কী কী করলে হাঁচি থেমে যাবে? ছবি: ফ্রিপিক।
ঠান্ডার দিনে হাঁচি-কাশির সমস্যা বাড়ে। শীতের শুরুতে তাপমাত্রার পারদ যত নামবে, ততই ঠান্ডা লাগার সমস্যা বাড়বে। যাঁদের অ্যালার্জির ধাত রয়েছে, তাঁদের আবার বারো মাসই সমস্যা। ঠান্ডা পড়া হোক বা বাইরের ধুলোধোঁয়া, সামান্য কারণেই হাঁচি শুরু হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, দূষণবাহী কণা, ফুলের রেণু, পোষ্যের লোম হোক বা জামাকাপড়ে থেকে ডাস্ট মাইট, যে কোনও রকম ‘অ্যালার্জেন’ নাকে গেলেই হাঁচির পর হাঁচি হতে থাকবে। হাঁচি শুরু হলেই যদি অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নেন, তা হলে হাঁচি সেই মুহূর্তে কমবে ঠিকই, কিন্তু পাকাপাকি ভাবে সমস্যার সমাধান হবে না। তাই গোড়া থেকে এই সমস্যা নির্মূল করতে হবে। তার কিছু উপায় আছে।
হাঁচি কেন হচ্ছে, সে কারণ আগে জানা দরকার। যদি দেখেন ধুলো-ধোঁয়া লাগলেই হাঁচি হয়, তা হলে বুঝতে হবে ‘ডাস্ট অ্যালার্জি’ আছে। অপরিচ্ছন্ন জায়গা, নির্মাণস্থল, ধুলো-বালি আছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলুন। কারণ, শ্বাসনালিতে ধুলো ঢুকলেই প্রদাহ শুরু হবে, তখন হাঁচির পর হাঁচি হতে থাকবে।
হাঁচি থামানোর উপায় কী?
১) হাঁচি থামানোর ক্ষেত্রে খুবই কাজে লাগে মধু। প্রচণ্ড হাঁচির মধ্যেও এক চামচ মধু খেয়ে নিলে উপকার হতে পারে।
২) হাঁচি থামানোর আরও একটি কার্যকরী উপায় হল গরম জলের বাষ্প নেওয়া। বড় পাত্রে ফুটন্ত জল নিয়ে তার উপরে তোয়ালে ঢাকা দিয়ে বাষ্প নিলে খুবই উপকার হতে পারে।
৩) প্রতি দিন সকালে নিয়ম করে উষ্ণ গরম জলে পাতি লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলেও উপকার হতে পারে। লেবুর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
৪) ইউক্যালিপ্টাস তেলের গন্ধও এ ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। নাকে গেলে হাঁচি থেমে যেতে পারে। হাঁচি হওয়ার প্রবণতা থাকলে রুমালে ২-৩ ফোঁটা ইউক্যালিপ্টাস তেল দিয়ে দিন। তা কিছু ক্ষণ নাকের সামনে ধরে রাখুন। হাঁচি থেমে যাবে।
৫) আদা, দারচিনি, লবঙ্গ ও গোটা গোলমরিচ দিয়ে তৈরি চা পান করলেও সুফল পাওয়া যেতে পারে। হাঁচি বা কাশির সমস্যা খুব ভোগালে এই টোটকা কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।
৬) ৫০০ মিলিলিটারের মতো জল নিয়ে তা ফোটান। এ বার তাতে আদাকুচি, তুলসি পাতা এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। জল ফুটে অর্ধেক হয়ে গেলে নামিয়ে ছেঁকে নিন। ঠান্ডা হলে মধু মিশিয়ে পান করুন। সর্দি-কাশি, টনসিলের ব্যথার উপশম হবে এই কাড়া খেলে।
৭) জল নেতি করলেও আরাম পেতে পারেন। ফিল্টার করা বা ফোটানো জলে অল্প নুন মিশিয়ে স্যালাইন ওয়াশ তৈরি করে নিতে হবে। জল নেতির নিয়ম হল এই উষ্ণ লবণাক্ত জল এক নাসারন্ধ্র দিয়ে টেনে অন্য নাসারন্ধ্র দিয়ে বার করতে হবে। নেতি পট দোকানেই কিনতে পাওয়া যায়। তার মধ্যে স্যালাইন ওয়াশ ভরে, নেতি পটের সরু দিকটা দিয়ে এক দিকের নাকের ছিদ্রে প্রবেশ করিয়ে আস্তে আস্তে ঢালুন। সেই সময়ে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। জল এক নাসারন্ধ্র দিয়ে ঢুকে অন্য নাসারন্ধ্র দিয়ে বেরিয়ে আসবে। জল নাক দিয়ে বেরিয়ে আসার পর, মুখ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন এবং তার পর অন্য নাসারন্ধ্রের জন্য একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করুন।