Digital Eye Strain

‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’-এ ভুগছেন কমবয়সিরা, শুধু চোখের ক্ষতি নয়, আরও কী কী লক্ষণ দেখা দিচ্ছে?

কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোমে শুধু চোখ নয়, মাথায়-ঘাড়ে যন্ত্রণা, স্পন্ডিলাইটিস, মাথা যন্ত্রণা, মাইগ্রেন থেকে ডবল ভিশনের লক্ষণও দেখা দিচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৪৪
How to prevent and manage Computer Vision Syndrome

‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ মারাত্মক হয়ে উঠছে, কী কী লক্ষণ দেখা দিচ্ছে? ছবি: ফ্রিপিক।

বাড়িতেই হোক বা অফিসে, বেশির ভাগ কাজই এখন অনলাইন নির্ভর। কাজেই দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পর্দায় চোখ রাখতে হচ্ছে। এই সব যন্ত্র থেকে যে নীল রশ্মি বার হয়, তা চোখের জন্য ভীষণই ক্ষতিকর। একটানা কম্পিউটারে চোখ রাখার ফলে চোখে চাপ পড়ছে এবং তা থেকে কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোমের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগে মনে করা হত, এতে বুঝি শুধু চোখেরই ক্ষতি নয়। কিন্তু চক্ষু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোমে শুধু চোখ নয়, মাথা-ঘাড়ে যন্ত্রণা, স্পন্ডিলাইটিস, মাথা যন্ত্রণা, মাইগ্রেন থেকে ডবল ভিশনের লক্ষণও দেখা দিচ্ছে।

Advertisement

‘আমেরিকান অপ্টোমেট্রিক অ্যাসোসিয়েশন’-এর গবেষণা বলছে, একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকলে চোখের পলক পড়ে না। চোখের জল শুকিয়ে যায়। তার জন্যই এত সব সমস্যা। বিশেষ করে ছোটদের। একটানা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ কাছের জিনিস দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তখন দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধে হয়। তাতে মায়োপিয়া হয়। অর্থাৎ, দূরের দৃশ্য দেখতে, লেখা পড়তে সমস্যা হয়। একে বলে 'স্টুডেন্ট মায়োপিয়া'।

এ ছাড়া, অনেক ক্ষণ ধরে কাজ করলে মণিকে ক্রমাগত স্ক্রিনের চারপাশে ঘোরাতে হয় বলে পেশিতে চাপ পড়ে। ক্লান্ত হয় চোখ। যত বেশি সময় ধরে কাজ চলে, তত বাড়ে বিপদ। যাঁদের চোখে খুব বেশি মাইনাস পাওয়ার আছে, তাঁদের বেশি সমস্যা। চশমা না পরে কাজ করলেও সমস্যা বেশি হয়। আমরা যখন মোবাইল বা কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকি, তখন পরিপূর্ণ পলক পড়ে না। পলক পড়ার সময়ে চোখ কিছুটা খোলা থেকে যায়। তাতেই বাড়ে শুষ্ক চোখের সমস্যা।

কম্পিউটার ছাড়া চলবে না, তা হলে চোখ বাঁচাবেন কী ভাবে?

নিয়মিত কম্পিউটারে কাজ করলে ছয় মাস অন্তর চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করানো জরুরি। ছোটদেরও করাতেই হবে। কম্পিউটার এমন ভাবে রাখবেন, যাতে চোখে খুব বেশি চাপ না পড়ে।

কম্পিউটারের স্ক্রিন সব সময় আই লেভেলের নীচে রাখার চেষ্টা করতে হবে। যাতে চোখকে উপরের দিকে দীর্ঘ ক্ষণ রাখতে না হয়। তা ছাড়া ঘাড়ের জন্যও এটা খুব দরকার। শুধু তা-ই নয়, শুয়ে বা ঘাড় কাত করে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকলেও চোখে চাপ পড়বে। তা থেকে সমস্যা হতে পারে।

চোখে জ্বালা হলে বা চোখ লাল হয়ে গেলে জলের ঝাপটা দিলে ভাল হয়। কিন্তু যদি এমনটা প্রায়ই হয়, তবে একটা চোখ চাপা দিয়ে দেখতে হবে, অন্য চোখ দিয়ে দেখতে অসুবিধা হচ্ছে কি না। যদি দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে থাকে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

টানা ২০ মিনিট কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার পর ২০ ফিট দূরে থাকা কোনও জিনিসের দিকে অন্তত ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। এই পন্থা মেনে চললে চোখের উপর বাড়তি চাপ পড়বে না।

মোবাইল বা ল্যাপটপের পর্দার ঔজ্জ্বল্য থেকেও চোখের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যদি ঘরের বা আশপাশের পরিবেশ অন্ধকার হয়, সে ক্ষেত্রে চোখের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই চোখের সুবিধামতো ব্রাইটনেস বা কনট্রাস্ট বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেওয়া জরুরি।

প্রতি ৩-৪ সেকেন্ড পর পর চোখের পাতা ফেলা, চোখের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। বিশেষ করে এক ভাবে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাঝেমাঝে চোখের এই ব্যায়ামটি করে নেওয়া ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন