Avocado Vs. Amla

পুষ্টিগুণে অ্যাভোকাডোকেও টেক্কা দেবে! কেতাদুরস্ত, দামি ফলের বিকল্প রয়েছে হাতের নাগালেই

সমাজমাধ্যমে তারকা থেকে নেটপ্রভাবীদের মুখে অ্যাভোকাডোর প্রশংসা শুনে অনেকেই খাদ্যতালিকায় তা যোগ করেছেন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ছাড়াও অ্যাভোক্যাডোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টি উপাদান। কিন্তু এই ফলের দাম যে আকাশছোঁয়া!

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:১১
অ্যাভোকাডোর বদলে কী খেতে পারেন?

অ্যাভোকাডোর বদলে কী খেতে পারেন? ছবি: সংগৃহীত।

চিরপরিচিত খাবার ভুলে বাইরের দুনিয়া হাতড়ে চলেছেন ভারতীয়েরা। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের খাদ্যতালিকায় ডাল, ভাত, শাকপাতা, আম, জাম, কাঁঠাল, মাছ, মাংস, পনিরের বদলে জায়গা নিচ্ছে, অ্যাভোকাডো, কিনোয়া, টোফু, ওট্‌স, ড্রাগন ফ্রুট, স্ট্রবেরি, কেল ইত্যাদি। তার মধ্যে ডায়েটে অ্যাভোকাডো ফলটি রাখার ধুম পড়েছে চারদিকে। টোস্টে অ্যাভোকাডো মাখিয়ে হোক, অথবা স্যালাডে মিশিয়ে, মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার এই ফল খাওয়া হচ্ছে। আর সমাজমাধ্যমে তারকা থেকে নেটপ্রভাবীদের মুখে অ্যাভোকাডোর প্রশংসা শুনে অনেকেই খাদ্যতালিকায় তা যোগ করেছেন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ছাড়াও অ্যাভোক্যাডোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টি উপাদান। কিন্তু এই ফলের দাম যে আকাশছোঁয়া! যাঁরা দামের কারণে অ্যাভোকাডো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাঁরা অন্য একটি ফলের খোঁজ করতে পারেন।

Advertisement

এখানেই প্রশ্ন ওঠে, যদি অ্যাভোকাডোর সমতুল্য পুষ্টিগুণ দেশীয় কোনও ফলে পাওয়া যায়, তা হলেও কি অতিরিক্ত খরচ করার প্রয়োজন রয়েছে? কেতাদুরস্ত ফলের বদলে যদি সাবেক জৌলুসহীন ফল সামনে হাজির করা হয়, তার পরেও কি চোখের উপর থেকে পর্দা সরবে না? উত্তর এখন সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু জীবন এবং যাপনের অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ এখন সাবেকে ফিরে যাচ্ছেন, হয়তো তেমনটিও আবার ঘটবে। করিনা কপূর, আলিয়া ভট্টের পুষ্টিবিদ ঋজুতা দিবেকর বহু দিন ধরে বহু সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, ভিন্‌দেশের খাবারের বদলে স্থানীয় খাবার বেশি স্বাস্থ্যকর। ঘরেই কাছেই রয়েছে সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র। ঋজুতার মতে, খাবার যত কাছে ফলবে, তত ভাল।

আমলকির গুণে স্বাস্থ্য, ত্বকের উন্নতি।

আমলকির গুণে স্বাস্থ্য, ত্বকের উন্নতি। ছবি: সংগৃহীত।

অ্যাভোকাডোর সমতূল্য হিসেবে আমলকিকেই তাই বেছে নেওয়া যেতে পারে। আকস্মিক ভাবে যথাযথ না মনে হলেও একটু বিবেচনা করে দেখলেই বোঝা যাবে। দুই ফলের পুষ্টিগুণ তুলনা করা যাক—

প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যাভোকাডোতে থাকে প্রায় ১৬০ ক্যালোরি ও ১৫ গ্রাম ফ্যাট, যা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বি হিসেবে পরিচিত। এতে থাকে প্রায় ৬.৭ থেকে ১০ গ্রাম ফাইবার এবং ৪৪২–৫২০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। ভিটামিন সি-র পরিমাণ ১০-২২ মিলিগ্রাম, আয়রন সেখানে ০.৫৫ মিলিগ্রাম। এই উপাদানগুলো হৃদ্‌যন্ত্র ও হজমের জন্য উপকারী হলেও, ফলটি ভারী প্রকৃতির হওয়ায় সবার জন্য স্বাস্থ্যকর না-ও হতে পারে।

অন্য দিকে, প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকিতে মাত্র ৪৪-৪৮ ক্যালোরি ও ০.৬ গ্রাম ফ্যাট থাকে। কিন্তু এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি (৬০০ থেকে ৭০০ মিলিগ্রাম), যা অ্যাভোকাডোর তুলনায় অনেক বেশি। পাশাপাশি, আমলকিতে রয়েছে ২০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ২৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। অ্যাভোকাডোর মতো সমপরিমাণে আয়রন এবং খানিক কম ফাইবার রয়েছে আমলকিতে।

অর্থাৎ, যেখানে অ্যাভোকাডো মূলত ভাল ফ্যাট ও শক্তির উৎস, সেখানে আমলকিও প্রকৃতির পুষ্টিকর ফল। যা একই সঙ্গে ত্বক, চোখ, হজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার যত্ন নেয়। ভারতীয়দের দেহে, বিশেষ করে বাঙালিদের শরীরে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জোগানের ঘাটতি থাকে না। মাছ, মাংস খেয়ে বড় হন তাঁরা। কিন্তু আমলকির ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের এই উচ্চমাত্রা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখের স্নায়ু মজবুত রাখে এবং ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে। ক্যালসিয়াম ও আয়রন হাড় ও রক্তের গঠনেও সহায়তা করে।

Advertisement
আরও পড়ুন