Neonatal Jaundice

নিয়োনেটাল জন্ডিসে শ্রবণশক্তি, কথা বলার ক্ষমতা হারান সইফ-পুত্র ইব্রাহিম, কতটা ভয়ের এই রোগ?

শ্রবণশক্তির সমস্যা ছিল ইব্রাহিম আলি খানের। কথা বলতে সমস্যা হত। পরবর্তী কালে ইংল্যান্ডে বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হয় তাঁকে। সেখানে স্পিচ থেরাপি করানো হয় তাঁর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ০৯:০২
Ibrahim Ali Khan shares his journey from childhood struggles with speech impediments due to jaundice

নিয়োনেটাল জন্ডিস কী, কেন কথা বলতে পারতেন না ইব্রাহিম? ফাইল চিত্র।

জন্মেই জন্ডিস ধরা পড়ে। এতটাই মারাত্মক হয়ে গিয়েছিল এই রোগ যে, শৈশবে শুনতে সমস্যা হত ইব্রাহিম আলি খানের। কথা বলার সময়ে জড়িয়ে যেত জিভ। সইফ-পুত্র দাবি করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে শোনা, কথা বলার সমস্যায় ভুগতে হয় তাঁকে। পরে ইংল্যান্ডে ‘স্পিচ থেরাপি’ করানো হয় তাঁর।

Advertisement

নিয়োনেটাল জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইব্রাহিম, এমনটাই বলেছেন তিনি। এই জন্ডিস নবজাতকদের হয়। রোগ গোড়ায় বোঝা গেলে চিকিৎসায় সেরে ওঠে শিশু। তবে যদি জন্ডিস চিনতে দেরি হয়, তা হলে শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে পরবর্তী সময়ে। তার মধ্যে শুনতে না পাওয়া, কথা বলতে গেলে জিভ আড়ষ্ট হয়ে যাওয়ার লক্ষণও দেখা দেয়।

নিয়োনেটাল জন্ডিস সত্যিই উদ্বেগের ব্যাপার, এমনটাই মত শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের। তিনি জানান, গর্ভে থাকাকালীন মায়ের ধমনী থেকে রক্ত পায় সন্তান। তাই শিশুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে। তবে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বেশি থাকে অনেক শিশুরই। জন্মানোর পরে যখন স্বাভাবিক ভাবে ফুসফুস দিয়ে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলতে থাকে, তখন শিশুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অন্য দিকে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা কিন্তু একই থেকে যায়। অতিরিক্ত রক্তকণা তখন ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন তৈরি করে। শিশুর অপরিণত যকৃৎ অতিরিক্ত বিলিরুবিন বার করে দিতে পারে না। ফলে বিলিরুবিনের আধিক্য হয়ে ‘হাইপারবিলিরুবিনেমিয়া’ দেখা দেয়। তখন শ্রবণশক্তি কমতে থাকে। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে ভোকাল কর্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জন্মের সময়ে কোনও সংক্রমণের জন্যও সদ্যোজাতের জন্ডিস হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রুবেলা, সাইটোমেগালো ভাইরাস, কনজেনিটাল সিফিলিসের কারণে জন্ডিস হয়। আবার অনেক সময়ে জন্মগত ভাবে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তখন রোগ তাড়াতাড়ি ধরা না পড়লে শিশুর নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।

কতটা ভয়ের নিয়োনেটাল জন্ডিস?

নিয়োনেটাল জন্ডিসে সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হল ‘ব্লাড-ব্রেন ব্যারিয়ার’। যদি জন্ডিস কোনও ভাবে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়, তা হলে শ্রবণশক্তি সর্বাগ্রে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে। শরীরের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। নিয়োনেটাল জন্ডিস নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকেরা ফোটোথেরাপির সাহায্য নেন। রোগের প্রকৃতি অনুযায়ী মোটামুটি ৭২ ঘণ্টার পর শিশু সেরে উঠতে শুরু করে। রোগ গোড়ায় ধরা না পড়লে বা পরে গিয়ে বাড়াবাড়ি হলে তখন চিকিৎসকের পরামর্শমতো থেরাপি করাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে বাড়ি গিয়ে সংক্রমণজনিত কারণে শিশুর জন্ডিস হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যদি রোগনির্ণয় এবং চিকিৎসা দেরিতে হয়, তা হলে স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই সেরিব্রাল পলসি দেখা দেয়, যা শিশুর বুদ্ধির বিকাশ ও বেড়ে ওঠায় বাধা তৈরি করে। তাই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময়ে এক বার বিলিরুবিন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। রোগের লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন