Bhaifota 2025

মিষ্টি-মুগ্ধতায় আবিষ্ট বাঙালি, সেখানে ‘নো সুগার’ ভাইফোঁটা উদ্‌যাপন কি সম্ভব?

বাঙালির ভাইফোঁটা মানেই একথালা সাজানো মিষ্টি। সেখানে মিষ্টির বিকল্প যদি খোঁজা খুব একটা সহজ কাজ নয়। যদি চিনি-বিরোধী স্বাস্থ্য সচেতন ভাইয়ের মন রাখতে হয়, আবার রীতি থেকে বেরোতেও না চান, তা হলে কী করবেন?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১১:২৯
For a no-sugar Bhai Phota, consider gifting or making sweets with natural ingredients

মিষ্টি খেতে অনীহা এখনকার অনেক ভাইয়েরই, বিকল্প উপায় কী? ছবি : সংগৃহীত।

বাঙালি মানেই মিষ্টি। পৃথিবীর আর কোনও খাবারের জগতে এত রকম বর্ণ-স্বাদের ছটা নেই। কত রকম মাপকাঠিতে যে বাঙালির মিষ্টিজগৎকে ভাগ করা যায়— রসের বিচারে, সরস এবং নীরস। পাক প্রণালীতে, ভাজা, পোড়া এবং ভাপা। মিষ্টির এত প্রকারভেদ উৎসব-পার্বণগুলিতে আরও স্পষ্ট করে বোঝা যায়। যে কোনও উৎসব মিষ্টি ছাড়া ভাবাই যায় না। ভাইফোঁটার মতো মিষ্টি-প্রধান উৎসব মিষ্টি-ব্যতীত নীরসই। অথচ এই মিষ্টি খাওয়া নিয়েই যত গোল বেধেছে। বিশ্ব জুড়ে চলছে ‘নো-সুগার ক্যাম্পেন’। চিনি মানেই তা বিষ। চিনি পুষ্টিহীন ক্যালোরি। খেলে ওজন বাড়ে। ডায়াবিটিস থাকলে বাড়ে তার প্রকোপ। এ ছাড়াও মাত্রা মেপে না খেলে হার্ট ও লিভার জখম হয়, আরও কত শত রোগ বাসা বাঁধে। অতএব চিনি বা মিষ্টিতে ‘নো এন্ট্রি’-র বোর্ড খোদাই করে দেওয়া হচ্ছে সচেতন ভাবেই। উৎসব-পার্বণে মিষ্টির বিকল্প উপায় খুঁজে নেওয়া হচ্ছে। বাঙালির ভাইফোঁটা মানেই একথালা সাজানো মিষ্টি। সেখানে মিষ্টির বিকল্প যদি খোঁজা খুব একটা সহজ কাজ নয়। যদি চিনি-বিরোধী স্বাস্থ্য সচেতন ভাইয়ের মন রাখতে হয়, আবার রীতি থেকে বেরোতেও না চান, তা হলে কী করবেন?

Advertisement

মিষ্টি খেতে ভালবাসেন না, এমন লোক কমই আছেন। উৎসবের মরসুমে রসগোল্লা থেকে পায়েস, জিলিপি থেকে পান্তুয়া— বাদ পড়ে না কিছুই। ইদানীং কালে মিষ্টির প্রতি লোভ কিছুটা হলেও কমেছে। অনেকেই সচেতন ভাবে চিনি ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ ওজন কমানোর ইচ্ছায়, কেউ আবার ডায়াবিটিসের ভয়ে চিনি খাওয়া ছাড়ছেন। পুষ্টিবিদেরা ফলাও করে বলছেন, এক মাস চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেখুন, তাতেই ফিরবে স্বাস্থ্য। শরীরের মরচে পড়া সব কলকব্জা আবারও জেগে উঠে ঝড়ের গতিতে কাজ করা শুরু করবে। অতএব চিনি হঠাও, সে জায়গায় নিয়ে এসো কৃত্রিম চিনি। এখানেও সমস্যা আছে। সর্ষের মধ্যেই ভূত খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে যার জনপ্রিয়তা বেড়েছিল এত দিন, সেই কৃত্রিম চিনিও নাকি নিরাপদ নয়, এমনই জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। কৃত্রিম চিনি খেলে ওজন তো কমেই না, উল্টে এতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান শরীরের ক্ষতি করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও এই চিনির খুব একটা ভূমিকা যে নেই, তারও প্রমাণ মিলেছে। তা হলে কি মিষ্টি ছাড়াই ভাইফোঁটার মতো উৎসব উদ্‌যাপন হবে?

