Norovirus Infections

শীতের সময় ঘন ঘন জ্বর, বমি-পেটের গোলমাল হলে সাবধান, এক ধরনের ভাইরাসের হানায় ভুগছে ছোটরাও

আবহাওয়া বদলের সময়ে নানা ধরনের ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে। ঠান্ডা পড়লে সর্দি ও জ্বরের ভাইরাস ছাড়াও আরও এক ধরনের ভাইরাসের উৎপাত বাড়ে, তার নাম নোরোভাইরাস।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৪৩
How to prevent Norovirus infection in winter time

জ্বর, পেট ব্যথা, ডায়েরিয়া না সারলে সাবধান। ফাইল চিত্র।

মরসুম বদলের সময়ে পেটের অসুখ, ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। দেশের নানা রাজ্যে সমীক্ষা চালিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছে, ভাইরাল জ্বর, ডায়েরিয়ার প্রকোপ ঘরে ঘরে। শীতের এই সময়টাতে সংক্রমণের হার আরও বেশি। বাইরের খাবার না খেয়েও পেটের অসুখ হচ্ছে, খাদ্যনালির সংক্রমণেও ভুগছেন অনেকে। খাবার থেকে বিষক্রিয়াও ঘটছে। এর কারণ কী?

Advertisement

আবহাওয়া বদলের সময়ে নানা ধরনের ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে। ঠান্ডা পড়লে সর্দি ও জ্বরের ভাইরাস ছাড়াও আরও এক ধরনের ভাইরাসের উৎপাত বাড়ে, তার নাম নোরোভাইরাস। আইসিমআর জানিয়েছে, নোরোভাইরাসের কিছু প্রজাতির মিউটেশন (রাসায়নিক বদল) হয়েছে, ফলে ভাইরাস আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে। শরীরে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ হলে মূলত গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিন্যাল সমস্যায় ভুগতে হয়। অর্থাৎ এর প্রভাবে অন্ত্রে প্রদাহ হয়। ঘন ঘন বমি ও ডায়েরিয়ার সমস্যা শুরু হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেক সময়ে দেখা যায়, ভাইরাসের সংক্রমণে পেটে বিষক্রিয়া হয়েছে। এই ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়েও পড়তে পারে। খাবার ও জল থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

সংক্রমণ ঠেকাতে কী করণীয়?

আক্রান্তের হাঁচি-কাশি বা বর্জ্য থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। কাজেই বাড়িতে কেউ সংক্রমিত হলে তাঁকে আলাদা রাখাই শ্রেয়।

আক্রান্তের সঙ্গে একই থালায় খাওয়া বা তাঁর খাওয়া খাবার খেলে সংক্রমণ দ্রুত ঘটতে পারে।

শীতের সময়ে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে, বিশেষ করে নভেম্বর থেকে এপ্রিল অবধি এই ভাইরাসের প্রকোপ থাকে। এই সময়ে তাই বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কিনে আনা সব্জি, ফল বা কাঁচা মাছ-মাংস ভাল করে ধুয়ে তবে রান্না করতে হবে। শাকপাতা নুন দেওয়া গরম জলে ধুয়ে রান্না করা উচিত।

রাস্তায় বিক্রি হওয়া নরম পানীয়, লেবুর শরবত, রঙিন শরবত, লস্যি থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই ছোটদের এই ধরনের পানীয় কিনে দেবেন না।

খাবার খাওয়ার আগে ভাল করে হাত ধুতে হবে। ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। ঘরের ভিতরের বাতাস যাতে বিশুদ্ধ থাকে, সে খেয়াল রাখতে হবে।

নোরোভাইরাসকে অনেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন, আসলে তা নয়। খাদ্যনালিতে অনেক ভাল ব্যাক্টেরিয়াও থাকে, যারা খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু বাইরে থেকে কোনও সংক্রামক ভাইরাস সেখানে ঢুকে পড়লে তীব্র প্রদাহ শুরু হয়। খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। পেটখারাপ, বমি এবং তা থেকেই জ্বর চলে আসে।

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ঘটবে। তাই শিশু ও বয়স্কদের সাবধানে রাখতে হবে। যাঁদের হার্টের রোগ, লিভার বা কিডনির রোগ, ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত। জ্বর ও পেটের সমস্যা ঘন ঘন হতে থাকলে, নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন