খনিজই ঘুমের ওষুধ! বিশেষ খনিজের অভাব পূরণে কী কী খেতে পারেন? ছবি: ফ্রিপিক।
সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি, এ কথা জানেন প্রায় সকলেই। ঘুম যে কতটা জরুরি, তা টের পাওয়া যায়— দিনকয়েক ঘুম না হলেই। কিন্তু ঘুম এলে তো! এমন মানুষ আছেন, যাঁরা বালিশে মাথা দিতে না দিতেই ঘুমিয়ে পড়েন। আর একদল রয়েছেন, যাঁদের বহু চেষ্টাতেও ঘুম আসে না।
ঘুম কম হওয়ার নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে, তবে বিশেষ একটি খনিজের অভাবও কিন্তু সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। সেটি হল ম্যাগনেশিয়াম। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এর তথ্য বলছে, স্নায়ু এবং পেশিতন্ত্রের সক্রিয়তার নেপখ্যে খনিজটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে মেজাজ বশে রাখা— ম্যাগনেশিয়ামের কার্যকারিতা অনেক। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ম্যাগনেশিয়ামের সাপ্লিমেন্ট ঘুম আনতে সাহায্য করে।
কী ভাবে ঘুম আনতে সাহায্য করে ম্যাগনেশিয়াম?
ম্যাগেনিশয়াম শরীরে গামা-অ্যামাইনোবিউটিরিক অ্যাসিড (জিএবিএ)-এর উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত থাকতে সাহায্য করে। তার ফলে ঘুম আসে। এই খনিজটি অ্যামাইনো অ্যাসিডকে সেরোটোনিনে পরিণত করে। সেরোটোনিন থেকে তৈরি হয় মেলাটোনিন। যা ঘুম-জাগরণের চক্রের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত। মেলোটোনিন শরীরকে ইঙ্গিত দেয়, কখন ঘুমোতে হবে বা কখন জাগতে হবে। শরীরের যে স্বাভাবিক ঘড়ি থাকে, সেই ছন্দ মেনে ঘুমের সঙ্কেত বয়ে নিয়ে আসে মেলাটোনিন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ম্যাগনেশিয়ামেরও ধরন রয়েছে। তারই মধ্যে কোনওটি ঘুম আনতে সাহায্য করে। সেই কারণে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়।
তবে সাপ্লিমেন্ট নয়, দৈনন্দিন খাবার থেকেই এই খনিজটি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করতে পারে শরীর। ম্যাগনেশিয়াম যে শুধু ঘুম আনতেই সহায়ক তা নয়, বরং অবসাদ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কোন খাবারে ম্যাগনেশিয়ামের চাহিদাপূরণ সম্ভব?
কুমড়োর বীজ: কুমড়োর বীজ হালকা নেড়েচেড়ে বাদামের সঙ্গে মিশিয়ে বা বাদামের মতোই খাওয়া যায়। উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম মেলে কুমড়োর বীজে। ১০০ গ্রাম বীজে ৫৩৫ গ্রাম ম্যাগনিশয়াম মেলে। একমুঠো কুমড়ো বীজ খেলেই ১৫০-১৭০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ম্যাগনেশিয়াম মিলতে পারে। ফলে দৈনিক অল্প কিছুটা বীজ খেলেও খনিজের চাহিদাপূরণ সম্ভব।
কাঠবাদাম: কুমড়ো বীজের পাশাপাশি তালিকায় রাখতে পারেন কাঠবাদামও। ১০০ গ্রাম কাঠবাদামে ২৭০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ম্যাগনেশিয়াম মেলে। দৈনিক ৫-৬টি কাঠবাদাম খেলেও শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজ মিলবে।
ডার্ক চকোলেট: ৭৫-৮০ শতাংশ ডার্ক চকোলেটেও যথেষ্ট পরিমাণ ম্যাগনেশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ ২৩০ মিলিগ্রাম।
সেদ্ধ পালং: ১০০ গ্রাম সেদ্ধ বা রান্না করা পালংশাকে ৯০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম মেলে। তালিকায় রাখতে পারেন সেটিকেও।
কলা: কলাতেও বেশ কিছুটা ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। ১০০ গ্রামে খনিজটি মাত্রা ২৭ মিলিগ্রাম।