একেবারেই তা নয়। মিষ্টিপ্রেমীদের মন রাখতে এখন এমন ভাবে মিষ্টি তৈরি করা হচ্ছে, যাতে চিনির লেশমাত্র নেই। এমনকি ছানার কড়া পাক বা নরম পাকের প্রয়োজনও নেই। তবে তা ঠিক মিষ্টির দোকানগুলিতে বিক্রি হওয়া চিনি-বিহীন মিষ্টির মতো বিস্বাদ নয়। স্বাস্থ্যকর মিষ্টি তৈরি হচ্ছে একেবারে অন্য রকম ভাবে। তাতে স্বাদের ঘাটতিও হচ্ছে না, আবার মিষ্টি হচ্ছে মিষ্টির মতোই। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে আখের রস, খেজুর গুড়, কিশমিশ, নারকেল কোরা, নানা রকম ড্রাই ফ্রুটস ইত্যাদি। তেমনই কিছু স্বাস্থ্যকর মিষ্টি সহজ প্রণালীতে বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায়। যেমন—

খেজুর-বাদামের রোল: ভাল মানের খেজুর থেকে বীজ বার করে তা মিক্সিতে বেটে নিন। মিশিয়ে নিন সামান্য নুন। এ বার এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে কুচোনো বাদাম। সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে রোলের আকার দিন। উপর থেকে ছড়িয়ে দিতে পারেন নারকেলের গুঁড়ো। দেখতে ভাল, স্বাদেও। চিনির অভাব বোধ হবে না।

মিষ্টির স্বাস্থ্যকর বিকল্প কী কী হতে পারে?

মিষ্টির স্বাস্থ্যকর বিকল্প কী কী হতে পারে? ছবি: এআই।

আপেলের সুজি: জবজবে ঘি বা সাদা তেলে ভাজা খাস্তা খাজার বদলে বাটিতে করে আপেলের সুজি দিলে মন্দ হবে না। আপেল কুরিয়ে নিয়ে তাতে দুধ মিশিয়ে সামান্য দারচিনি-এলাচের গুঁড়ো দিয়ে পাক দিন। মিষ্টির জন্য মেশান গুড়। উপরে ছড়িয়ে দিন বাদাম-পেস্তা। স্বাস্থ্য সচেতন জিমে গিয়ে কসরত করা ভাই চেটেপুটেই খাবেন।

খেজুরের লাড্ডু: বীজ ফেলে দিয়ে খেজুর মিক্সিতে ঘুরিয়ে নিন। তবে জল যত কম দেওয়া যায়, ততই ভাল। এ বার কড়াইয়ে অল্প ঘি দিয়ে তাতে কুচিয়ে রাখা কাজু, কাঠবাদাম, আখরোট নাড়াচাড়া করে নিন। যোগ করুন সামান্য নুন। বেটে নেওয়া খেজুর দিয়ে দিন। সমস্ত উপকরণ ভাল করে নাড়াচাড়া করে ঘন হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিন। একটু ঠান্ডা হলেই লাড্ডুর মতো করে গড়ে নিন।

খেজুর খেয়ে ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে আপেলের লাড্ডুও মন্দ হবে না। আপেল খোসা ছাড়িয়ে মিক্সিতে পিষে নিতে হবে। সামান্য গুড় দিয়ে কম আঁচে পাক দিতে হবে। আপেলের মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে তাতে ছাতু মিশিয়ে ঢিমে আঁচেই নাড়তে থাকুন। ক্রমাগত নাড়তে হবে যাতে মিশ্রণ দলা পাকিয়ে না যায়। চাইলে এতে ড্রাই ফ্রুটস গুঁড়ো করে দিতে পারেন। এ বার ছোট এলাচের গুঁড়ো মিশিয়ে ভাল করে নেড়ে লাড্ডুর মতো করে গড়ে নিন।

ক্ষীরও কিন্তু বানানো যায় স্বাস্থ্যকর ভাবে। ওট্‌স আর গুড় মিশিয়ে তাতে কাঠবাদামের দুধ দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন ক্ষীর। ঘন দুধের ক্ষীরের মতো কড়া মিষ্টির স্বাদ না থাকলেও, এটি খেতে মন্দ হবে না।

বাটি ভরা রসমালাইয়ের বিকল্প হতে পারে দই। টকদইয়ের সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে তাতে তাজা ফলের টুকরো মিশিয়ে দিন। দেখতেও লাগবে খাসা, খেতেও।

ভাইকে কেক খাওয়াতে মন চাইলে ডার্ক চকোলেট দিয়ে বানিয়ে দিন ব্রাউনি। তবে ব্রাউনিতে চিনির বদলে ব্যবহার করতে হবে খেজুরের রস। তা হলে স্বাদ

Advertisement
আরও পড়ুন