ও ধরতে পারে।

মৃগী রোগ নিয়ে বিমানযাত্রা করা যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। রোগটির লক্ষণ যাতে দেখা না দেয়, সে জন্য নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ কমাতে হবে। সেই সঙ্গে আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন—

১) অতিরিক্ত মদ্যপান, বেশি রাত জাগা, যে-কোনও ধরনের নেশার বস্তু থেকে দূরে থাকতে হবে।

২) মৃগী রোগ নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক শর্ত হল, নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া। যাঁদের স্নায়ুর সমস্যার কারণে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, তাঁদেরও এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও ভাবেই ওষুধ খেতে ভুলে গেলে চলবে না।

৩) ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হলে এই ধরনের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই রোজ নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোনোর অভ্যাস করা জরুরি। রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে। কাজের মাঝে ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নিতে পারলেও ভাল হয়।

৪) রোগীর সমস্যাটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেটা বোঝার জন্য এমআরআই এবং ইইজি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ডায়াগনসিস প্রক্রিয়া শেষ হলে রোগের মাত্রা বুঝে রোগীকে ওষুধ দেওয়া হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরেও রোগ নিয়ন্ত্রণে না এলে, তখন অস্ত্রোপচার করানোর প্রয়োজন হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন